Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দুই কেন্দ্রে কংগ্রেস কী করবে

বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রটি থেকে ২০১৪-র লোকসভা ভোটে কংগ্রেস প্রার্থী প্রদীপ অগস্তি মাত্র ৪৪ হাজার ৩৫৫টি ভোট পেয়েছিলেন।

সুব্রত সীট ও নীলোৎপল রায়চৌধুরী
দুর্গাপুর ও রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৯ ০১:০৮
Share: Save:

তৃণমূল, সিপিএমের প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে জোরকদমে। পশ্চিম বর্ধমানের এক আসনে প্রার্থীর সমর্থনে ও অন্য আসনে প্রার্থী ঘোষণা না হলেও দেওয়াল লেখা, প্রচার শুরু করেছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের অবস্থান কী হবে, তা নিয়ে জল্পনা দলের অন্দরেই।

বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রটি থেকে ২০১৪-র লোকসভা ভোটে কংগ্রেস প্রার্থী প্রদীপ অগস্তি মাত্র ৪৪ হাজার ৩৫৫টি ভোট পেয়েছিলেন। এ বারেও পাশে বাম না থাকায় সেই পরিস্থিতি হবে না তো, আশঙ্কায় কংগ্রেস কর্মীদের একাংশ। যদিও জেলার কংগ্রেস নেতাদের দাবি, নিজের জোরেই দল ভাল ফল করবে।

জোট না হওয়ায় বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের নানা জায়গার কংগ্রেস কর্মীরা খানিকটা হলেও ‘আশঙ্কা’র কথা শুনিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন কংগ্রেস কর্মীর কথায়, ‘‘আশা ছিল, বামেদের সঙ্গে জোট হবে। তা হলে গত বারের ভোটের ফল এ বার এড়ানো যেত।’’ তাঁদের যুক্তি, আসন সমঝোতা বা জোট, যাইই হোক না কেন, তা বাস্তবায়িত হলে এবং কংগ্রেস প্রার্থী দিলে তাঁর বাম-ভোট হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। এ ক্ষেত্রে তাঁদের উদাহরণ, দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রটি। তাঁদের মতে, ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে এই কেন্দ্র থেকে ‘কংগ্রেস প্রার্থী’ বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের লক্ষাধিক ভোট পেয়ে জেতার অন্যতম কারণ ছিল, বাম-ভোট। যদিও কংগ্রেসের অন্য একটি সূত্রের মতে, বিশ্বনাথবাবু তৃণমূল ভোটারদের একাংশেরও সমর্থন পেয়েছিলেন।

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কিন্তু লোকসভা ভোটে একার জোরে এই কেন্দ্রে লড়াই করার মতো সাংগঠনিক জোর আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস কর্মীদেরই একাংশ। যদিও দলের জেলা সভাপতি তরুণ রায় বলেন, ‘‘কংগ্রেস আগের বারের চেয়ে ভাল ফল করবে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে। সে বার মোদী-ঝড়ে ভোটারদের অনেকে বিভ্রান্ত হয়েছিলেন। এ বার সেটা হবে না।’’

জেলার অন্য কেন্দ্র আসানসোল। সেখানে ভোট-ময়দানে রয়েছেন বিজেপির বাবুল সুপ্রিয়, তৃণমূলের মুনমুন সেনের মতো ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থীরা। রয়েছেন সিপিএমের পোড়খাওয়া শ্রমিক নেতা গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়ও।

বামফ্রন্ট প্রাথমিক ভাবে ২৫টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল। সেই তালিকায় ছিল না আসানসোলের নাম। এই আসনে কংগ্রেস শেষবার ১৯৮৪ সালে জিতেছিল। তবুও এ বার আশা ছিল আসানসোলে কংগ্রেস প্রার্থীই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, মনে করছিলেন জেলার সিপিএম ও কংগ্রেস কর্মীদের একাংশ। কিন্তু, তা হয়নি। সিপিএম গৌরাঙ্গবাবুকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে।

এই মুহূর্তে, আগামী সোমবার দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হবে বলে আশা কংগ্রেস নেতা দেবেশ চক্রবর্তী, দলের জেলা সভাপতি তরুণবাবুদের। তাঁরা জানান, জেলা কমিটি তিন জনের নাম পাঠিয়েছে। এ ছাড়া আরও চার জন প্রার্থী হওয়ার জন্য জীবনপঞ্জি (বায়োডাটা) প্রদেশ নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়েছেন। এক জন শারীরিক অসুস্থতার কারণে নাম প্রত্যাহার করেছেন।

গত লোকসভা ভোটে আসানসোল কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী ইন্দ্রানী মিশ্রের দাবি, ‘‘জোট যখন হয়নি, তখন কংগ্রেসের নিজের জোরেই লড়াই করা উচিত।’’ সেই লড়াইয়ের মাধ্যমেই আসানসোলে ‘কংগ্রেস আছে’, তা ফের প্রমাণ করা যাবে বলে মনে করছেন কর্মীদের একাংশ। প্রদেশ কংগ্রেস সদস্য বিশ্বনাথ যাদবও বলেন, ‘‘কংগ্রেস লড়াইয়ের মাঠে আছে, তা প্রমাণ করার তাগিদ থেকেই দলীয় কর্মীরা লড়াই করতে চান। দল প্রার্থী ঘোষণা করলে তাঁরা খুশি হবেন। তা ছাড়া হতাশা বাড়ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE