মাঝরাতে আবগারি দফতরের গাড়ি দেখেই চোলাই হাতে খেতজমিতে পালিয়েছিল এক দল কারবারি। সেখানে জড়ো করে রাখা ধানের ভিতরে চোলাইয়ের প্যাকেট লুকিয়ে রেখে চম্পট দেওয়ার চেষ্টাও করেছিল তারা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। তাড়া করে ভাতারের বড়বেলুনে ছ’জনকে গ্রেফতার করেছেন আবগারি দফতরের কর্মীরা।
ওই দফতরের কর্তা শশীভূষণ তিওয়ারি বলেন, ‘‘অনেকটা ছুটে গিয়ে জমি থেকে চোলাই কারবারিদের পাকড়াও করা হয়েছে। বেশ কয়েকজন পালিয়ে গিয়েছে।’’ শনিবার সন্ধ্যা থেকে রবিবার ভোর পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে জেলা পুলিশও। ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ ও আবগারি দফতর সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১১০০ লিটার চোলাই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় ১৫০০ লিটাট মদ তৈরির উপকরণ নষ্ট করা হয়েছে বলে পুলিশ ও আবগারি দফতর জানায়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রবিবার ভোরে অন্য জায়গা থেকে মদ নিয়ে ভাতারের বড়বেলুন গ্রামে ঢোকার সময়ে ধরা পড়ে তিন মোটরবাইক আরোহী। তাদের কাছে ২৪০ লিটার মদ মেলে। সেই সঙ্গে তিনটি মোটরবাইকও বাজেয়াপ্ত করা হয়। আবগারি দফতর সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে ওই গ্রামে আবগারি দফতরের একটি দল হানা দেয়। গাড়ি নিয়ে গ্রামে ঢোকার সময়ে কর্মী-আধিকারিকেরা দেখতে পান, বেশ কয়েকজন ব্যক্তি প্লাস্টিকের প্যাকেট নিয়ে জমির দিকে যাচ্ছে। তাঁরা গ্রামে ঢুকেই জমির দিকে হানা দেন। তখনই সেখান থেকে ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা জমিতে জড়ো করে রাখা ধানের ভিতর থেকে চোলাইয়ের প্যাকেটগুলি বের করে দেয়।
আবগারি আধিকারিক শশীভূষণবাবু বলেন, ‘‘জমি থেকে ফেরার সময়ে দেখি, একটি মোটরবাইকে করে চোলাই পাচারের চেষ্টা করা হচ্ছে। বাইক-সমেত কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়। মোটরবাইকটি এখন আমাদের হেফাজতে রয়েছে।’’ দেওয়ানদিঘি থানার সঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে আবগারি দফতর বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে। গলসি ও কালনা থেকে চার জন করে গ্রেফতার করেছে আবগারি দফতর।
মেমারি থানার পুলিশ আমাদপুর, বোড়ো, বিটরা, রসুলপুর, কোটা এলাকা থেকে চোলাই বিক্রির জন্য ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানায়, ধৃতেরা রাস্তার ধারে প্লাস্টিকের জায়গায় চোলাই বিক্রি করছিল। ওই থানারই মণ্ডলগ্রামে হানা দিয়ে ১২০০ লিটার চোলাইয়ের উপকরণ নষ্ট করেছে পুলিশ ও আবগারি দফতর। শক্তিগড় থানাও জানায়, চোলাই বিক্রির জন্য ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আউশগ্রামের আদুরিয়া থেকে চোলাই তৈরির জন্য এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের বাড়ি থেকে ৩৫ লিটার মদ ও ৭৫ লিটার চোলাই তৈরির উপকরণ মিলেছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বর্ধমান সদর) প্রিয়ব্রত রায় বলেন, ‘‘চোলাই প্রস্তুতকারী ও কারবারিদের বিরুদ্ধে টানা অভিযান চালানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy