নরসমুদায় জমায়েত। নিজস্ব চিত্র।
রাতে কোলিয়ারির বিশ্রামকক্ষে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন প্রৌঢ় খনিকর্মী। সকালে ডাকাডাকি করে সাড়া না মেলার পরে চিকিৎসক এসে পরীক্ষা করে জানান, মৃত্যু হয়েছে তাঁর। ইসিএলের নরসমুদা কোলিয়ারিতে এই ঘটনার পরে মৃতের পরিজন ও পড়শিদের বিক্ষোভে বৃহস্পতিবার বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ রইল উৎপাদন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় হিরাপুর থানার পুলিশ এবং সিআইএসএফ। পরে খনি কর্তৃপক্ষের তরফে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস দেওয়া হলে বিক্ষোভ থামে।
কোলিয়ারি সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার দুপুরের পালিতে (শিফ্ট) কাজে এসেছিলেন কার্তিক বাউড়ি (৫১) নামে ওই কর্মী। তাঁর বাড়ি সালানপুরের খুদিকা গ্রামে। রাতে প্রচণ্ড বৃষ্টি হওয়ায় কাজ শেষের পরে তিনি বাড়ি ফিরতে পারেননি। কোলিয়ারির বিশ্রামকক্ষে সহকর্মীদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েন। বৃহস্পতিবার সকালে সহকর্মীরা তাঁকে ডাকাডাকি করে সাড়া না পাওয়ায় কোলিয়ারির চিকিৎসককে ডাকা হয়। তিনি স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে কার্তিকবাবুকে মৃত ঘোষণা করেন।
কোলিয়ারির তরফে মৃতের বাড়িতে খবর পাঠানো হয়। ঘণ্টাখানেক পরে গ্রাম থেকে তাঁর পরিজন ও প্রতিবেশীরা খনিতে এসে এক নিকট আত্মীয়কে চাকরি দেওয়ার দাবিতে খনি চত্বরে মৃতদেহ রেখে বিক্ষোভ শুরু করেন। অন্য শ্রমিকদের খাদানে নামতে বাধা দেওয়া হয়। ফলে, কয়লা তোলা ও পরিবহণ বন্ধ হয়ে যায়।
সমস্যা মেটাতে খনি কর্তৃপক্ষের তরফে শ্রমিক সংগঠনগুলির সমন্বয়ে তৈরি যৌথ উপদেষ্টা কমিটিকে বৈঠক ডাকা হয়। শ্রমিক নেতাদের তরফে বিজয় মণ্ডল মৃতের পরিবারের দাবি সমর্থন জানান। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, মৃতের এক নিকটাত্মীয়ের পরিচয়পত্র-সহ যাবতীয় নথি খনি কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়ার তিন মাসের মধ্যে নিয়োগপত্র দেওয়া হবে। কিন্তু মৃতের পরিবার তখনই নিয়োগপত্র দেওয়ার দাবি জানান। তাতে সহমত না হয়ে ফিরে যান শ্রমিক নেতারা। মৃতের ছেলে শিবনাথ বাউড়ি হুঁশিয়ারি দেন, চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চলবে।
মৃতের পরিবারের সঙ্গে ফের বৈঠকে বসেন খনি কর্তৃপক্ষ। তিন মাসের মধ্যে মৃতের এক নিকট আত্মীয়কে চাকরি দেওয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। দুপুর ২টো নাগাদ বিক্ষোভ থামে। কাজ শুরু হয়। কোলিয়ারির ম্যানেজার নন্দদুলাল সিংহ বলেন, ‘‘সমস্যা মিটে গিয়েছে। খনিতে স্বাভাবিক কাজ শুরু হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy