Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

জোট ছাড়াই লড়াই দাঁইহাটে

গত পুরভোটে জোট করে সিপিএমের কাছ থেকে দাঁইহাট ছিনিয়ে নিয়েছেল কংগ্রেস ও তৃণমূল। এ বার অবশ্য শুরু থেকেই জোটের রাস্তা বন্ধ করে তৃণমূল ও কংগ্রেস পরস্পরের বিরুদ্ধে ভোটের ময়দানে নেমে পড়ছে। রাজ্যে তৃণমূল শাসকদল হলেও লোকসভা ভোটের ফল অনুযায়ী দাঁইহাট পুর এলাকায় সিপিএম অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে কংগ্রেস। ২০১০-এর পুরভোটে দাঁইহাটে ১৪টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস ৫টি, তৃণমূল ৩টি আসনে জিতেছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দাঁইহাট ও কালনা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৫ ০১:০১
Share: Save:

গত পুরভোটে জোট করে সিপিএমের কাছ থেকে দাঁইহাট ছিনিয়ে নিয়েছেল কংগ্রেস ও তৃণমূল। এ বার অবশ্য শুরু থেকেই জোটের রাস্তা বন্ধ করে তৃণমূল ও কংগ্রেস পরস্পরের বিরুদ্ধে ভোটের ময়দানে নেমে পড়ছে।

রাজ্যে তৃণমূল শাসকদল হলেও লোকসভা ভোটের ফল অনুযায়ী দাঁইহাট পুর এলাকায় সিপিএম অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে কংগ্রেস। ২০১০-এর পুরভোটে দাঁইহাটে ১৪টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস ৫টি, তৃণমূল ৩টি আসনে জিতেছিল। আর এক জন নির্দল-সহ মোট ৯ সদস্যকে নিয়ে দাঁইহাটে পুরবোর্ড গঠন করে কংগ্রেস ও তৃণমূল। পাঁচটি আসন জিতে বিরোধী হয় সিপিএম। এর মধ্যে কংগ্রেসের সদস্য সুদীপ্ত রায় ও নির্দল প্রার্থী সমর চক্রবর্তী তৃণমূলে যোগ দেন। সাড়ে চার বছর ধরে জোট থাকার পরে তৃণমূল কংগ্রেসের পুরপ্রধানের উপর থেকে জোট প্রত্যাহার করে নেয়। কোনও দল অনাস্থা না আনায় কংগ্রেসই পুরসভার ক্ষমতায় থেকে যায়।

সোম ও মঙ্গলবার দাঁইহাট পুরসভার প্রায় সব আসনেই মনোনয়ন জমা দিয়েছে সিপিএম। এ বারেও প্রাক্তন সিপিএম পুরপ্রধান বিদ্যুৎ ভক্ত প্রার্থী হয়েছেন। তিনি বলেন, “এ বার নিশ্চিত ভাবেই দাঁইহাটে সিপিএম পুরবোর্ড গঠন করবে। দাঁইহাটের মানুষ জোট-রাজনীতি দেখে বিরক্ত।” যদিও সিপিএমের নেতা থেকে কর্মীরা সকলেই একান্তে স্বীকার করেছেন, গত বার জোট হওয়ার ফলেই তাঁরা পুরবোর্ড ধরে রাখতে পারেননি। কংগ্রেস ছেড়ে এ বার তৃণমূলের টিকিটে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডেই দাঁড়িয়েছেন সুদীপ্ত রায়। তিনি দাবি করেন, “কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করলে মানুষ ভাল ভাবে নিত না। আমরা অন্তত ৯টি আসনে জয়লাভ করে দাঁইহাট পুরসভা গঠন করব।” তৃণমূলের দাঁইহাট শহরের সভাপতি রঞ্জিত সাহারও দাবি, “লোকসভা ভোটেই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, দাঁইহাটে কংগ্রেসের অস্তিত্ব নেই।” তৃণমূলের নেতারা প্রকাশ্যে জোট-বিরোধী কথা বললেও একান্তে জানাচ্ছেন, প্রার্থী-কোন্দলের ফলে দ্বন্দ্ব কোথায় গিয়ে পৌঁছবে কেউ জানে না। কয়েকটি আসনে দুটি করে মনোনয়ন জমা পড়েছে। প্রার্থী তালিকা নিয়ে বিক্ষুব্ধ রঞ্জিতবাবু ও স্বাধীনা নন্দী যথাক্রমে ১ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

সোমবারই ১৪টি আসনে কংগ্রেস প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছে কাটোয়া মহকুমা নির্বাচনী দফতরে। এ বারে কংগ্রেস বেশ কিছু যুবককে দাঁইহাটে প্রার্থী করেছে। এ ছাড়াও বিদায়ী পুরপ্রধান সন্তোষ দাস ১০ নম্বরে ও প্রদেশ কংগ্রেস সদস্য ১২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর দাবি, “আমরা দাঁইহাটের উন্নয়নকে সচল করে রেখেছি।” বিজেপিরও আশা, তাঁরা ভাল ভোট পাবে।

কালনাতেও এ দিন মনোনয়ন জমা দেয় কংগ্রেস। পুরসভার ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৮টিতে মনোনয়ন জমা দেন তাঁরা। তবে শহর কংগ্রেসের নেতা লক্ষ্মণ রায়ের দাবি, “বাকি ওয়ার্ডগুলিতেও প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা চলছে।” যদিও দলের কর্মীরাই বলছেন, গত পুরভোটে কংগ্রেসের টিকিটে জেতা ৫ কাউন্সিলারই তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় কালনায় কংগ্রেসের সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়েছে। এ দিন ৪ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল হিসাবে মনোনয়ন জমা দেন তৃণমূল নেতা গোপাল তিওয়ারি। ওই ওয়ার্ডে তৃণমূলের হয়ে দাঁড়িয়েছেন গত বার কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী আনন্দ দত্ত। দলের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়েই নির্দল হয়ে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান গোপালবাবু।

এ ছাড়া যে দু’টি ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী বদল করেছে তার মধ্যে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন প্রার্থীর নাম ভিক্টোরিয়া সাহা। বুধবার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে। সিপিএমের প্রার্থী তালিকাতেও একটি বদল হয় এ দিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE