Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

পাকা দেখার দিনই মিলল যুবকের ক্ষতবিক্ষত দেহ

বিয়ের ‘পাকা দেখা’ ছিল সকালে। কনেপক্ষ এই এসে পড়ল বলে। কিন্তু তার কিছু ক্ষণ আগে খবর এল, পাত্রের ক্ষতবিক্ষত দেহ পড়ে আছে বাড়ির কাছেই। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে বাদুড়িয়ার আটুরিয়া-কদমতলায়। নিহতের নাম সাফিনুর গাজি (২৬)।

এখানেই মেলেসাফিনুরের ক্ষতবিক্ষত দেহ। ইনসেটে, নিহত যুবক। —নিজস্ব চিত্র।

এখানেই মেলেসাফিনুরের ক্ষতবিক্ষত দেহ। ইনসেটে, নিহত যুবক। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাদুড়িয়া শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:১১
Share: Save:

বিয়ের ‘পাকা দেখা’ ছিল সকালে। কনেপক্ষ এই এসে পড়ল বলে। কিন্তু তার কিছু ক্ষণ আগে খবর এল, পাত্রের ক্ষতবিক্ষত দেহ পড়ে আছে বাড়ির কাছেই।

বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে বাদুড়িয়ার আটুরিয়া-কদমতলায়। নিহতের নাম সাফিনুর গাজি (২৬)। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর দু’য়েক আগে বিয়ে হয়েছিল সাফিনুরের। কিন্তু বিবাহ বিচ্ছেদও হয়ে যায় কিছু দিনের মধ্যে। পরে ফের বিয়ের কথাবার্তা চলছিল হাসনাবাদের ভবাণীপুরের এক তরুণীর সঙ্গে। বুধবার ওই পরিবার থেকে পাকা কথা বলতে আসার কথা ছিল।

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ সাফিনুরের মোবাইলে একটি ফোন আসে। তাঁর মা সুফিয়া বিবি বলেন, “ও বলল, ভাত বাড়তে। একটু পরেই ফিরে এসে খাবে। সেই ভাত বাড়াই রয়ে গেল। আর এল না।”

ছেলে রাতে না ফেরায় অবশ্য ততটা দুশ্চিন্তায় ছিলেন না বাড়ির লোকজন। কারণ সাফিনুরদের বাড়ির কাছেই তাঁদের চালের গোডাউন। সেখানেই অনেক সময়ে কাজের প্রয়োজনে থেকে যেতেন ওই যুবক। মঙ্গলবার রাতে বাড়ি না ফেরায় সকলে ধরে নিয়েছিলেন, সেখানেই থেকে গিয়েছেন সাফিনুর।

কিন্তু বুধবার সকাল হয়ে যাওয়ার পরেও বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে গোডাউনে যাওয়ার রাস্তার ধারে বেগুন খেতের মধ্যে সাফিনুরের গলার নলি কাটা রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন তাঁর ভাই ইসমাইল গাজি। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠিয়েছে। কিন্তু কেন খুন হলেন ওই যুবক, তা নিয়ে এখনও ধন্ধে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বাদুড়িয়ার এই এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরেই দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য চলে। মদ-জুয়ার আসর বসে। বাইরের দুষ্কৃতীরা ভিড় জমায়। আগেও একাধিক খুনোখুনির ঘটনা ঘটেছে। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তোলা আদায় করে দুষ্কৃতীরা। শাসন থেকে কুখ্যাত এক দুষ্কৃতী এসে এই এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ। খুনের ঘটনায় তোলাবাজির কোনও সম্পর্ক আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটের সপ্তাহ খানেক আগে খুন হয়েছিলেন সাফিনুরের জ্যাঠতুতো ভাই, ওই এলাকারই বাসিন্দা হাসানুর গাজি। গ্রামবাসীদের দাবিতে মাস দেড়েক আগে সেই তদন্তে ফের নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। দুই পরিবারকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। বুধবারই ওই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা ছিল হাসানুরের বাবা মোজাম গাজিকে। কিন্তু দিন কয়েক হল, তাঁর কোনও খোঁজ নেই। ওই খুনের ঘটনার সঙ্গে সাফিনুর হত্যার কোনও সম্পর্ক আছে কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

baduria murder southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE