যোগদান। নিজস্ব চিত্র
সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার বছর আড়াই পরে, যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। তার বছর দেড়েকের মধ্যে আবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন বর্ধমানের প্রাক্তন পুরপ্রধান আইনুল হক। বুধবার কলকাতায় তৃণমূল ভবনে গিয়ে দলের নেতাদের হাত থেকে পতাকা তুলে নেন আইনুল। জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের নিচুতলার একাংশ বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ। যদিও উচ্চ নেতৃত্বের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে জানিয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতারা।
বর্ধমানের রাজনীতিতে প্রয়াত সিপিএম নেতা নিরুপম সেনের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন আইনুল। ১৯৮৩ থেকে ছ’বছর এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক ছিলেন। ২০০১-এ সিপিএমের জেলা কমিটিতে আসেন। ২০০৩ সালে পুরভোটে জিতে বর্ধমানের উপ-পুরপ্রধান হন। ২০০৮-এ ফের জিতে পুরপ্রধান হন। দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হন। ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্রে সিপিএম তাঁকে প্রার্থী করে। তৃণমূলের রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের কাছে হেরে যান আইনুল। বিধানসভা ভোটের মাস পাঁচেক পরেই দলের শৃঙ্খলাভঙ্গ ও অনৈতিক কাজের অভিযোগে তাঁকে বহিষ্কার করে সিপিএম। ২০১৯-এ লোকসভা ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি।
বাম শিবির সূত্রের খবর, সিপিএমে থেকে আইনুল তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন, এক সময় এ অভিযোগে জলঘোলা হয়েছিল সিপিএমের অন্দরে। আবার তৃণমূল সূত্রের দাবি, আইনুল সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পরে, তৃণমূলের একাংশের সঙ্গেই যোগাযোগ করেন। কিন্তু বর্ধমান শহর তৃণমূলের একাংশের আপত্তিতে তখন শাসক দল তাঁকে নেয়নি। শেষে বিজেপিতে যোগ দেন। আইনুলের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, বিজেপিতে বিশেষ প্রাধান্য পাচ্ছিলেন না তিনি। যে উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছিলেন, তা পূরণ হচ্ছিল না। এর পরে ফের তৃণমূলের এক বর্ষীয়ান নেতার মাধ্যমে উচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
এ দিন কলকাতায় আইনুল দলে যোগ দিয়েছেন শুনে বর্ধমান শহরের কিছু তৃণমূল কর্মীর দাবি, ‘‘এক সময়ে আমাদের লড়াই যাঁর বিরুদ্ধে ছিল, তাঁকে দলে মেনে নেওয়া তো সমস্যা বটেই।’’ আইনুল অবশ্য বলেন, ‘‘আমার কাউকে নিয়ে চলতে সমস্যা নেই। দলের সঙ্গে কথাও হয়েছে। দল যেমন দায়িত্ব দেবে, করব।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘বিজেপিতে যোগ দেওয়া ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।’’ পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণা, উন্নয়নের সমর্থক ও সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরোধী যে কাউকে দলে স্বাগত। দলের উচ্চ নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রকৃত কর্মীরা তা মেনে চলবেন।’’বিজেপির জেলা (সাংগঠনিক) সভাপতি সন্দীপ নন্দী বলেন, ‘‘ওঁর (আইনুল) সঙ্গে আমাদের কোনও মতবিরোধ হয়নি। হয়তো আমাদের বিচারধারার সঙ্গে নিজেকে মেলাতে না পেরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy