Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

জামুড়িয়ায় কুষ্ঠ কলোনিতে কল নেই, বেহাল বাড়ির ছাদও

প্রায় চার দশক আগে তৈরি হয়েছিল এই কলোনি। কিন্তু সেই কলোনিতেই এখন নানা সমস্যা। এমনই অভিযোগ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের জামুড়িয়া চাকদোলা মোড়ের কাছে তৈরি হওয়া কুষ্ঠকলোনির বাসিন্দাদের।

জামুড়িয়ার চাকদোলা মোড়ের কাছে কুষ্ঠ কলোনি। নিজস্ব চিত্র

জামুড়িয়ার চাকদোলা মোড়ের কাছে কুষ্ঠ কলোনি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৩০
Share: Save:

প্রায় চার দশক আগে তৈরি হয়েছিল এই কলোনি। কিন্তু সেই কলোনিতেই এখন নানা সমস্যা। এমনই অভিযোগ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের জামুড়িয়া চাকদোলা মোড়ের কাছে তৈরি হওয়া কুষ্ঠকলোনির বাসিন্দাদের। তাঁদের অভিযোগ, এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে বার বার অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, রাজ্য সরকার ইসিএলের সহযোগিতায় ১৯৮১ সালে কুষ্ঠরোগীদের জন্য এই কলোনিটি তৈরি করেছিল। বর্তমানে এখানে ১০টি পরিবারের বাস। স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, এই দশটি পরিবারের মধ্যে দু’টি পরিবারের ভিক্ষাবৃত্তি করে দিন চলে। বাকিরা সবাই দিনমজুরির সঙ্গে যুক্ত।

তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এক সময় কলোনিরা চার দিক তার দিয়ে ঘেরা ছিল। তিন দিকের তার খুলে নিয়ে গিয়েছে চোরের দল। কলোনি চত্বরে আটটি ‘সোলার লাইট’ বসানো হলেও জ্বলে না আলো। শুধু তাই নয়, কলোনিতে একটি চাপাকল বিকল পড়ে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জলের জন্য ভরসা, অন্য একটি চাপাকল ও কুয়ো। অভিযোগ, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর জল সরবরাহের কোনও ব্যবস্থা করেনি।

এখানেই শেষ নয়, সমস্যা রয়েছে কলোনির বাড়িগুলিতেও। এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, প্রায় প্রতিটি বাড়িই সংস্কারের অভাবে জীর্ণ। ছাদ চুঁইয়ে পড়ছে জল। কোনও রকমে ত্রিপল দিয়ে ছিদ্রগুলি ঢাকা হয়েছে। তাতেও আটকায় না জল। বাসিন্দারা জানান, ইসিএল এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করত। কিন্তু কিছু দিন আগে ঝড়ে তার ছিঁড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎহীন অবস্থায় দিন কাটাতে হচ্ছে।

আরও অভিযোগ, কলোনির অদূরে ইটভাটা আছে। সেই ভাটার জন্য মাটি কাটা হচ্ছে কলোনির অদূরেই। স্থানীয় বাসিন্দা রঘু কোল, রাধারানি রায়দের ক্ষোভ, ‘‘পাশেই একটি পুকুর রয়েছে। কিন্তু সেটি ভাটার দখলে। ভাটা চালু থাকলে পাম্পের সাহায্যে জল টেনে নেওয়া হয়। ফলে পুকুরও ব্যবহার করতে পারছেন না কলোনির বাসিন্দারা। এর জেরে জল নিয়ে সমস্যা বেড়েই চলেছে।’’

স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামলাল রায় জানান, কলোনির বাইরে জঙ্গলে ঘেরা এলাকায় দু’টি শৌচাগার তৈরি করেছিল স্থানীয় পঞ্চায়েত। কিন্তু সে দু’টি জলের অভাবে এবং পোকামাকড়ের ভয়ে প্রায় ব্যবহারই করা যায় না। ফলে শৌচকর্ম সারতে হচ্ছে মাঠে। শুধু তাই নয়, একটি কমিউনিটি সেন্টার তৈরি করা হলেও আলোর অভাবে রাতে তা ব্যবহার করা যায় না।

এলাকাবাসীর ক্ষোভ, প্রতি বার নির্বাচনের সময়ে কলোনির উন্নতির জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান নানা রাজনৈতিক দলের নেতা, কর্মীরা। কিন্তু ভোট মিটলেই কাজের কাজ আর কিছুই হয় না। যদিও বিডিও (জামুড়িয়া) অনুপম চক্রবতী বলেন, “কলোনির বাসিন্দারা পদ্ধতি মেনে আমার কাছে লিখিত ভাবে সমস্যার কথা জানালে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Leprosy Jamuria Water
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE