প্রতীকী ছবি।
প্রায় এগারো মাস পরে উৎপাদন শুরু হল নিউকেন্দা কোলিয়ারির ভূগর্ভস্থ ৪ নম্বর খনিতে। ১০ মে খনি চালু হলেও নতুন করে কয়লা উত্তোলন হয়নি। ১৫ জুন কর্তৃপক্ষ ৪৩৮ জন কর্মীকে অন্যত্র বদলি নেওয়ার পরামর্শ দেন। তাতে হতাশা তৈরি হয় খনিকর্মীদের মধ্যে। সোমবার উৎপাদন চালু হওয়ায় তা দূর হল।
গত বছর ২৬ জুলাই ইসিএলের কেন্দা এরিয়ার এই খনিটির অদূরে পরিত্যক্ত ওয়েস্ট কেন্দা খোলামুখ খনিতে অবৈধ খননের জেরে আগুন লাগে। ডিরেক্টর জেনারেল অব মাইনস সেফটি-র (ডিজিএমএস) নির্দেশে ৪ নম্বর খনি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আবার ডিজিএমএসের নির্দেশেই খনি চালু করা হয়।
ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪ নম্বর খনিটি অলাভজনক। প্রতি টন কয়লায় ২৯ হাজার টাকা ক্ষতি হয়। ভূগর্ভস্থ এই খনি বাঁচাতে দেড় বছর আগে নিউকেন্দা খোলামুখ খনি চালু করা হয়েছিল। তার মুনাফা থেকে ভূগর্ভস্থ খনিটি চালানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু খোলামুখ খনি চালু হতেই জমির দাম বৃদ্ধি, পুনর্বাসন-সহ একগুচ্ছ দাবিতে ‘কেন্দা গ্রামরক্ষা কমিটি’ আন্দোলন শুরু করে। বিষয়টি আদালতে গড়ায়। ইসিএল সূত্রের দাবি, এই বিষয়টি বিচারাধীন হওয়ায় খোলামুখ খনির ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন, এ ভাবে ভর্তুকি দিয়ে ভূগর্ভস্থ খনিটি চালানো হবে না। প্রয়োজনে খোলামুখ খনির প্রকল্পও বন্ধ করে দেওয়া হবে।
ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ নিয়ে গ্রামরক্ষা কমিটির প্রতিনিধিদের নিয়ে কেন্দা এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার সঞ্জয় কুমার বৈঠক করেন। ইসিএল এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রামরক্ষা কমিটি জানায়, তারা খোলামুখ খনির বিরোধী নয়। কিন্তু কেন্দা গ্রাম-সহ লাগোয়া এলাকার পুনর্বাসন, জমির দামের পুনর্মূল্যায়ণ, জমিদাতা ও খেতমজুরদের নিয়োগ, আদিবাসী এলাকায় জলের ব্যবস্থা করতে হবে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে জমি অধিগ্রহণ করা যাবে না। খনির কর্তারা তা মেনে নেন। তার পরেই খনি দু’টি চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
গ্রামরক্ষা কমিটির নেতা বিজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘দ্রুত পুনর্বাসন দরকার। গ্রামবাসীরা চান, তাঁদের সব জমি অধিগ্রহণ করুক ইসিএল। দাবি তাড়াতাড়ি মিটলে আমরা আর আদালতে যাব না। কারণ, প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেলে গ্রামবাসীদের ক্ষতি হবে।’’ নিউকেন্দা কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ জানান, ইতিমধ্যে প্রায় একশো একর জমি অধিগ্রহণ হয়েছে। তার মধ্যে ১২ একরে খননকাজ চলছে। আরও ৩৭ একর জমি চাই। পুনর্বাসনের দিকটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে বলে আশ্বাস খনিকর্তাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy