Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

দুর্ঘটনায় মৃতের দেহ নিয়ে বাড়িতে, গ্রেফতার যুবক

ইঞ্জিন ভ্যান উল্টে পড়েছিল সাইকেল আরোহীর ঘাড়ে। জখম যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তাঁকে টোটোতে তোলেন ভ্যান চালক। মাঝপথে দেখেন, ছেলেটির কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ভয়ে আর হাসপাতালের পথ না মাড়িয়ে দেহ নিয়ে সটান হাজির হন বাড়িতে।

দুই-যুবক: ধৃত রাশেদ ও মৃত পাপ্পু

দুই-যুবক: ধৃত রাশেদ ও মৃত পাপ্পু

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:০০
Share: Save:

ইঞ্জিন ভ্যান উল্টে পড়েছিল সাইকেল আরোহীর ঘাড়ে। জখম যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তাঁকে টোটোতে তোলেন ভ্যান চালক। মাঝপথে দেখেন, ছেলেটির কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ভয়ে আর হাসপাতালের পথ না মাড়িয়ে দেহ নিয়ে সটান হাজির হন বাড়িতে। ওই দৃশ্য দেখে বাড়ির লোকজন থতমত খেয়ে যান। শেষমেশ পুলিশে খবর দেন ভ্যানচালকের বাবা। অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে রাশেদ গাজি নামে ওই ভ্যানচালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। জনি দাস ওরফে পাপ্পু (২২) নামে মৃত যুবকের দেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তে।

পাপ্পুর বাড়ি বসিরহাটের মির্জাপুরে। রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করতেন তিনি। বাবা নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পরে মা কল্পনার সঙ্গে থাকতেন ওই যুবক। শনিবার বিকেলে কাজ সেরে বাড়ি ফিরে মায়ের কাছে মাংস খেতে চান পাপ্পু। মা বলেন মাংস কিনে আনতে। সাইকেল নিয়ে দোকানে যাচ্ছিলেন পাপ্পু। বিকেল ৫টা নাগাদ টাকি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে একটি ম্যাটাডর গাড়িকে কাটিয়ে যেতে গিয়ে তাঁর গায়ের উপর উল্টে পড়ে ইঞ্জিন ভ্যান। জখম হন পাপ্পু। ভ্যান চালক রাশেদ আশেপাশের লোকজনকে বলেন, তিনি ছেলেটিকে নিয়ে হাসপাতালে যাবেন। এই বলে উঠে পড়েন একটি টোটোতে। রাশেদের বাড়ি বাদুড়িয়ার লবঙ্গ গ্রামে। পাপ্পুর দেহ নিয়ে সেখানেই হাজির হন রাশেদ। ছেলের মুখে সব শুনে হতবাক তাঁর বাবা ইউনুস গাজি। ছেলে আরও বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে, সেটা বুঝে ইউনুস ছেলেকে পরামর্শ দেন, তখনই যেতে হবে থানায়। বাপ-ব্যাটায় টোটোতে উঠে পাপ্পুকে নিয়ে চলে আসেন বসিরহাট থানায়।

পুলিশের পক্ষে পাপ্পুকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। গ্রেফতার করা হয় রাশেদকে।

আদালতের পথে রাশেদ বলে, ‘‘দুর্ঘটনার পরে ছেলেটাকে নিয়ে হাসপাতালেই যাচ্ছিলাম। টোটো ভাড়া করি। পথে ছেলেটা কথা বলছিল। কিন্তু এক সময়ে নেতিয়ে পড়ে। মনে হয়েছিল মারা গিয়েছে। কী করব বুঝে উঠতে না পেরে হাসপাতালের বদলে বাড়িতে চলে যাই।’’ পাপ্পুর পড়শি শান্তনু মণ্ডল বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার পরে পাপ্পুকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হল, তা নিয়ে আমরা যখন খোঁজাখুঁজি করছি, পুলিশকে জানানো হয়েছে, তখনই জানতে পারি ঘটনার কথা। ততক্ষণে কয়েক ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। বাড়িতে না নিয়ে গিয়ে সময় মতো ওকে হাসপাতালে আনা হলে হয় তো প্রাণটা বেঁচে যেত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arrest Dead Body Accident Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE