Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

রাত নামলেই বালির গাড়ির দাপট রাস্তায়

এলাকাবাসীর দাবি, আগে ধরপাকড়-অভিযান চললেও উৎসবের মরসুমে এ দিকে নজরদারি একটু শিথিল হতেই শুরু হয়েছে দেদার পাচার। বিভিন্ন এলাকায় এই কারবারে জড়িত রয়েছে বেশ কিছু দালাল।

এসটিকেকে রোডে বালির ট্রাক। নিজস্ব চিত্র

এসটিকেকে রোডে বালির ট্রাক। নিজস্ব চিত্র

কেদারনাথ ভট্টাচার্য
কালনা শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৫১
Share: Save:

রাত একটু ঘনালেই পরপর ছুটে চলেছে ট্রাক, ডাম্পার, ট্রাক্টর। ভোর অবধি বালি বোঝাই এই সব গাড়ির দাপট চলে এসটিকেকে রোডে, অভিযোগ কালনার বাসিন্দাদের। কিছু দিন আগেই বালি বোঝাই গাড়ির ছবি তুলতে গিয়ে হুমকির মুখে পড়তে হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কর্মীরা। এক জনকে গ্রেফতারও করা হয়। পূর্ব সাতগাছিয়া এলাকা থেকে মাটি পাচারের অভিযোগেও ধরা হয়েছে কয়েকজনকে। তার পরেও বালি পাচার বন্ধ হচ্ছে না বলে অভিযোগ।

এলাকাবাসীর দাবি, আগে ধরপাকড়-অভিযান চললেও উৎসবের মরসুমে এ দিকে নজরদারি একটু শিথিল হতেই শুরু হয়েছে দেদার পাচার। বিভিন্ন এলাকায় এই কারবারে জড়িত রয়েছে বেশ কিছু দালাল। তারা প্রশাসনের একাংশের মদতে নিজের এলাকা দিয়ে রাতভর অতিরিক্ত বালি বোঝাই ট্রাক, ডাম্পার, ট্রাক্টর পার করাচ্ছে। জেলার বিভিন্ন খাদান থেকে আসা বালির গাড়িগুলি ভোরের আলো ফোটার আগেই পৌঁছে যাচ্ছে গন্তব্যে।

সকালে কালনার বৈদ্যপুর মোড় থেকে এসটিকেকে রোড ধরে এগিয়ে গেলেই দেখা যায়, বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি থেকে বালি নামানো হচ্ছে। এই সময়ে ট্রাক-ডাম্পার থেকে লাল বালি নিয়ে যেতে দেখা যায়। দুপুর পর্যন্ত ট্রাক্টরে করে নিয়ে যাওয়া হয় সাদা বালি। বাসিন্দারা জানান, মাঝে প্রশাসনিক সক্রিয়তায় বালির কারবার কিছুটা বন্ধ হলেও ফের তা রমরমিয়ে শুরু হয়েছে।

এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, এক ট্রাক্টর সাদা বালি বেআইনি ভাবে পরিবহণ করে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছে দিতে পারলেই এক হাজার থেকে বারোশো টাকা মুনাফা। কয়েকজন এই কারবারে গাড়ি চালাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে চলা কারবার বন্ধ না হলেও খানিকটা ধরন বদলেছে। কালনার বাসিন্দা মৃণাল কর্মকারের অভিযোগ, ‘‘প্রশাসনের কর্তারা যখন সক্রিয় হন, তখন কিছুটা ভাটা পড়ে কারবারে। কিন্তু কয়েক দিন পরে আবার তা শুরু হয়ে যায়। এখন কারবারিরা ট্রাক, ডাম্পার-সহ বিভিন্ন যানবাহনে পলিথিন দিয়ে ঢেকে বালি নিয়ে যাচ্ছে, যাতে সাধারণ মানুষ বুঝতে না পারেন।’’ পূর্বস্থলীর বাসিন্দা গোপাল সরকারের আবার অভিযোগ। ‘‘সরষের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে ভূত। প্রশাসনের উচিত, এই কারবারের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করা।’’

পূর্বস্থলী থানার পুলিশ অবশ্য জানায়, সম্প্রতি বালির কারবারে জড়িত অভিযোগে সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কালনার মহকুমাশাসক নীতিশ ঢালি বলেন, ‘‘পরিবহণ দফতর অভিযান চালাতে শুরু করেছে। কোন কোন সময়ে বেআইনি ভাবে পরিবহণ চলছে, সে নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sand Smuggling Warning
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE