কর্দমাক্ত: এই ঘাট পেরিয়ে যেতে হবে পুজো দিতে। শুক্রবার, বালি ঘাটে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
থকথকে কাদা, তারই মধ্যে মাথা তুলে রয়েছে টুকরো ইট। আপাতত সেখানেই মাটি সমান করে ওই ঘাট চলাচলের যোগ্য করতে মুখ বুজে চেষ্টা করে চলেছেন কয়েক জন শ্রমিক। শুক্রবার উত্তর ব্যারাকপুর মণিরামপুরের বালি ঘাটের ছবিটা ছিল ঠিক এমনই।
অথচ আজ, শনিবার ছটপুজো। প্রতি বছর কয়েক হাজার মানুষ এই পুজোয় গঙ্গার ঘাটে জড়ো হন। অভিযোগ, পুজোর ন্যূনতম পরিকাঠামো নেই সেখানে। উত্তর ব্যারাকপুরে মোট চারটি ঘাট। মণিরামপুর ঘাট, চার পয়সার ঘাট, বালি ঘাট এবং বটতলা ঘাট। যার মধ্যে দু’টিরই এমন অবস্থা। বাকি দু’টিতে অবশ্য সিঁড়ি রয়েছে।
বটতলা ঘাটে গিয়ে দেখা গেল, সেখানকার অবস্থাও খুবই খারাপ। সিঁড়ি নেই। ফলে নদীতে নামতে ঠোক্কর খেতে হয়। ভাটায় নদী সরে যাওয়ায় সিঁড়িহীন ঘাটে সমস্যা বাড়বে। সম্প্রতি ব্যারাকপুর পুরসভা আলোর ব্যবস্থা করেছে, একটি ঘাটে বায়ো টয়লেটও বসিয়েছে। কিন্তু বালি ঘাট এবং বটতলা ঘাটে মহিলাদের পোশাক বদলানোর কোনও পরিকাঠামোই নেই। ফলে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, অন্য ব্যবস্থা থাক না থাক, ঘাটে পাকা সিঁড়ি অন্তত তৈরি হোক এবং মেয়েদের জন্য পোশাক বদলানোর ব্যবস্থাও থাকুক।
যে দু’টি ঘাটে সিঁড়ি-সহ ন্যূনতম পরিকাঠামো রয়েছে, সেই ঘাটগুলিতে ভিড় হয় বেশি। কারণ, ওই এলাকার বাসিন্দা, আত্মীয়দের বাড়িতে বাইরে থেকে বেড়াতে আসা মানুষও পুজো দিতে ভিড় করেন। ফলে ভিড় এড়াতে বালি ঘাট এবং বটতলা ঘাটেও অনেকেই পুজো সারেন।
প্রতি বারের মতো আজ বিকেল এবং আগামিকাল ভোরে অসংখ্য মানুষ জড়ো হবেন। তাঁদের বড় অংশই মহিলা। অথচ পোশাক বদলানোর কোনও ব্যবস্থা না থাকায় ফের ক্ষোভের মুখে পড়তে পারে পুরসভা। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতি বছর ছটের আগে থাকতেই ঘাটের ন্যূনতম পরিকাঠামো তৈরির দাবি জানিয়ে বারবার আবেদন করেন তাঁরা।
স্থানীয় সত্যম পাসোয়ানের ক্ষোভ, ‘‘এই দুই ঘাটে কয়েক হাজার মানুষ পুজো করেন। সিঁড়ি দূর, ন্যূনতম পরিকাঠামোই নেই! ছটপুজোর ঠিক আগে কিছু আলোর ব্যবস্থা করা হয়, এটুকুই যা। অথচ কত বয়স্ক মানুষ আসেন পুজো দিতে। একটা সিঁড়ি থাকবে না!’’
উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভা সূত্রের খবর, সিঁড়ি তৈরির পরিকল্পনা তাঁদের দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে। টাকা না মেলায় কাজও হয়ে ওঠেনি। তাই আপাতত বালির বস্তা ফেলে পুণ্যার্থীদের ঘাটে নামার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ অভিজিৎ মজুমদার (জঞ্জাল অপসারণ) বলেন, ‘‘ঘাট তৈরির জন্য ‘নমামি গঙ্গা’ প্রকল্পে টাকা চেয়েছিলাম। এখনও টাকা পাইনি। পুরসভার ভাঁড়ারে ঘাট তৈরি করে দেওয়ার টাকাও নেই। পুরসভা সাধ্যমতো পরিকাঠামো করে দিয়েছে। ঘাটগুলিতে আলো এবং বায়ো টয়লেটের ব্যবস্থা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy