ভাতারের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া গোখরো। নিজস্ব চিত্র
ঘরের মেঝেতে বসে দেড় বছরের মেয়েকে খাওয়াচ্ছিলেন তরুণী। আচমকা দেখেন খাটের নীচে সাপ ঘোরাঘুরি করছে। স্ত্রীর চিৎকারে ছুটে আসেন স্বামী। খাটের নীচ থেকে সাপটাকে বের করতেই চোখে পড়ে মেঝের গর্ত থেকে কিলবিল করে বেরিয়ে আসছে আরও সাপ। সবমিলিয়ে ১৯টা গোখরো সাপ ধরা পড়ে ভাতারের দাউড়াদাঙার ওই বাড়ি থেকে। পরে সেগুলি জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বন দফতরের বর্ধমান জেলার আধিকারিক দেবাশিস শর্মা বলেন, “সাপেদের যে প্রজনন হার তাতে ১৯-২০টি বাচ্চা বের হওয়াটা স্বাভাবিক। ডিম থেকে নিরাপদে বাচ্চা বের হওয়ার জন্য নিরিবিলি জায়গা বেছে নেয় সাপেরা। সাধারণত বাড়ির ভিতরে ইঁদুরের গর্তের মধ্যে ডিম পারে।’’
বছরখানেক আগেও ভাতারের ওই গ্রামে অন্য একটি বাড়ির রান্নাঘরে ডাঁই করে রাখা আলুর মধ্যে থেকে বেশ কয়েকটা গোখরো সাপ বেরোয়। তবে সে বার সাপগুলি মেরে ফেলেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শনিবার অবশ্য তেমন ভুল করেননি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সুনীল সরকারের বসতবাড়ি থেকে সাপগুলি বের হয়। সুনীলবাবুর ছেলে সুমিত জানান, ওই ঘরটি তাঁদের বসার ঘর। প্রতিদিন সন্ধ্যায় বাড়ির সবাই বসে টিভি দেখেন, গল্প করেন সেখানে। এ দিনও তাঁর স্ত্রী তৃষা বছর দেড়েকের মেয়েকে ওই ঘরে বসে খাওয়াচ্ছিলেন। হঠাৎ দেখেন খাটেন নীচে সাপ। সুমিত বলেন, ‘‘সাপটাকে বের করতে এসে দেখি খাটের পায়ার কাছে একটি গর্ত থেকে আরও সাপ বের হচ্ছে। সেগুলিকে ধরে একটি পাত্রের মধ্যে রাখি।’’ তাঁর দাবি, এক-দেড় ফুট আকারের ১৪টি গোখরো বের হয়। পরে রাত আরও ৫টি সাপ বেরোয়। সাপগুলিকে ধরে ওড়গ্রাম জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় ছেড়ে আসেন তাঁরা। তবে আতঙ্ক কাটছে না তাঁদের। সুনীলবাবু জানান, “ওই ঘরে ঢুকতেই ভয় লাগছে। মনে হচ্ছে আরও সাপ আছে।’’
সাপগুলিকে জঙ্গলে ছেড়ে আসার উদ্যোগের তারিফ করেছেন বন দফতরের কর্মীরা। সাপের উপদ্রব রুখতে বাড়ির চারপাশে কার্বলিক অ্যাসিড বা ব্লিচিং পাওডার ছড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy