Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

নীলকুরিঞ্জি দেখা হল না, আক্ষেপ 

দীর্ঘ এক যুগের অপেক্ষা।  ২০০৬-র পরে এ বছর ‘নীলকুরিঞ্জি’ ফোটার কথা ‘ঈশ্বরের আপন দেশ’ কেরলে। দীর্ঘ বারো বছর পরপর ফোটা এই ফুলটি দেখতেই বাড়তি আগ্রহ থাকে পর্যটকদের। এ বারও ছিল।

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৮ ০৭:৩০
Share: Save:

দীর্ঘ এক যুগের অপেক্ষা। ২০০৬-র পরে এ বছর ‘নীলকুরিঞ্জি’ ফোটার কথা ‘ঈশ্বরের আপন দেশ’ কেরলে। দীর্ঘ বারো বছর পরপর ফোটা এই ফুলটি দেখতেই বাড়তি আগ্রহ থাকে পর্যটকদের। এ বারও ছিল। কিন্তু ভয়ঙ্কর বন্যা সব হিসেবে ওলটপালট করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আসানসোল মহকুমার পর্যটকদের যেমন আক্ষেপ যাচ্ছে না। তেমনই, মাথায় হাত পড়েছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের।

এই ফুলের টানেই মাস চারেক আগে স্থানীয় একটি ভ্রমণ সংস্থায় কেরলের মুন্নারে যাওয়ার জন্য বুকিং করেছিলেন, জানান চিত্তরঞ্জনের বাসিন্দা, পেশায় রেলকর্মী সিঞ্চন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘সব পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়েছে। মুন্নার নয়, ডুয়ার্স যাব।’’ একই অবস্থা কুলটির বুম্বা চৌধুরীরও। তিনি জানান, আচমকা এক দিন তাঁর ছেলে, সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া সৃজন জানতে চায়, ‘বাবা, ব্যাক ওয়াটার কী?’ ছেলের প্রশ্ন শুনেই তিনি ঠিক করেছিলেন কেরলে যাওয়ার। সেই মতো, পুজোর ছুটিতে কেরল যাওয়ার বিমানের টিকিট, হোটেল বুকিং, সবই করে ফেলেছিলেন বুম্বাবাবু। কিম্তু সে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে যাবতীয় পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে হয়েছে বলে জানান তিনি।

এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েছেন শিল্পাঞ্চলের একাধিক ভ্রমণ সংস্থার কর্ণধারেরাও। গত কয়েক বছরের মতো এ বারও কেরলের ‘বুকিং’ ভালই ছিল বলে জানান চিত্তরঞ্জনের একটি ভ্রমণ সংস্থার ম্যানেজার প্রদীপ দাম। তিনি জানান, নীলকুরিঞ্জির টানে এ বার জোয়ার এসেছিল কেরল-পর্যটনে। কিন্তু বন্যা সব ভেস্তে দিয়েছে। প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘কেরলের পরিকল্পনা বাতিল করেছি। তার পরিবর্তে কেউ কেউ মাদুরাই, রামেশ্বরম, পুদুচেরি যেতে চাইছেন। অনেকেই আবার বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করে টাকা ফেরত নিচ্ছেন। এর জেরে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে আমাদের।’’

চলতি বছরে কেরলে যাওয়ার মোট পাঁচটি তারখিই বাতিল করে দিয়েছেন আসানসোলের একটি ভ্রমণ সংস্থার কর্ণধার বিশ্বজিৎ সান্যাল। তিনি জানান, ১২ অক্টোবর প্রথম দলটির আসানসোল থেকে রওনা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিপর্যয়ের জেরে সব ‘বুকিং’ বাতিল হয়ে গিয়েছে। পর্যটকেরা কেরলের পরিবর্তে ডুয়ার্স, সিকিম, ভুটানে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।

তবে কেরল ঘুরে দাঁড়াবে, আশাবাদী আসানসোলের এসবি গড়াইরোডের একটি ভ্রমণ সংস্থার কর্ণধার বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়। বাসুদেববাবুর কথায়, ‘‘আমরা ভরসা দিচ্ছি। কিন্তু তার পরেও পর্যটকেরা বুকিং বাতিল করছেন। বদলে যাচ্ছেন হিমাচল প্রদেশ বা রাজস্থান।’’ তাই শেষমেশ কেরল-ভ্রমণের গোটা পরিকল্পনাই বাতিল করতে হয়েছে ওই ভ্রমণ সংস্থাকেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Neelakurinji Kerala Flood Tourism
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE