এখনও মনোনয়নপত্র জমা শুরু হয়নি। কিন্তু দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন কলেজে ইতিমধ্যেই ছাত্র সংগঠনগুলির মধ্যে অশান্তি বাধছে। এ বার কিছু জায়গায় অস্তিত্ব জানান দেওয়ার লড়াইয়ে নামতে চলেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)।
ইতিমধ্যেই পুরুলিয়ার দুই কলেজে ছাত্র সংসদে ক্ষমতায় এসেছে আরএসএস-এর এই ছাত্র শাখা। ফলে আত্মবিশ্বাসী এবিভিপি এ বার দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে কিছু ক্ষেত্রে রীতিমতো টক্কর দিতে পারে বলে সংগঠনের নেতারা আশাবাদী। কলকাতা বিশ্ববদ্যালয়ের অধীনে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ২৪টি কলেজে মনোনয়ন জমা দেওয়ার এখনও সপ্তাহ দেড়েক বাকি। কিন্তু ইতিমধ্যেই এবিভিপি এবং টিএমসিপি শিবিরে উত্তেজনা দানা বাঁধছে। সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত দক্ষিণ বারাসত, চম্পাহাটি, পাঠানখালি, দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ, জামতলা, শিরাকোল, বিদ্যাধরপুর, ট্যাংরাখালির মতো কলেজগুলিতে এবিভিপি ইউনিট খোলা নিয়ে গোলমাল হয়েছে।
এবিভিপি-র জেলা প্রমুখ বাপি মাইতির কথায়, “এ বছর পরিস্থিতিটা বেশ অন্য রকম। কলেজে-কলেজে ইউনিট খুলতে চেয়ে প্রচুর ফোন আসছে আমাদের কাছে। কিন্তু ইউনিট খুলতে বাধা দিচ্ছে টিএমসিপি। যেখানে ইউনিট খোলা হয়েছে, সেখানে ব্যানার ছিঁড়ে সমর্থকদের মারধর করছে টিএমসিপি নেতা-কর্মীরা।” এবিভিপি-তে যোগ দিচ্ছেন কারা? বাপির বক্তব্য, “২০১১ সালে ছাত্র সংসদগুলি থেকে এসএফআই কার্যত মুছে যায়। ফলে তার পরের বছর যাঁরা প্রথম বর্ষে ভর্তি হন, তাঁরা শুরু থেকেই টিএমসিপি করতেন। এখন তৃতীয় বর্ষে উঠে টিএমসিপি-র অসারতা বুঝে তাঁদের অনেকেই এবিভিপি-তে যোগ দিয়েছেন। আবার এ বছরে ভর্তি হওয়া অনেক প্রথম বর্ষের ছাত্রও সরাসরি আমাদের সংগঠনে আসতে চাইছেন।”
এবিভিপি নেতারা জানিয়েছেন, গত বছর পর্যন্তও এতটা প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়নি। পুরুলিয়ার কলেজে ছাত্র সংসদ দখলে আসার পরে এবিভিপি-র ছাত্রেরা বেশির ভাগ জায়গায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন। সংগঠনের ইউনিট খোলা হয়েছে ফলতা হরিণডাঙা কলেজে। তবে এখনও বীরেশ্বরপুর কলেজ, কাকদ্বীপ কলেজ, বারুইপুর কলেজ এবং ডায়মন্ড হারবারের ফকিরচাঁদ কলেজে ইউনিট খোলা যায়নি। এ পর্যন্ত জেলার ৮টি কলেজে টিএমসিপির সঙ্গে এবিভিপির গোলমাল বেঁধেছে। এর মধ্যে দিয়েই সব কলেজে ইউনিট খোলার চেষ্টা চলছে।
শুধু এবিভিপি নয়। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক অপূর্ব প্রামাণিকও অভিযোগ করেন, নির্বাচনের আগে তাঁদের সমর্থকদের হুমকি দেওয়া শুরু হয়েছে। তবে এখনও কোথাও শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি গোলমালের পরিস্থিতি হয়নি। গত বার সংগঠনের তরফে মাত্র তিনটি কলেজে ভোটে লড়া হয়েছিল। এর মধ্যে পাঠানখালি কলেজে পিএসইউয়ের সঙ্গে যৌথ লড়াইয়ে ছাত্র সংসদ দখল করে এসএফআই। এ বার আরও বেশি কলেজকে লক্ষ্য রেখে এগোচ্ছে তারা। সেপ্টেম্বর থেকে এবিভিপি-র সঙ্গে টিএমসিপি-র গোলমাল যে কলেজগুলিতে হয়েছে, সেই কলেজগুলিতে জমি ফিরে পাওয়াও তাদের অন্যতম লক্ষ্য।
তবে হুমকি দেওয়া, ব্যানার ছেঁড়া বা মারধরের কথা অস্বীকার করে জেলা টিএমসিপি সভাপতি আজিজুল হক মোল্লা বলেন, “এর আগে কিছু জায়গায় এসএফআই এবং ডিএসও-র দাপট ছিল। এখন আর তা নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদে জেলার সব কলেজে আমাদের সংগঠন পরিচালিত ছাত্র সংসদই থাকবে।” এবিভিপিকে মূল প্রতিপক্ষ বলেও মনে করেন না আজিজুল। তাঁর দাবি, “আমরা মনে করি, সমস্ত সংগঠনই আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy