Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

সরকারি অনুষ্ঠানে তৃণমূল নেতারা, বিতর্ক

সরকারি প্রকল্পের অনুষ্ঠানের মঞ্চে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি নিয়ে সরব হল বিরোধীরা। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে শাসকদলের লোকজন মঞ্চে থাকায় তা কার্যত সরকারি উদ্যোগের প্রহসনে পরিণত হয়েছে বলে দাবি বিজেপি এবং সিপিএমের। অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক যদিও এই অভিযোগ মানতে চাননি।

মঞ্চে এই নেতানেত্রীদের উপস্থিতি নিয়েই সরব হয়েছে বিরোধীরা। —নিজস্ব চিত্র।

মঞ্চে এই নেতানেত্রীদের উপস্থিতি নিয়েই সরব হয়েছে বিরোধীরা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৫ ০২:২৮
Share: Save:

সরকারি প্রকল্পের অনুষ্ঠানের মঞ্চে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি নিয়ে সরব হল বিরোধীরা। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে শাসকদলের লোকজন মঞ্চে থাকায় তা কার্যত সরকারি উদ্যোগের প্রহসনে পরিণত হয়েছে বলে দাবি বিজেপি এবং সিপিএমের। অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক যদিও এই অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর দাবি, মঞ্চে যাঁরা ছিলেন তাঁরা প্রাক্তন কাউন্সিলর। তাই এর মধ্যে অন্যায়ের কিছু নেই।

বৃহস্পতিবার আসানসোলের রবীন্দ্র ভবনে একটি সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধনের আয়োজন করেছিল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আসানসোল শাখা। শ্রমমন্ত্রী মলয়বাবু প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন। কিন্তু অনুষ্ঠান শুরুর আগে মন্ত্রী মঞ্চে ওঠার পরেই তৃণমূলের প্রায় এক ডজন নেতা-কর্মীকে মঞ্চে ডেকে মন্ত্রীর পাশের আসনগুলিতে বসিয়ে দেন পর্ষদ কর্তৃপক্ষ। মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদেরও ফুলের তোড়া দেওয়া হয়। এ নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয় উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে।

গত ২৪ জানুয়ারি আসানসোলে একটি পাসপোর্ট মেলার উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে এলাকার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র পাশে কয়েক জন বিজেপি নেতা-কর্মীর উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মন্ত্রী মলয়বাবু। সে দিন ‘সরকারি টাকায় দলীয় অনুষ্ঠান’ করার অভিযোগ তুলে বাবুলের পদত্যাগ দাবি করেছিলেন তিনি। অথচ, বৃহস্পতিবার তাঁর উপস্থিতিতেই রাজ্য সরকারের অনুষ্ঠান মঞ্চে তৃমূলের নেতা-কর্মীদের বসানো নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, “আমি এতে অন্যায়ের কিছু দেখছি না। ওঁরা সকলেই আসানসোল পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর। তাই মঞ্চে ডাকা যেতেই পারে। অনুষ্ঠানস্থলে আমাদের দলের আরও অনেক নেতা-কর্মী ছিলেন। তাঁরা সবাই নীচেই বসে ছিলেন।”

বিজেপি-র আসানসোল জেলা সভাপতি নির্মল কর্মকারের অভিযোগ, “গোটা রাজ্য জুড়েই এখন দলতন্ত্র কায়েম করেছে তৃণমূল। সরকারি আধিকারিকেরাও দলদাসে পরিণত হয়েছেন। তৃণমূল নেতারা নিজেদের ত্রুটি খুঁজে পান না। কিন্তু অনধিকার চর্চা করে উন্নয়ন ব্যাহত করেন।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “সরকারি আধিকারিকদের পিছনের সারিতে পাঠিয়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা এখন নিজেরাই সব কিছু করছেন। এ দিনের ঘটনা লজ্জার। গোটা রাজ্যেই এখন এই চিত্র। ওরা আসলে সরকার ও দল এক করে দিচ্ছেন।”

বিরোধী দলগুলির আরও দাবি, যদি প্রাক্তন কাউন্সিলর হিসেবেই ওই নেতাদের ডাকা হয়ে থাকে তবে বিরোধী দলের কাউন্সিলরদেরও আমন্ত্রণ পাওয়া উচিত ছিল। পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের তাপস রায় বলেন, “আমি কোনও আমন্ত্রণ পাইনি। এই ঘটনায় আসলে দলতন্ত্রের দূষণই ছড়াল পর্ষদ।” তিনিও কোনও আমন্ত্রণ পাননি জানিয়ে প্রাক্তন মেয়র পারিষদ কংগ্রেসের রবিউল ইসলাম বলেন, “এই ঘটনা হাস্যকর।” তৃণমূল বিধায়ক তথা পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “একটা ভাল জিনিস হচ্ছে। সেটা না দেখে ত্রুটি খুঁজে বের করা হচ্ছে।”

দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আসানসোল শাখার মুখ্য আধিকারিক সুদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “আমরাই ওঁদের আমন্ত্রণ করেছিলাম। তাই মঞ্চে তুলেছি।” সরকারি পদাধিকারী ছাড়া সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চে কি কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের ডাকা যায়? এই প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন সুদীপবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

controversy tmc leaders government programme tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE