Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

চাকরি চেয়ে বিক্ষোভে কাজ বন্ধই

রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা সংস্থা বিসিসিএলের চাঁচ ভিক্টোরিয়া এরিয়ার দামাগড়িয়া খোলামুখ খনিটি চালু হয় ২০১৪ সালে।

দামাগড়িয়া খোলামুখ খনিতে বন্ধ রয়েছে কয়লা তোলার কাজ। সোমবার। ছবি: পাপন চৌধুরী।

দামাগড়িয়া খোলামুখ খনিতে বন্ধ রয়েছে কয়লা তোলার কাজ। সোমবার। ছবি: পাপন চৌধুরী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৯ ০০:৪০
Share: Save:

কয়লা উত্তোলন ও পরিবহণ বন্ধ করে চাঁচ ভিক্টোরিয়া এরিয়ার দামাগড়িয়া কোলিয়ারিতে বিক্ষোভ শুরু করেছেন জমিদাতাদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, খনিতে চাকরি দেওয়ার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষ তা দিচ্ছেন না। নিয়োগপত্র হাতে না পাওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। খনি কর্তৃপক্ষ সূত্রে অবশ্য জানা যায়, সমস্যা মেটাতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা সংস্থা বিসিসিএলের চাঁচ ভিক্টোরিয়া এরিয়ার দামাগড়িয়া খোলামুখ খনিটি চালু হয় ২০১৪ সালে। এই খনি সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজন মতো স্থানীয় বড়িরা গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে জমি অধিগ্রহণ করছেন বিসিসিএল কর্তৃপক্ষ। তেমনই জনা তিরিশ জমিদাতা শনিবার দুপুর থেকে কয়লা তোলা ও পরিবহণ বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেছেন। বিক্ষোভকারীদের তরফে বিপিন মাজি অভিযোগ করেন, ‘‘বছর দুয়েক আগে আমরা খনি কর্তৃপক্ষকে জমি দিয়েছি। তিন মাসের মধ্যে নিয়োগপত্র দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজও তা হাতে পাইনি। নিয়োগপত্র না পাওয়া পর্যন্ত খনিতে কাজ করতে দেওয়া হবে না।’’

সোমবার সকালে কোলিয়ারিতে গিয়ে দেখা যায়, ওই জমিদাতারা খনিতে নেমে বিক্ষোভ করছেন। তার জেরে উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ। সার বেঁধে শতাধিক কয়লা বোঝাই ট্রাক-ডাম্পার দাঁড়িয়ে আছে।। কয়লা কাটার যন্ত্রগুলিও দাঁড়িয়ে রয়েছে। ডাম্পার ও ট্রাকের চালকেরা জানান, কয়লা বোঝাই থাকায় গাড়ি ছেড়ে তাঁরা যেতে পারছেন না। অথচ, এখানে খাবার বা পানীয় জলও মিলছে না। এই পরিস্থিতি কত দিন চলবে, সে নিয়েই আশঙ্কায় তাঁরা।

সোমবার দুপুরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিসিসিএল কর্তৃপক্ষ। চাঁচ ভিক্টোরিয়া এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার সৌমেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা জমিদাতাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি। আশা করছি আগামী সপ্তাহে তাঁদের দাবি পূরণ করতে পারব। তত দিন কয়লা তোলা ও পরিবহণ চালু রাখার জন্য অনুরোধ করেছি।’’ যদিও কর্তৃপক্ষের এই আশ্বাসে নিজেদের সিদ্ধান্ত পাল্টাবেন না বলে দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা। মনোরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক জমিদাতার কথায়, ‘‘একই দাবিতে গত ১৭ জানুয়ারি আমরা টানা ছ’দিন বিক্ষোভ করেছিলাম। কর্তৃপক্ষ দাবিপূরণের জন্য দু’মাস সময় চেয়ে নেওয়ায় আমরা বিক্ষোভ তুলে নিয়েছিলাম। কিন্তু এখনও চাকরি দেওয়া হয়নি।’’ সে কারণে এ বার তাঁরা অবস্থানে অনড় বলে জমিদাতাদের দাবি।

বিসিসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই খনিতে ভূগর্ভস্থ প্রায় ১৪৭ মিলিয়ন টন কয়লা আছে। যত দ্রুত সম্ভব সেই কয়লা তুলে নিতে চান খনি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এমন বিক্ষোভের জেরে দিনের পর দিন কাজ বন্ধ থাকলে খনির উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে যাবে। খনি লোকসানে চলে যাবে। পরিবহণ বন্ধ থাকায় তুলে আনা কয়লা অসংরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থেকে চুরি হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। সেক্ষেত্রে লোকসান আরও বাড়বে। কয়লা সময় মতো তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহ করা না গেলে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও সমস্যার সম্ভাবনা দেখা দেবে। এই অবস্থায় সামগ্রিক স্বার্থ বিচার করে জমিদাতাদের সাত দিনের জন্য বিক্ষোভ প্রত্যাহারের আর্জি জানিয়েছেন সংস্থা কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Asansol Coal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE