Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সিভিক ভলান্টিয়ারের ঘরে দেহ মিলল তরুণীর

নার্সিং প্রশিক্ষণ নিতে যাওয়ার কথা বলে এক সপ্তাহ আগে বাড়ি ছেড়েছিলেন ক্যানিংয়ের শরত্‌ পল্লির এক তরুণী। রবিবার তাঁর দেহ মিলল বসিরহাটের ইটিন্ডার মাস্টারপাড়ার এক যুবকের বাড়ি থেকে। মৃতের নাম অনিতা হালদার রজক (২২)। তাঁর বাপেরবাড়ির লোকজন শিবু রজক নামে ওই যুবকের বিরুদ্ধে বিক্রির উদ্দেশ্যে অনিতাকে ফুঁসলে নিয়ে আসা এবং পরে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন থানায়।

মৃতা অনিতা হালদার রজক। এবং ধৃত শিবু রজক।

মৃতা অনিতা হালদার রজক। এবং ধৃত শিবু রজক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৫ ০০:২২
Share: Save:

নার্সিং প্রশিক্ষণ নিতে যাওয়ার কথা বলে এক সপ্তাহ আগে বাড়ি ছেড়েছিলেন ক্যানিংয়ের শরত্‌ পল্লির এক তরুণী। রবিবার তাঁর দেহ মিলল বসিরহাটের ইটিন্ডার মাস্টারপাড়ার এক যুবকের বাড়ি থেকে।

মৃতের নাম অনিতা হালদার রজক (২২)। তাঁর বাপেরবাড়ির লোকজন শিবু রজক নামে ওই যুবকের বিরুদ্ধে বিক্রির উদ্দেশ্যে অনিতাকে ফুঁসলে নিয়ে আসা এবং পরে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। পুলিশ শিবুকে গ্রেফতার করেছে। তিনি বসিরহাট থানার অধীনে সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ করতেন। পুলিশের কাছে শিবুর দাবি, তিনি অনিতাকে ভালবেসে গত ডিসেম্বরে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু সাংসারিক অশান্তির জেরে তাঁর স্ত্রী আত্মঘাতী হয়েছেন। যদিও বিয়ের ব্যাপারে তাঁরা কিছু জানতেন না বলে দাবি করেছেন অনিতার বাপেরবাড়ির লোকেরা।

পুলিশ জানায়, দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য বসিরহাট হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট মিললেই মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার হবে। তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, শিবু অনিতাকে বিয়ে করেছেন বলে তাঁর পড়শি এবং আত্মীয়েরা অনেকেই জানেন না। তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার সকালে বসিরহাট থানায় ফোন করে শিবু জানান, তাঁর স্ত্রী গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে, শিবুর ঘরে খাটে শোয়ানো রয়েছেন অনিতা। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিত্‌সক মৃত ঘোষণা করেন। খবর দেওয়া হয় তাঁর বাপেরবাড়ির লোকজনকে।

সোমবার অনিতার বাপেরবাড়ির লোকজন ইটিন্ডায় আসেন। অনিতারা এক ভাই, চার বোন। বোনেদের মধ্যে অনিতা মেজো। স্বনির্ভর হওয়ার জন্য তিনি গড়িয়ার একটি হোস্টেলে থেকে সেখানকারই একটি সেন্টারে নার্সিং প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। দিন সাতেক আগে তিনি বাবার কাছ থেকে হোস্টেলের খরচ নিয়ে ক্যানিং থেকে ফেরেন। কিন্তু বাড়িতে একবারও শিবুর সঙ্গে তাঁর পরিচয় বা বিয়ের কথা জানাননি বলে দাবি তাঁর পরিবারের লোকজনের।

অনিতার দাদা উজ্জ্বলের দাবি, “বোন কেন হঠাত্‌ বসিরহাটের একটি ছেলেকে বিয়ে করতে যাবে? আর কেনই বা সে কথা গোপন করবে? মনে হয় শিবু গুন্ডাদের দিয়ে বোনকে অপহরণ করিয়ে বাংলাদেশে পাচারের চেষ্টা করছিল। বোন কোনও ভাবে জেনে যাওয়ায় শিবু ওকে খুন করে।”

শিবুর দাবি, “দু’বছর আগে এক আত্মীয়ার মাধ্যমে অনিতার সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। গত ডিসেম্বরে গোবরডাঙার একটি মন্দিরে তাঁরা বিয়ে করেন। অনিতা চাননি বলেই বিয়ের কথা দু’জনের কারও পরিবারকেই জানানো হয়নি।” সোমবার সকালে শিবুকে গ্রেফতারের সময়ে তাঁর গায়ে-মুখে কয়েকটি টাটকা ক্ষতচিহ্ন দেখে তদন্তকারীরা প্রশ্ন করায় শিবু তাঁদের কাছে দাবি করেন, বিয়ে করলেও অর্থাভাবে স্ত্রীর সব ইচ্ছা তিনি পূরণ করতে পারতেন না। তার জেরে দু’জনের সামান্য হাতাহাতিও হত। গত শনিবার রাতেও তেল কেনা নিয়ে বচসা থেকে হাতাহাতি হয়। তার ফলেই, তাঁর কয়েক জায়গায় ছড়ে যায়। স্ত্রী রাগ করে পাশের ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ে। সকালে উঠে তিনি স্ত্রীকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে পুলিশে খবর দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE