Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রান্নাঘরের আলুর ডাঁই সরাতেই বেরিয়ে এল ১৯টি গোখরো!

ওই গ্রামেরই সম্ভ্রান্ত চাষি সন্তোষ ঘোষ। দুপুর দু’টো নাগাদ সন্তোষবাবুর মা আরতিদেবীর আলুর গাদায় কিছুর নড়াচড়া দেখে ছেলেকে জানান। সন্তোষবাবু গিয়ে দেখেন, কিলবিল করছে একটি গোখরো সাপ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাতার শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৭ ১০:৪৫
Share: Save:

রান্নাঘরের এক কোণে ডাঁই করা আলু। তাতে নড়াচ়়ড়া করছে কী যেন। ছেলেকে ডেকে ভাল করে দেখতেই দেখা যায়, ওটা গোখরো সাপ। একটা নয়, প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে ঘর থেকে বের হল একে একে ১৯টি গোখরো! সোমবার ভাতারের দাউড়াভাঙা গ্রামের ঘটনা।

ওই গ্রামেরই সম্ভ্রান্ত চাষি সন্তোষ ঘোষ। দুপুর দু’টো নাগাদ সন্তোষবাবুর মা আরতিদেবীর আলুর গাদায় কিছুর নড়াচড়া দেখে ছেলেকে জানান। সন্তোষবাবু গিয়ে দেখেন, কিলবিল করছে একটি গোখরো সাপ। খানিক বাদে কাজে বের হওয়ার সময়ে আরও একটি গোখরোকে রান্নাঘর থেকে বের হতে দেখেন সন্তোষবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আলুর গাদা সরিয়ে দেখি বেশ কয়েকটা দেড়-দু’ফুটের সাপ রয়েছে।’’ শুধু তাই নয়, মাটির রান্নাঘরের এক কোণে ছোট্ট একটা গর্ত দেখে সন্দেহ আরও বাড়ে। রাত দেড়টা পর্যন্ত লাঠি দিয়ে খোঁচাখুঁচি করতে আরও বেশ কিছু সাপ বের হয় গর্ত থেকে। কয়েকটি ফণা তুলে তেড়েও আসে বলে দাবি সন্তোষবাবুর। সব ক’টি সাপকেই মেরে ঘরের বাইরে ফেলে দেন সন্তোষবাবু। তবে আরও সাপ ঘরে থাকতে পারে বলে তাঁর সন্দেহ।

ঘরে ১৯টি গোখরো মেলায় মঙ্গলবার সকালেও আতঙ্কে রয়েছে পরিবারটি। প্রথম সাপটি যখন দেখা যায়, তার কিছুক্ষণ আগেই রান্নাঘরে বসে খাওয়া-দাওয়া করেছিল সন্তোষবাবুর চার বছরের ছেলে অয়ন। সন্তোষবাবুও সেখানে খাওয়া সেরেছিলেন। আরতিদেবীর আশঙ্কা, ‘‘ঘরে থাকার সময় যদি সাপগুলো বেরিয়ে পড়ত, ভেবেই ভয় লাগছে।’’

তবে এক সঙ্গে এতগুলি সাপ গৃহস্থ বাড়িতে কী ভাবে এল? বর্ধমানের ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার দেবাশিস শর্মার ব্যাখ্যা, ‘‘বর্ষায় ব্যাঙ, ইঁদুরের উপদ্রব বাড়ে গ্রামে। তা ছাড়া মাটির ঘরও অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা। তাই সাপগুলি ওই বাড়িতে বাসা বেঁধেছিল বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে।’’

জেলার নানা প্রান্তে লাগাতার সর্পদষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। প্রশাসনের তরফে সর্পদষ্ট হলে কী কী তৎপরতা দরকার, সে বিষয়ে প্রচারও চালানো হচ্ছে। বাড়িতে সাপের উপদ্রব রুখতে ঘর নিয়মিত পরিষ্কার রাখা এবং নিয়মিত কার্বলিক অ্যাসিড, ব্লিচিং পাউডার ছড়ানোর পরমার্শ দিয়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দফতরের আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় হালদার। সেই সঙ্গে দেবাশিসবাবুর আবেদন, ‘‘কোথাও সাপ দেখলে আতঙ্কিত না হয়ে ও সাপ না মেরে সংশ্লিষ্ট এলাকার রেঞ্জ অফিসে যোগাযোগ করুন। বন দফতরের কর্মীরা গিয়ে সাপগুলিকে ধরে জঙ্গলে ছেড়ে দেবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

snakes Cobra গোখরো
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE