Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ফের দুর্ঘটনা, নজরে বাসের রেষারেষি 

রেষারেষির কারণ নিয়ে চাপানউতোর দেখা দিয়েছে প্রশাসন ও বাস মালিকদের মধ্যেও। পুলিশ ও পরিবহণ দফতরের দাবি, রেষারেষি আটকাতে বাস মালিক ও কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।

 বাস ভাঙচুরের পরে। নিজস্ব চিত্র

বাস ভাঙচুরের পরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়না শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৩৩
Share: Save:

বারবার দুর্ঘটনা, প্রাণহানি ঘটছে। তবে বাসের রেষারেষিতে বিরাম নেই। মঙ্গলবার সকালেও বর্ধমান-আরামবাগ রোজের উপর রায়নার মিরেপোতা বাজারের কাছে ‘ওভারটেক’ করতে গিয়ে লরির পিছনে ধাক্কা মারে আরামবাগগামী একটি বাস। সামনের কাচ ভেঙে তুবড়ে যায় বাসের একাংশ। জখমও হন এক মহিলা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, যাত্রী তুলতে গিয়ে দেরি করে প্রতিটি বাস। পরে রেষারেষি করে গন্তব্যে পৌঁছতে গিয়ে বিপদ বাড়ে।

রেষারেষির কারণ নিয়ে চাপানউতোর দেখা দিয়েছে প্রশাসন ও বাস মালিকদের মধ্যেও। পুলিশ ও পরিবহণ দফতরের দাবি, রেষারেষি আটকাতে বাস মালিক ও কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। প্রয়োজনে মনোবিদের পরামর্শ নিতে হবে। বাস মালিকদের পাল্টা দাবি, রাস্তা জুড়ে টোটো, মোটরভ্যান, বাজার বসায় গতি হারায় বাস।

দক্ষিণ দামোদর এলাকায় রায়না-খণ্ডঘোষের রাস্তায় ২৩৬টি বাস চলাচল করে। বাঁকুড়া মোড় থেকে দু’ভাগ হওয়া (একটি যাচ্ছে ইন্দাস-পাত্রসায়র, অন্যটি যাচ্ছে হুগলির আরামবাগ) রাস্তা দিয়েও দুই মেদিনীপুরের দিকে প্রচুর বাস যায়। দক্ষিণ দামোদর বাস মালিক সমিতি সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান-আরামবাগ রোড ধরেই ৮৫টি বাস চলাচল করে। এ ছাড়াও ওই রাস্তার উপর প্রায় দেড়শোটি চালকল রয়েছে। ফলে দক্ষিণ ভারতের বড় বড় ট্রাকের যাতায়াত থাকে। প্রয়োজনের তুলনায় রাস্তা সরু হওয়ায় সবসময় চাপ থেকেই যায়। চলে রেষারেষিও।

এ দিন দুর্ঘটনার পরে এলাকার বাসিন্দা ডাবলু মুন্সি দাবি করেন, ‘‘কিছু বলতে গেলেই বাসকর্মীরা হুমকি দেয়। রেষারেষি বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের কড়া হওয়া খুবই প্রয়োজন।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তমীর দিনেও ওই রাস্তায় একটি বাস উল্টে নয়ানজুলিতে পড়ে। কয়েকজন যাত্রী আহত হন। ওই রাস্তার উপর অন্তত ১০টি বড় বাজার রয়েছে। বাসের রেষারেষির জেরে সেখানকার ব্যবসায়ীরাও আতঙ্কিত।

বাস মালিক সমিতির কর্তাদের পাল্টা অভিযোগ, বর্ধমান শহরের পারবীরহাটায় রাস্তার দু’ধার হকারে ভর্তি থাকে। রাস্তার উপরে অবিন্যস্ত ভাবে যাত্রীরা দাঁড়িয়ে থাকেন। ফলে পরপর বাস দাঁড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকে বেরোনোর পরে আবার পলেমপুর ও কৃষকসেতুর মুখে বাজারে গাড়ির গতি স্লথ হয়ে পড়ে। এর সঙ্গে রাস্তা জুড়ে টোটো, মোটরভ্যান আর মোটরবাইকের দাপাদাপিরও অভিযোগ করেছেন তাঁরা। দক্ষিণ দামোদর বাস মালিক সমিতির সম্পাদক সুকুর আমেদ বলেন, “পলেমপুরের বাজার তুলে দেওয়ার জন্য অনেকবার প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছি। এখন আমরাও বিরক্ত। সময়ে বাস গন্তব্যস্থলে না পৌঁছলে মোটা টাকা জরিমানা দিতে হয়। পরপর বাস থাকায় রেষারেষি লেগে থাকে।’’

পুলিশ কর্তাদের দাবি, বাস মালিক ও চালকদের সচেতনতা বাড়াতে হবে। মনোবিদ দিয়ে কাউন্সেলিং-এর কথাও ভেবেছেন তাঁরা। পরিবহণ সংস্থার পরিচালন সমিতির সদস্য বনমালী হাজরা বলেন, “বৈঠকে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।’’ বর্ধমান দক্ষিণ মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, পলেমপুরের বাজার তোলার কথা কেউ জানাননি। বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Accident Injury Bus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE