Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

প্রতিবাদীর মৃত্যুর পরে ভাঙা হল জুয়া-গাঁজার ঠেক

প্রতিবাদ করতে গিয়ে পাড়ার এক বাসিন্দা খুন হওয়ার পরে জুয়া-গাঁজার ঠেক ভেঙে দিলেন দুর্গাপুরের নতুনপল্লির শান্তিনগরের বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার এলাকার বেশ কয়েক জন, যাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই মহিলা, টিনের চালার ওই ঠেকটি ভেঙে দেন। খুনের ঘটনার বুধবার রাতেই এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এ দিন অপর অভিযুক্তকেও ধরা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৪৫
Share: Save:

প্রতিবাদ করতে গিয়ে পাড়ার এক বাসিন্দা খুন হওয়ার পরে জুয়া-গাঁজার ঠেক ভেঙে দিলেন দুর্গাপুরের নতুনপল্লির শান্তিনগরের বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার এলাকার বেশ কয়েক জন, যাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই মহিলা, টিনের চালার ওই ঠেকটি ভেঙে দেন। খুনের ঘটনার বুধবার রাতেই এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এ দিন অপর অভিযুক্তকেও ধরা হয়।

বুধবার সকালে বাড়ির সামনে নর্দমা পরিষ্কার করার সময়ে জুয়ার ঠেক থেকে ভেসে আসা গালিগালাজের প্রতিবাদ করেছিলেন শান্তিনগরের ফাঁসিপুকুরের বছর পঁয়তাল্লিশের মানিক পাল। অভিযোগ, প্রথমে ইট ছুড়ে, তার পরে লাঠি-রড দিয়ে পিটিয়ে তাঁকে খুন করে ঠেকের দুই যুবক। রাতেই দুর্গাপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নিহতের ছেলে, কলেজ পড়ুয়া লবাকান্ত পাল। তার পরেই এক অভিযুক্ত ভূষণ পাসোয়ানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ দিন সকালে আর এক অভিযুক্ত রমজান আলিকেও গ্রেফতার করা হয়। ভূষণকে দুর্গাপুর আদালতে তোলা হলে দশ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।

এ দিন সকালে টিনের ছাউনি দেওয়া ওই জুয়ার ঠেকে লাঠিসোটা নিয়ে চড়াও হন ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। ভেঙে ফেলা হয় সেই ছাউনি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দু’বছর ধরে এই ঠেকটি চলছে। এলাকার কয়েক জন যুবকের পাশাপাশি সেখানে আনাগোনা রয়েছে বাইরের কিছু লোকজনেরও। স্থানীয় সূত্রের খবর, পেশায় রঙমিস্ত্রি ভূষণের বিরুদ্ধে আগে ছোটখাটো চুরির অভিযোগ উঠেছে। কয়েক বার তাকে ধরে মারধরও করেছে জনতা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ফাঁসিপুকুরের ওই ঠেকে নিয়মিত যাতায়াত ছিল তার। অনেক সময়েই সে নানা লোকজনের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়েছে। তবে পাড়ার লোকজনের সঙ্গে সে খুব একটা মেলামেশা করত না বলে জানান প্রতিবেশীরা। অপর অভিযুক্ত রমজানের বাড়ি নঈমনগরে। তার প্রতিবেশীরা জানান, মারবেল মিস্ত্রির সহকারি হিসেবে কাজ করত রমজান। সে-ও পাড়ার কারও সঙ্গে মেলামেশা করত না। ভূষণ-সহ ওই ঠেকের অন্যদের সঙ্গেই তার বেশি ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে স্থানীয় মানুষজনের দাবি।

মাটির কুয়ো খোঁড়ার কাজ করে সংসার চালাতেন মানিকবাবু। পরিবারে রয়েছেন তাঁর বৃদ্ধা মা সুভাষিনীদেবী, স্ত্রী তরুলতাদেবী ও ছেলে। সংসারের হাল ফেরাতে ছেলে লবাকান্ত দুর্গাপুর গভর্নমেন্ট কলেজে পড়ার পাশাপাশি একটি ওষুধের দোকানে কাজও করেন। তিনি অভিযোগ করেন, এর আগেও তাঁর বাবা ওই জুয়ার ঠেক চালানোর প্রতিবাদ করেছেন। সে জন্যই তাঁকে দেখে গালিগালাজ করছিল ভূষণেরা। তরুলতাদেবী বলেন, ‘‘এ বার আমাদের সংসার চলবে কী ভাবে, জানি না। প্রতিবাদ করার মাসুল বোধহয় দিতে হবে আমাদের গোটা পরিবারকেই।’’ মানিকবাবুর মা সুভাষিনীদেবী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে যারা এ ভাবে মেরে ফেলল তাদের কড়া শাস্তি চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE