মাত্র পনেরো মাসের ব্যবধান। তার মধ্যেই দুর্গাপুরে মুখ থুবড়ে পড়ল বাম ও কংগ্রেস। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে শহরের দু’টি আসনই তৃণমূলের হাত থেকে জিতে নিয়েছিল তারা। অথচ, এ বার পুরভোটে তাদের ফল শোচনীয়। এমনকী, বিজেপি-র থেকেও পিছিয়ে পড়েছে তারা।
প্রকাশ্যে আসন সমঝোতার কথা ঘোষণা না করলেও এ বার দুর্গাপুরে বামেরা ৩৪ এবং কংগ্রেস ৭টি ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। তারা সম্মিলিত ভাবে ভোট পেয়েছে ৪৪,৪৬৮টি। যা বিজেপি-র থেকেও ১১৭৯টি কম। অথচ, বছরখানেক আগেই বিধানসভা ভোটে বাম-কংগ্রেস মিলে পেয়েছিল ১,৬৭,৭৩১টি ভোট। তারা এগিয়ে ছিল মোট ৪০টি ওয়ার্ডে।
কেন এমন হল? নেতা-কর্মীদের একাংশের দাবি, বিধানসভা ভোটের মতো এ বার দু’পক্ষের সমঝোতা জমাট বাঁধেনি। কোন ওয়ার্ডে কে প্রার্থী দেবে, সে নিয়ে গোড়াতেই টানাপড়েন হয়। পরে তা মিটলেও শহরে সে ভাবে যৌথ প্রচার দেখা যায়নি। ফলে, মানুষ তাঁদের উপরে এ বার আর আস্থা রাখতে পারেননি বলে মনে করছে দু’দলের একাংশ।
সিটুর সঙ্গে ‘শিল্পরক্ষা’র লড়াইয়ে পাশে থাকলেও কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে মতানৈক্যের জেরে এ বার আইএনটিইউসি-ও তৃণমূলের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানায়। সেটিও অন্যতম কারণ হয়েছে বলে বিরোধীদের ধারণা। বামেদের প্রচারেও এ বার ঘাটতি ছিল বলে মানছেন নেতারা। শহরের সব জায়গায় মানুষের কাছে নির্বাচনী ইস্তাহারের প্রতিশ্রুতিও পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে দলের ওই অংশের দাবি।
ভোটের আগে বহিরাগতদের রুখতে প্রতিরোধের ডাক দিয়েছিলেন সিপিএমের রাজ্য নেতারা। কিন্তু ভোটের দিন বিজেপি শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগে পথে নামলেও সিপিএমের স্থানীয় নেতাদের দেখা যায়নি। এ ভাবে প্রতিরোধের রাস্তায় যাওয়ায় কিছু মানুষের সমর্থন যে বিজেপি পেয়েছে, তা ভোটের ফলেই প্রমাণ বলে মনে করছেন সিপিএমের নিচুতলার কর্মীদের অনেকে। যদিও দলের জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের বক্তব্য, ‘‘ভোটের নামে গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে। মানুষ গণতান্ত্রিক উপায়ে শীঘ্র জবাব দেবেন।’’ একই দাবি কংগ্রেস নেতাদেরও।
আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও পুলিশ-প্রশাসন অবাধ ভোট করাতে পারেনি দাবি করে সিপিএম হাইকোর্টে মামলা করেছে। আজ, শুক্রবার তার শুনানি হওয়ার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy