Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
ফের জাতীয় সড়কে চান্ডুল মোড়ে দুর্ঘটনা, মৃত এক আহত ৩৮

বাসের নীচে চাপা ছিল পা দুটো

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ৫টা ৫৫ মিনিট নাগাদ বর্ধমান আদরাহাটি রুটের একটি বাস জাতীয় সড়ক ধরে বর্ধমান আসছিল। ফাগুপুরের কাছে চান্ডুল মোড়ে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছিল বাসটি। তখনই দ্রুতগতিতে ওই বালিবোঝাই লরিটি এসে বাসের পিছনে ধাক্কা দেয়।

বাঁ দিকে, উল্টে পড়ে রয়েছে বাস। ডান দিকে, তখনও বাসের নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন তিন জন। নিজস্ব চিত্র

বাঁ দিকে, উল্টে পড়ে রয়েছে বাস। ডান দিকে, তখনও বাসের নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন তিন জন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান ও গলসি শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:৪১
Share: Save:

দুর্ঘটনার গেরো কাটছে না জাতীয় সড়কে।

শুক্রবার সকালে ফের যাত্রীবাহি বাসের সঙ্গে বালিবোঝাই লরির ধাক্কায় প্রাণ গেল সিরাজুল মণ্ডল (৫১) নামে এক ব্যক্তির। আহতের সংখ্যা ৩৮। তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রতিটি মোড়ে কড়া নজরদারি না হলে দুর্ঘটনা চলতেই থাকবে। পুলিশ জানায়, ওই লরির চালক ও খালাসি পলাতক।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ৫টা ৫৫ মিনিট নাগাদ বর্ধমান আদরাহাটি রুটের একটি বাস জাতীয় সড়ক ধরে বর্ধমান আসছিল। ফাগুপুরের কাছে চান্ডুল মোড়ে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছিল বাসটি। তখনই দ্রুতগতিতে ওই বালিবোঝাই লরিটি এসে বাসের পিছনে ধাক্কা দেয়। বাসটি গড়িয়ে যায় রাস্তার পাশের নয়ানজুলিতে। বাসে থাকা জনা পঞ্চাশ যাত্রীর প্রত্যেকেই কমবেশি আহত হন। প্রত্যক্ষদর্শী লাল্টু মান্না, অমিয় গড়াইরা বলেন, ‘‘বিকট শব্দ শুনে দেখি বাসটি গড়িয়ে যাচ্ছে। আমরা তাড়াতাড়ি গিয়ে আহতদের উদ্ধার করি।’’ প্রত্যক্ষদর্শী তথা স্থানীয় পঞ্চায়েতের বিদায়ী সদস্য শেখ জয়নালের দাবি, বাসটি ঠিক জায়গাতেই দাঁড়িয়েছিল। লরি চালকের অসতর্কতার জন্যই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ছেলে বউমাকে নিয়ে বেলুড় মঠ যাওয়ার জন্য আদড়াহাটি থেকে বাসে চেপেছিলেন দীপালি দে। হাসপাতালে শুয়ে জানান, বাসটি ঠিকঠাকই চলছিল। লরিটা এত জোরে ধাক্কা দেয় যে সামলাতে পারেনি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, আহতদের উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়ার সময় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন সিরাজুল মণ্ডল। কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথে রাস্তাতেই মারা যান গলসির ভারিচা গ্রামের ওই বাসিন্দা। জানা যায়, এ দিন ছেলে সজল ও দুই ভাই সাইদুল ও নজরুলকে নিয়ে বর্ধমানে চোখের ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছিলেন তিনি। সিভিক ভলান্টিয়ার সজল জানান, বাসে ভিড় থাকলেও গলসি বাজারের কাছে বসার জায়গা পান তাঁরা। বাবার সঙ্গে তিনি পিছনের আগের আসনে বসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘চাণ্ডুল মোড়ের কাছে বাসে প্রচন্ড জোর ধাক্কা লাগে। জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখি বাসটা গড়িয়ে যাচ্ছে। আর কিছু মনে নেই। একটি পরে সম্বিত ফিরলে বুঝতে পারি বাসের নীচে পা’দুটো চাপা পড়ে রয়েছে। আরও দু’জন একই ভাবে আটকে আছে।’’ তাঁর দাবি, জুতো খুলেও পা বের করতে পারছিলেন না কিছুতেই। কাকাকে এক বার দেখতে পেলেও বাবাকে দেখতে পাননি। ছুটোছুটি, আর্তনাদের মধ্যে মোবাইল বের করে ফোন করতেও পারেননি। শেষে ক্রেন এসে বাস তুলতে বেরোতে পারেন ওই তিন জন। সজল বলেন, ‘‘কারা যেন এসে আমাকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে গেল। বেঁচে যাব বুঝতে পারছিলাম। কিন্তু এ ভাবে বাবাকে হারাব ভাবিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Accident Highway Death Injury
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE