Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Abandoned Mines

পরিত্যক্ত খনিতে বিপত্তি বারবার, ক্ষোভ

কখনও আত্মহত্যা, কখনও খুন, কখনও বা দুর্ঘটনা— সব ক্ষেত্রেই ঘটনাস্থল হিসেবে উঠে আসছে নানা পরিত্যক্ত ভূগর্ভস্থ ও খোলামুখ খনির প্রসঙ্গ।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নীলোৎপল রায়চৌধুরী
রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৫৪
Share: Save:

কখনও আত্মহত্যা, কখনও খুন, কখনও বা দুর্ঘটনা— সব ক্ষেত্রেই ঘটনাস্থল হিসেবে উঠে আসছে নানা পরিত্যক্ত ভূগর্ভস্থ ও খোলামুখ খনির প্রসঙ্গ। এই পরিস্থিতিতে খনিমুখ নিয়ম মেনে ভরাট না করা বা সতর্কতামূলক পদক্ষেপ না করার জন্যই এমনটা ঘটছে বলে ইসিএলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের।

ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়লা-শিল্পের রাষ্ট্রায়ত্তকরণের আগে ৪২৪টি ভূগর্ভস্থ খনি ছিল। বর্তমানে চালু রয়েছে ১২৩টি খনি। জেলার নানা এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বন্ধ খনিগুলির মুখ অনেক ক্ষেত্রেই বন্ধ করা হয়নি। পাশাপাশি, রাষ্ট্রায়ত্তকরণের পরে চালু হওয়া খোলামুখ খনিতে কয়লা উত্তোলনের পরে সেই সব এলাকার বেশির ভাগই জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। সিটু নেতা তথা রানিগঞ্জের বিধায়ক রুনু দত্ত, আইএনটিইউসি নেতা তরুণ গঙ্গোপাধ্যায়দের অভিযোগ, ‘‘কোনও বিপত্তি না ঘটা পর্যন্ত খনিমুখ বন্ধ করা হয় না। তা ছাড়া, পরিত্যক্ত খোলামুখ খনি তার দিয়ে ঘেরা থাকে না। একাধিক বার এ নিয়ে দাবি জানিয়েও লাভ হয়নি।’’

কেমন বিপত্তি ঘটছে?

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-র ১০ জানুয়ারি জামুড়িয়ার বোগড়ায় এক মহিলাকে খুন করে লাগোয়া পরিত্যক্ত খনিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। তিন দিন পরে দেহ উদ্ধার হয়। ওই বছরই ২৯ অক্টোবর জামুড়িয়ার তপসিতে ভূগর্ভস্থ খনি মুখে নিখোঁজ হয়ে যান স্থানীয় এক যুবক। পাশাপাশি, কয়েক বছর আগে জামুড়িয়ার নিউ সাতগ্রাম ভূগর্ভস্থ খনিতে এক যুবককে ঠেলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। ১৯৯৬-এ জামুড়িয়ার সাতগ্রাম এরিয়ার সেন্ট্রাল সাতগ্রাম ভূগর্ভস্থ খনিটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ২০০৩-এ এক মহিলা ওই খনিতে নামেন। পরে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। তা ছাড়া, পাণ্ডবেশ্বর এরিয়ায় পরিত্যক্ত খোলামুখগুলির জলাশয়ে তিন বছরে তিন জনের জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে।

এ সব বিপত্তি এড়াতে কী করা উচিত, তা-ও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ। ইসিএলে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাইনিং ইঞ্জিনিয়ার জানান, ভূগর্ভস্থ খনিমুখগুলি ইস্পাতের পাত দিয়ে মুড়ে দিতে হয়। তার পরে সেখানে যাতে কেউ যেতে না পারেন, সে জন্য চার পাশে পাঁচিল বা কাঁটাতার দিয়ে বেড়া দিতে হয়। খোলামুখ খনিগুলি জলাশয়ে পরিণত হলে কাঁটাতারের বেড়া দিতে হয় সে ক্ষেত্রেও। জল না জমলে মাটি, ছাই দিয়ে ভরাট করা জরুরি। রুনুবাবু, তরুণবাবুদের অভিযোগ, সে কাজই ইসিএল ঠিকমতো না করায় সমস্যা বাড়ছে।

যদিও ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, “আমরা পরিত্যক্ত খোলামুখ খনিগুলি কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে দিই। কিন্তু এলাকাবাসী নিজেদের প্রয়োজনে খোলামুখ খনিতে জমা জল ব্যবহার করতে সেই তার খুলে দেন। আর, ভূগর্ভস্থ পরিত্যক্ত খনিমুখগুলি বন্ধ করে দেওয়া হলেও দুষ্কৃতীরা কয়লা, লোহা কাটার জন্য মুখগুলি বারবার খুলে নেয়। অভিযোগ পেলে পদক্ষেপ করা হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Abandoned Mines Rani Gunj
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE