রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম বর্ধমানে আসা নিয়ে এক নতুন তথ্য সামনে এনেছে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের বর্ধমান শাখা। রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে সংস্থার সভাপতি সদানন্দ দাস জানান, এত দিন সকলেই জানতেন রবীন্দ্রনাথ প্রথম এ শহরে আসেন ১৯৩৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি, দেবপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে। ওই দিন কবিকে সংবর্ধনাও দেন তৎকালীন মহারাজ বিজয় চাঁদ মহতাব। কিন্তু তার আগেও কবি এসেছিলেন এ শহরে।
সম্প্রতি বঙ্গীয় পরিষদের আলোচনায় উঠে আসে, ১৯০৬ সালের ২৯ অক্টোবর নতুনগঞ্জ ডাঙাপাড়ায় শান্তিনিকেতনের শিক্ষক অসুস্থ ভুপেন্দ্রনাথ সান্যালকে দেখতে এসেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। তাঁদের দাবি, প্রশান্ত পালের লেখা ‘রবি জীবনী’তে (পঞ্চম খণ্ড) এই তথ্যের উল্লেখ আছে। সেখানে ভূপেন্দ্রবাবু লিখেছেন, ‘আমি যখন মৃত্যু মুখে শায়িত, নাড়ি ছাড়িয়া গিয়াছে, চিকিৎসকেরা আশা ত্যাগ করিয়াছেন, তখন আমার অবস্থা বিধুশেখর শাস্ত্রীর মুখে শুনে তিনি আমাকে দেখিবার জন্য বর্ধমানে আমাদের ক্ষুদ্র বাসগৃহে আসিয়া উপস্থিত হন। যাইবার সময় আমার জননীকে বলিয়া গেলেন, অর্থের জন্য যেন চিকিতসার ত্রুটি না হয়। যাহা প্রয়োজন হইবে আমি ব্যবস্থা করিব। যাইবার সময় কিছু টাকাও রাখিয়া গেলেন।’ ১৩১৩ সালে দীনেশচন্দ্র সেনকেও তিনি এ বিষয়ে লেখেন। এ ছাঢ়া হীরেন্দ্রনাথ দত্ত লিখিত ‘শান্তিনিকেতনের এক যুগ’ বইয়েও রবীন্দ্রনাথের ভূপেন্দ্রবাবুরে দেখতে বর্ধমানে যাওয়ার উল্লেখ রয়েছে।
ওই সংস্থার সদস্যেরা জানান, ভূপেন্দ্রনাথ সান্যালের জন্ম ১৮৭৭ সালে নদিয়ার সাধনাপাড়ায়। পরে বর্ধমানে আসেন তিনি। যোগ শিক্ষায় পারদর্শী ছিলেন ভূপেন্দ্রবাবু। এখনও তাঁর উত্তরসূরীরা নতুনগঞ্জের ডাঙাপাড়ায় থাকেন। তাঁদেরই এক জন মনোজকুমার সান্যাল জানান, তাঁর বাবা প্রসাদদাস সান্যালের মুখে তিনি শুনেছিলেন রবীন্দ্রনাথের এই বাড়িতে আসার কথা। কবির স্মরণে এলাকায় রবীন্দ্র সরণি নামে একটি রাস্তাও রয়েছে।
ওই বাড়িটিতে গিয়ে দেখা যায় পুরনো কিছুই অবশিষ্ট নেই। পুরনো দালানে নতুন প্লাস্টার পড়েছে। পাশে রয়েছে খড়ের চালাঘর। মনোজবাবু বলেন, ‘‘আমাদের এই বাড়ির চৌহদ্দিতে রবীন্দ্রনাথ এসেছিলেন বলে শুনেছি। স্মৃতি কিছু নেই অবশ্য।’’ বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ নীরদবরন সরকারও বলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথ নতুনগঞ্জের সান্যাল বাড়িতে এসেছিলেন এমন তথ্য রয়েছে বর্ধমানে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy