Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

তিন নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করল প্রশাসন

ফেসবুকে পরিচয়। সেই সূত্রেই মন্দিরে গিয়ে এক নাবালিকাকে বিয়ে করে বিএ প্রথম বর্ষের পড়ুয়া এক যুবক। বিষয়টি জানাজানি হতে বাড়ির লোক সামাজিক অনুষ্ঠান করে তাদের বিয়ে ঠিক করেন। শুক্রবার ছিল সেই অনুষ্ঠান। খবর পেয়ে পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকেরা সেখানে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করলেন। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঘুটিয়ারিশরিফের নবপল্লি গ্রামে। শুধু ওই ঘটনাই নয়, বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার আরও দু’টি জায়গায় দুই নাবালিকার বিয়ে বন্ধ হল প্রশাসনের হস্তক্ষেপে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৪৫
Share: Save:

ফেসবুকে পরিচয়। সেই সূত্রেই মন্দিরে গিয়ে এক নাবালিকাকে বিয়ে করে বিএ প্রথম বর্ষের পড়ুয়া এক যুবক। বিষয়টি জানাজানি হতে বাড়ির লোক সামাজিক অনুষ্ঠান করে তাদের বিয়ে ঠিক করেন। শুক্রবার ছিল সেই অনুষ্ঠান। খবর পেয়ে পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকেরা সেখানে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করলেন। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঘুটিয়ারিশরিফের নবপল্লি গ্রামে। শুধু ওই ঘটনাই নয়, বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার আরও দু’টি জায়গায় দুই নাবালিকার বিয়ে বন্ধ হল প্রশাসনের হস্তক্ষেপে।

ঘুটিয়ারিশরিফের নবপল্লি গ্রামে বর-কনে ছাদনাতলায় বসে পড়েছিল। মালাবদলও শুরু হয়। খবর পেয়ে ঠিক সেই সময়েই ঘটনাস্থলে পৌছন ঘুটিয়ারিশরিফ থানার ওসি রাজু স্বণর্র্কার এবং বিডিও বুদ্ধদেব দাস। পুলিশ-প্রশাসনের দুই আধিকারিকের কথা শুনে বিয়ে বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন দুই পরিবারের লোকজন। বিডিও-র কাছে পাত্র এবং পাত্রীর বাবা মুচলেকা দেন। বরকনে দু’জনেই পড়াশোনা করবে বলেও মুচলেকা দেয়।

কুলতলির ৪ নম্বর ভুবনখালি গ্রামের একটি বাড়িতে শুক্রবার এক নাবালিকার বিয়ের তোড়জোড় চলছিল। স্থানীয় এক বাসিন্দার কাছে খবর পেয়েই বিকেলে পুলিশ নিয়ে সেখানে যান জয়নগর ২ বিডিও কমলেশ মণ্ডল। তাঁর হস্তক্ষেপে বন্ধ হয় বিয়ে। নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দেওয়া আইনত অপরাধ বলে তার অভিভাবকদের বোঝান কমলেশবাবু। প্রশাসনের কথা শুনে মেয়ের পরিজনেরা বিয়ে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। মেয়েটি অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। তার পড়াশোনার খরচ বাবদ ১০ হাজার টাকাও দেন বিডিও। তিনি বলেন, “বিয়েতে মেয়েটির সম্মতি ছিল না। ও পড়াশোনা করতে চায়। প্রশাসন ওর পাশে থাকবে।”

সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার জগন্নাথপুর পঞ্চায়েতের মহেশপুরে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া এক কিশোরীর বিয়ে ঠিক করে বাড়ির লোকজন। চোদ্দো বছরের মেয়েটির সঙ্গে আমটোনা গ্রামের ২১ বছরের এক যুবকের বিয়ে ছিল বৃহস্পতিবার। গ্রাম থেকে এই খবর পান বাদুড়িয়া চাইল্ড লাইনের অফিসাররো। তাঁরা বিডিও এবং বাদুড়িয়া থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে পৌছে যান। ততক্ষণে বরযাত্রী পেঁৗঁছে গিয়েছে। নিমন্ত্রিতদের খাওয়াদাওয়ার পর্ব শুরু হয়ে গিয়েছে। বিয়ের পিঁড়িতে বসবে বলে প্রস্তুত হচ্ছে বর-কনে। ঠিক সেই সময়েই পুলিশ দেখে হুলুস্থূল পড়ে যায় বিয়েবাড়িতে। নিমেষে দৃশ্য বদলে যায়। প্রশাসনের আধিকারিকরা বর-কনে দুই বাড়ির লোকজনের সঙ্গেই কথা বলেন। প্রথমে অবশ্য বিয়ে বন্ধ করতে রাজি হননি তাঁরা। নাবালিকার বিয়ে দেওয়া হলে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা। এর পরেই পাত্র ও পাত্রী পক্ষ উভয়েই বিয়ে বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন। মেয়ের বাবা মুচলেকা দিয়ে জানান, আঠারো বছর পর্যন্ত পড়াশোনা করবে মেয়ে। আর হবু বর মুচলেকা দিয়ে জানান, ওই কিশোরী সাবালিকা না হওয়া পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করবেন। চাইল্ড লাইনের কর্মী আমিরুল ইসলাম, মনিকা সরকার বলেন, “গত কয়েক মাসে জগন্নাথপুর পঞ্চায়েতের ছ’টি গ্রামে ছয় কিশোরীর বিয়ে বন্ধ করা হল। পঞ্চায়েত একটু সচেতন হলে এমন অনেক মেয়ের বন্ধ করা সম্ভব হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

southbengal marriage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE