প্রতীকী চিত্র
রাতভর বৃষ্টির জেরে প্লাবিত দুর্গাপুরের নানা এলাকা। পরিস্থিতির সামাল দিতে গিয়ে শুক্রবার দিনভর দুর্গাপুর পুরসভার এক মেয়র পারিষদ-সহ তিন জন কাউন্সিলর বিক্ষোভের মুখে পড়েন। এই বিষয়টিকে সামনে রেখেই দুর্গাপুরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তর্জা। বিরোধীদের দাবি, এই ঘটনাতেই প্রমাণিত, চলতি পুরবোর্ড এবং তৃণমূল নেতৃত্বের প্রতি আস্থা নেই শহরবাসীর। তবে তৃণমূল নেতৃত্ব সে দাবিতে মোটেও আমল দেননি।২৮ নম্বর ওয়ার্ডে সগড়ভাঙা গ্রামের কাছে রেলের একটি স্টক ইয়ার্ড সংলগ্ন এলাকায় বাসিন্দাদের জলমগ্ন হওয়ার খবর পেয়ে এলাকায় যান স্থানীয় কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) অঙ্কিতা চৌধুরী। তাঁকে আটকে রেখে দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা কেন, সে প্রশ্ন তোলেন এলাকাবাসীর একাংশ। পরিস্থিতির সামাল দিতে হয় পুলিশকে। ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের স্টেট ডেয়ারি লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা স্থানীয় কাউন্সিলর সুনীল চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বেহাল নিকাশির প্রশ্নে রাস্তা অবরোধ করেন। এ ক্ষেত্রেও পুলিশ গিয়ে ফোনে কাউন্সিলরের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ধোবিঘাট এলাকায় বাসিন্দাদের খোঁজ নিতে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়েন ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শিপ্রা সরকার। বাসিন্দারা জানান, এলাকার উন্নয়নে কোনও কাজ হয়নি। রাস্তাঘাট, নিকাশি-সহ নাগরিক পরিষেবা বেহাল।এই পরিস্থিতিতে শহরে চর্চায় গত পুরভোটের প্রসঙ্গও। ঘটনাচক্রে, দুর্গাপুর পুরসভার ৪৩টি ওয়ার্ডেই তৃণমূলের কাউন্সিলর। সে প্রসঙ্গ তুলে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘‘কী ভাবে ৯৫ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে এই পুর-বোর্ড ক্ষমতায় এসেছিল, শহরের মানুষ তা ভোলেননি। তার উপরে রাস্তা, নিকাশি-সহ সব নাগরিক পরিষেবা বেহাল। আমাদের কর্মীরা সাধ্যমতো প্লাবিত এলাকায় কাজ করছেন।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘বর্তমান পুর-বোর্ড শহরবাসীর কথা ভাবে না। আমাদের দলের কর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দুর্গত মানুষদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে মানুষ এর শোধ নেবেন।’’
তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলেও নাগরিক পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভের কথা শোনা যাচ্ছে। দলেরই স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একাংশের মতে, দলের তরফে কাউন্সিলরদের স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মিশে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হলেও বহু কাউন্সিলরকেই এলাকায় দেখা যায় না। বরং, তাঁদের বেশি দেখা যায় সভা-সমিতি-অনুষ্ঠানে। অনেক ক্ষেত্রেই নানা কাজে কাউন্সিলরদের হাতের কাছে পাওয়া যায় না বলেও অভিযোগ করেছেন নানা এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাসিন্দাদের একাংশ। এই পরিস্থিতিতেই এই ঘেরাও-বিক্ষোভ ‘মানুষের ক্ষোভের প্রকাশ’ কি না, তা নিয়েজল্পনা ছড়িয়েছে। যদিও তৃণমূলের জেলার অন্যতম মুখপাত্র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দুর্গাপুরের নিকাশি ব্যবস্থা বাম আমল থেকেই অবহেলিত। এখন তার ফল ভোগ করতে হচ্ছে শহরবাসীকে। আমরা সমস্যা মেটাতে কাজ করছি। বিরোধীদের কাজই ভিত্তিহীন অভিযোগ করা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy