দূষণের অভিযোগে স্কুল চত্বরে মিড-ডে মিল রান্নার ব্যাপারে আপত্তি উঠেছে। তাই বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে পড়ুয়াদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। রেল শহর চিত্তরঞ্জনে সর্বশিক্ষা অভিযানের প্রকল্প রূপায়ণে এমনই পদক্ষেপ করেছেন একটি গার্লস হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। রেল কর্তৃপক্ষের আপত্তিতেই মিড-ডে মিল রান্না করা যাচ্ছে না বলে তাঁদের দাবি। যদিও রেলের তরফে জানানো হয়, এমন কোনও আপত্তি বা বাধা তারা দেননি।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৬৫ সালে স্কুলটি তৈরি হয়। রেলের তরফেই স্কুলের ভবন গড়ে দেওয়া হয়। যাঁরা রেল শহরের আশপাশে বাস করেন কিন্তু তাঁদের কারখানায় চাকরি করেন না, মূলত তাঁদের পরিবারের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্যই এখানে স্কুলটি তৈরি করে দেন রেল কর্তৃপক্ষ। সরকারি অনুমোদন নিয়ে দশম শ্রেণি পর্যন্ত চলছে স্কুলটি।
সালানপুর ব্লক প্রশাসন ও স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম বার স্কুল চত্বরে মিড-ডে মিল রান্না শুরু হয়। পড়ুয়াদের চার দিন খাওয়ানো হয়। অভিযোগ, তার পরেই রেল কর্তৃপক্ষ আপত্তি জানান। উনুনের ধোঁয়া থেকে আশপাশে দূষণ ছড়াচ্ছে বলে দাবি করা হয়। তখন থেকে মিড-ডে মিল পাচ্ছিল না পড়ুয়ারা।
প্রধান শিক্ষিকা সুপর্ণা মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, “আমরা রেল কর্তৃপক্ষের কাছে রান্না করতে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েও বিফল হয়েছি।” ও দিকে আবার শিক্ষা দফতরের তরফে বারবার চাপ দেওয়া হচ্ছিল, যে ভাবে হোক সর্বশিক্ষা অভিযানের এই প্রকল্পটি চালু করতেই হবে। অগত্যা সালানপুর ব্লক প্রশাসন ও স্কুল কর্তৃপক্ষ যৌথ উদ্যোগে বাইরে থেকে রান্না করা খাবার এনে পড়ুয়াদের দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সালানপুরের বিডিও প্রশান্ত মাইতির অভিযোগ, “রান্নার কাজে রেলের তরফে বাধা এসেছে বলে স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দিয়ে রান্না করানো খাবার আনা হচ্ছে স্কুলে।” স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, রান্না করলে যা খরচ হত, খাবার কিনতে তার থেকে বেশি খরচ হয়।
এই অভিযোগ অবশ্য একেবারে মানতে চাননি রেল কর্তৃপক্ষ। চিত্তরঞ্জনে রেল কারখানার জনসংযোগ আধিকারিক মন্তার সিংহ সাফ বলেন, “আমি যত দূর জানি, রেলের তরফে রান্না করার ক্ষেত্রে কোনও বাধা দেওয়া হয়নি।” তাঁর বক্তব্য, “অযথা জলঘোলা না করে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তারা রেলের উচ্চ কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতেন।”
প্রধান শিক্ষিকা আরও অভিযোগ করেন, রেল কতৃপক্ষের গড়ে দেওয়া স্কুল ভবন ব্যবহারের ক্ষেত্রেও নানা সমস্যায় পড়তে হয় তাঁদের। বছর দুয়েক আগে অফিসঘরটি সংস্কারের নামে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে রেল। বহু বার আর্জি জানানো হলেও সেটি আর স্কুলকে ফেরত দেওয়া হচ্ছে না। প্রধান শিক্ষিকার দাবি, এর ফলে তাঁদের কাজকর্ম চালাতে অসুবিধা হচ্ছে। বিডিও প্রশান্তবাবু জানান, এই বিষয়টি শিক্ষা দফতরকে বিশদে জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে প্রধান শিক্ষিকাকে।
রেল কারখানার মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক মন্তার সিংহ অবশ্য এই অভিযোগও মানতে চাননি। তাঁর পাল্টা দাবি, ওই স্কুলের জন্য পর্যাপ্ত ঘর রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy