Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কাজের সূত্রে পাওয়া তথ্যে টাকা লোপাট

পুলিশের দাবি, ধৃতদের জেরা করে তারা জেনেছে, তাদের মধ্যে কয়েকজন দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ক্রেডিট কার্ড বিভাগে এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছে।

উদ্ধার গাড়ি-বাইক। নিজস্ব চিত্র

উদ্ধার গাড়ি-বাইক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৯ ০০:৪৫
Share: Save:

কেউ কাজ করত ব্যাঙ্কের ক্রেডিট কার্ড বিতরণ বিভাগের এজেন্ট হিসেবে। কেউ গ্রাহক পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কল সেন্টারের কর্মী। কেউ আবার সাইবার ক্যাফের কর্মী। সেই কাজ ছেড়ে তারা এখন এটিএম কার্ডের তথ্য জেনে নিয়ে প্রতারণায় জড়িয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ। ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতানোর অভিযোগে ধৃত বারো জনকে গ্রেফতারের পরে এমন তথ্যই জানিয়েছে পুলিশ।

আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট জানায়, সপ্তাহ তিনেক ধরে নানা রাজ্যে অভিযান চালিয়ে সাইবার প্রতারণায় অভিযুক্ত চক্রটিকে ধরা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে টাকা, কয়েকটি এটিএম কার্ড, মোবাইল ফোন, দু’টি মোটরবাইক ও দু’টি গাড়ি। এডিসিপি (‌সেন্ট্রাল) সায়ক দাস জানান, অগস্ট-সেপ্টেম্বরে এটিএম কার্ডের তথ্য জেনে প্রতারণার অভিযোগ জমা পড়ে সাইবার অপরাধ দমন শাখায়। তার পরেই পুলিশ তদন্ত নেমে এই চক্রের হদিস পায়।

পুলিশ জানায়, ২৫ সেপ্টেম্বরে ঝাড়খণ্ড থেকে চার জনকে গ্রেফতার করেন সাইবার অপরাধ দমন শাখার আধিকারিকেরা। তাদের জেরা করে চক্রের পাণ্ডা হিসাবে চার জনের নাম মেলে। হরিয়ানার গুরুগ্রামের পুনীত কুমার, রোহিত বেরওয়া এবং দুর্গাপুরের রাজা রাম ও সঞ্জয় রাম নামে ওই চার জনকে একে-একে ধরা হয়। তাদের জেরা করে গোটা বিষয়টিতে জড়িত আরও চার জনের নাম পাওয়া যায়। বিহার ও ঝাড়খণ্ড থেকে তিন জনকে ধরা হয়। কুলটির নিয়ামতপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় আরতি গুপ্ত নামে এক মহিলাকে।

পুলিশের দাবি, ধৃতদের জেরা করে তারা জেনেছে, তাদের মধ্যে কয়েকজন দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ক্রেডিট কার্ড বিভাগে এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছে। কয়েকজন কল সেন্টারের কর্মী ছিল। বিভিন্ন ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের সঙ্গে পরিষেবা সংক্রান্ত বিষয়ে ফোনে কথা বলত। এ সব কাজের সুবাদে ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টের নানা তথ্য ও ফোন নম্বর হাতে পেয়েছিল তারা। সেগুলি কাজে লাগিয়ে ব্যাঙ্কের কর্মী পরিচয়ে ফোন করে গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলার ফাঁকে এটিএম কার্ডের পিন নম্বর-সহ নানা তথ্য জেনে নিত তারা। তার পরে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নিত।

এডিসিপি (‌সেন্ট্রাল) জানান, বছর কয়েক ধরেই এই দুষ্কর্ম চালাচ্ছিল অভিযুক্তেরা। হিন্দি ও ইংরেজিতে কথা বলতে পারদর্শী এই ধৃতেরা সহজে আলাপ জমাতেও পারে। সব সময় আলাদা ফোন নম্বর থেকে ফোন করত তারা। অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে তা নিজেদের অ্যাকাউন্টে জমা না করে পরিচিত অন্য কারও অ্যাকাউন্টে পাঠাত। পরে সেই টাকা তুলে নিত। ফলে, তারাই যে আর্থিক প্রতারণা করেছে, তার সরাসরি কোনও প্রমাণ থাকত না।

তদন্তকারীদের দাবি, ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া, মিহিজাম অঞ্চলে এই ধরনের অপরাধ চক্র রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কুলটির নিয়ামতপুর, বামনডিহা, রাধানগর এলাকাতেও একটি চক্র রয়েছে বলে খবর মিলেছে। নজর রাখা হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ATM Fraud Credit Card
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE