Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
তৃণমূলের নজরে পঞ্চায়েত

শহরে জিতে জনসংযোগ শুরু গ্রামেও

এ বার দুর্গাপুরের পুরভোটে ৪৩টি ওয়ার্ডের সব ক’টিতেই জিতেছে তৃণমূল। বেশির ভাগেই জয় এসেছে বড় ব্যবধানে। দু’একটি ওয়ার্ডে প্রায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ভোট পেয়েছে তৃণমূল। বিরোধীদের অভিযোগ, এই সব সংখ্যাই প্রমাণ করে দিচ্ছে, কী হারে ভোট লুঠ করা হয়েছে।

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৭ ০২:৪৫
Share: Save:

পুরভোটে জেতার পরেই নজরে পঞ্চায়েত নির্বাচন। দুর্গাপুরের লাগোয়া গ্রামীণ এলাকাগুলিতে সেই উদ্দেশ্যে কাজ শুরু করে দিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ওই সব এলাকায় জনসংযোগ বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে শাসক দল। বিরোধীদের অবশ্য দাবি, ভোট লুঠ করে শহরে জিতেছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত ভোটে গ্রামাঞ্চলেও সেই পথে হাঁটার প্রস্তুতি শুরু করেছে তারা।

এ বার দুর্গাপুরের পুরভোটে ৪৩টি ওয়ার্ডের সব ক’টিতেই জিতেছে তৃণমূল। বেশির ভাগেই জয় এসেছে বড় ব্যবধানে। দু’একটি ওয়ার্ডে প্রায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ভোট পেয়েছে তৃণমূল। বিরোধীদের অভিযোগ, এই সব সংখ্যাই প্রমাণ করে দিচ্ছে, কী হারে ভোট লুঠ করা হয়েছে। বহিরাগতদের এনে শহরে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে তৃণমূলের এই সাফল্য, দাবি তাদের। তৃণমূল অবশ্য এই সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।

শহরে নতুন কাউন্সিলরদের শপথগ্রহণ কবে হবে তা এখনও ঠিক হয়নি। মেয়র, ডেপুটি মেয়র বা মেয়র পারিষদ কারা হবেন, সে নিয়েও এখনও জল্পনা চলছে। তবে তারই মধ্যে দুর্গাপুরের তৃণমূল নেতৃত্ব নজর দিতে শুরু করেছেন মহকুমার গ্রামীণ এলাকাগুলিতে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটের আগে বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে জন্য গ্রামে-গ্রামে রক্তদান শিবির, স্বাস্থ্যশিবির, সাফাই অভিয়ান, খেলাধুলো-সহ নানা সামাজিক কর্মসূচির পরিকল্পনা হয়েছে।

ইতিমধ্যে এই সব কর্মসূচি শুরুও হয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি কাঁকসার বিদবিহার পঞ্চায়েতের কৃষ্ণপুর গ্রামে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। উদ্বোধন করতে যান তৃণমূলের দুর্গাপুর জেলা সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়। মলানদিঘিতে প্রতিবন্ধীদের জন্য সহায়ক সামগ্রী দেওয়ার শিবির করা হবে দুর্গাপুজোর পরে। কিন্তু প্রতিবন্ধীদের অনেকের শংসাপত্র নেই। সে কথা মাথায় রেখে তার আগে হাতে-হাতে শংসাপত্র তুলে দেওয়ার জন্য বিশেষ শিবিরের আয়োজন হবে। উত্তমবাবু বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের উন্নয়নে রাজ্য সরকার ধারাবাহিক ভাবে কাজ করে চলেছে। দলের পক্ষ থেকেও সাধ্যমতো মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

শহরের সব ওয়ার্ডেই হারের ধাক্কা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি বিরোধী নেতারা। দলের কর্মীরা বেশ হতোদ্যম হয়ে পড়েছেন বলে দাবি বাম ও কংগ্রেসের একাংশেরই। তবে পঞ্চায়েত ভোটের দিকে তাকিয়ে শাসক দলের এমন উদ্যোগকে কটাক্ষই করছেন বিরোধী নেতারা। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের দাবি, দুর্গাপুর শহরে ২ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়া বা দেড়শোর বেশি ক্লাবকে আর্থিক অনুদানের মতো কাজ করেও ভোট লুঠ করে জিততে হয়েছে তৃণমূলকে। তাই গ্রামীণ এলাকাতেও সামাজিক কাজকর্ম করে কোনও ফল হবে না। তিনি দাবি করেন, ‘‘ভোট লুঠ না করলে গ্রামেও জিতবে না তৃণমূল। অনুন্নয়ন, বেকারত্ব, গণতন্ত্রের কন্ঠরোধ করে তৃণমূল সারা রাজ্যে দমবন্ধ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। মানুষ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলেই প্রত্যাখ্যান করবে ওদের।’’ একই বক্তব্য কংগ্রেসের জেলা শিল্পাঞ্চল সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীরও।

তৃণমূল নেতা উত্তমবাবুর পাল্টা প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিরোধীদের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে অনেক আগেই। তৃণমূলের সাফল্যে কাদা না ছিটিয়ে বরং মানুষের পাশে কী ভাবে থাকা যায়, সে কথা ভাবুক ওরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE