Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বৃষ্টিতে বিঘ্ন, দিনরাত এক করে প্রতিমা গড়া শিল্পীদের

সাধারণত কালী প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায় দুর্গাপুজোর আগে থেকেই। কাঠামোর মাটি লেপে তা শুকিয়ে নেওয়ার জন্য কয়েকদিন সময় লাগে। প্রতিমায় রঙের পোঁচ দেওয়া শুরু হয় সাধারণত কালীপুজোর সপ্তাহখানেক আগে থেকে।

শুকনো করা হচ্ছে প্রতিমার রং। শনিবার দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র

শুকনো করা হচ্ছে প্রতিমার রং। শনিবার দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৯ ০০:১০
Share: Save:

টানা প্রায় তিন দিনের বৃষ্টিতে হাত পড়েছিল মাথায়। শুক্রবার রাত থেকে আর বৃষ্টি না হওয়ায় স্বস্তির শ্বাস ফেলেছেন দুর্গাপুরের মৃৎশিল্পীরা। কার্যত যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কৃত্রিম পদ্ধতিতে প্রতিমা শুকিয়ে মণ্ডপে পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু করেছেন তাঁরা। শনিবার বেশ কিছু প্রতিমা উদ্যোক্তাদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল। দুর্যোগের কারণে মৃৎশিল্পীদের অনেকেই সে কথা রাখতে পারেননি। আজ, রবিবার সেগুলি যাতে দেওয়া যায় সে জন্য নাওয়া-খাওয়া ভুলে কাজ চলছে, জানান তাঁরা।

সাধারণত কালী প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায় দুর্গাপুজোর আগে থেকেই। কাঠামোর মাটি লেপে তা শুকিয়ে নেওয়ার জন্য কয়েকদিন সময় লাগে। প্রতিমায় রঙের পোঁচ দেওয়া শুরু হয় সাধারণত কালীপুজোর সপ্তাহখানেক আগে থেকে। এ বারও সে ভাবেই কাজ শুরু করেছিলেন মৃৎশিল্পীরা। কিন্তু শেষ পর্যায়ে বৃষ্টি সব হিসেব গোলমাল করে দেয়। টানা বৃষ্টিতে নষ্ট হয় প্রায় তিন দিন। শুক্রবার রাতে বৃষ্টি থামার পরেই তড়িঘড়ি কাজে নেমে পড়েছেন তাঁরা।

শনিবার সকালে প্রতিমা তৈরির বিভিন্ন কারখানায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, সব জায়গাতেই প্রতিমা শুকোনোর কাজ চলছে। কোথাও উনুনের আঁচে, কোথাও গ্যাসের জ্বালানি দিয়ে, কোথাও আবার বার্নারের শিখায় প্রতিমা শুকোচ্ছে। গ্যারাজ মোড়ের প্রতিমা শিল্পী ভূপেন দে জানান, শনিবার যাঁদের প্রতিমা দেওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘কী করব! প্রকৃতির উপরে নির্ভর করে কাজ করতে হয়। বার্নারের শিখায়, উনুনের আঁচ দিয়ে প্রতিমা শুকোনো হচ্ছে।’’ তিনি জানান, আজ, রবিবার প্রতিমাগুলি উদ্যোক্তাদের হাতে তুলে দিতে পারবেন।

ভিড়িঙ্গি মোড়ের শিল্পী প্রদীপ পাল জানান, ভিজে আবহাওয়ায় মাটি বা রং, কিছুই শুকোনো যায়নি। গ্যাস জ্বালিয়ে শুকোনোর কাজ চলছে। শনিবার প্রতিমা উদ্যোক্তাদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা রাখতে পারেননি। আজ, রবিবার সকাল ১০টা থেকে তা তুলে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

তবে এমন পরিস্থিতিতেও তিনি কথা রাখতে পেরেছেন বলে জানান বেনাচিতির জেকে পাল গলির শিল্পী অরুণ পাল। তিনি জানান, পরিস্থিতি আঁচ করে আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন। বৃষ্টি শুরুর আগেই কারিগরের সংখ্যা বাড়িয়ে, তাঁদের উপরি মজুরি দিয়ে, উনুনের আঁচ ও বার্নারের শিখায় কাজ শেষ করে ফেলেছিলেন। তাই নির্ধারিত সময়েই উদ্যোক্তাদের হাতে প্রতিমা তুলে দিতে পেরেছেন তিনি। অরুণবাবু বলেন, ‘‘কারিগরদের উপরি দিতে হওয়ায় লাভ কমেছে। তবে কথা রাখতে পেরেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE