Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

গণপিটুনিতে দোষী ১২ জন

আইনজীবীদের দাবি, সাম্প্রতিক কালে গণপিটুনির বহু ঘটনা ঘটেছে রাজ্য জুড়ে। তবে তেমন একটি মামলায় এত জনকে দোষী সাব্যস্ত করার নজির তেমন নেই। 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৪৮
Share: Save:

গাছে কীটনাশক ছড়াতে এসে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়েছিলেন পাঁচ জন। দু’জনের মৃত্যুও হয়। প্রায় তিন বছর আগের ওই ঘটনায় ১২ জনকে দোষী সাব্যস্ত করল কালনা আদালত। শুক্রবার কালনার অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা বিচারক তপনকুমার মণ্ডল জানান, আগামী সোমবার সাজা ঘোষণা করা হবে। বেকসুর খালাস পান সাত জন।

আইনজীবীদের দাবি, সাম্প্রতিক কালে গণপিটুনির বহু ঘটনা ঘটেছে রাজ্য জুড়ে। তবে তেমন একটি মামলায় এত জনকে দোষী সাব্যস্ত করার নজির তেমন নেই।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি আমগাছে কীটনাশক ছড়ানোর জন্য নদিয়ার রানাঘাটের পালপাড়া থেকে কালনার বারুইপাড়া এলাকায় এসেছিলেন বেশ কয়েকজন। কিন্তু সাতসকালে এলাকায় অপরিচিত মুখ দেখে ছেলেধরা সন্দেহে চিৎকার, চেঁচামেচি শুরু হয়। গাছের ডাল, লোহার রড, পাইপ, বেল্ট দিয়ে শুরু হয় গণপিটুনি। কয়েকজন পালিয়ে গেলেও পাঁচ জন গণ-আক্রোশের মুখে পড়েন। মারা যান অনিল বিশ্বাস এবং নারায়ণ দাস নামে দু’জন। গুরুতর জখম হন মধুমঙ্গল দাস, ব্যাঞ্জন বিশ্বাস ও মানিক সরকার। দীর্ঘ চিকিৎসার পরে সুস্থ হন তাঁরা। তাঁদের ব্যাগে কীটনাশক-সহ নানা সরঞ্জামও মেলে। পরে মৃত অনিল বিশ্বাসের ছেলে রাজু বিশ্বাস কালনা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

গণপিটুনিতে মারের ছবি ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় ছড়িয়ে পড়লে কয়েকটি মোবাইল উদ্ধার করে সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠায় পুলিশ। মামলায় মোট ২৬ জনের নামে চার্জশিট দেওয়া হয়। তদন্তকারী আধিকারিক হিসাবে নিযুক্ত হন হাসান পারভেজ। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের মধ্যে ছ’জন পলাতক। বাকিদের মধ্যে সাত জন উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান। এক জনের বিচার শুরু হয় জুভেনাইল আদালতে। বাকিদের বিচার চলে কালনা আদালতে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আহতেরা টি-আই প্যারেডে পাঁচ জনকে শনাক্ত করেন। তদন্তকারী আধিকারিক, চিকিৎসক, ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির কর্তা-সহ ৫৭ জন সাক্ষ্য দেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজনও গোপন জবানবন্দি দেন। মামলার সরকারি আইনজীবী বিকাশ রায় জানান, কৃষ্ণ দাস, সৌমেন দে, গণেশ ধুঙ্গি, নিমাই হালদার, শম্ভু দলুই, বাবু পাল এবং সাহেব দাসকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Lynching
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE