Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

খনি নিয়ে শুনানি, ক্ষোভ প্রকাশ এলাকাবাসীর

নতুন একটি খোলামুখ কয়লাখনি খনন করতে উদ্যোগী হল রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা সংস্থা ভারত কোকিং কোল লিমিটেড (বিসিসিএল)। এ জন্য রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে ছাড়পত্র চেয়ে আবেদন করেছেন খনি কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৮ ১৪:১৮
Share: Save:

নতুন একটি খোলামুখ কয়লাখনি খনন করতে উদ্যোগী হল রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা সংস্থা ভারত কোকিং কোল লিমিটেড (বিসিসিএল)। এ জন্য রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে ছাড়পত্র চেয়ে আবেদন করেছেন খনি কর্তৃপক্ষ। নিয়ম অনুযায়ী ছাড়পত্র পাওয়ার আগে এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে একটি জনশুনানির আয়োজন করতে হয়। শুক্রবার এই জনশুনানি হয়েছে। এ দিন শুনানিতে উপস্থিত এলাকার বাসিন্দারা বিসিসিএল কর্তৃপক্ষের কাছে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত একগুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছেন। একই সঙ্গে, বিসিসিএল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অতীতে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেও তা মানা না হয়নি বলেও অভিযোগ করেছেন বাসিন্দারা। জনশুনানির শেষে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিক শৌভিক গঙ্গোপাধ্যায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

বিসিসিএল কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, সংস্থার চাঁচ ভিক্টোরিয়া এরিয়ার ১৭ নম্বর ক্লাস্টারের অন্তর্গত কুলটির দামাগড়িয়ায় এই খোলামুখ খনিটি খোলার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘কল্যাণেশ্বরী’ খোলামুখ খনি প্রকল্প। সংস্থার প্রজেক্ট ম্যানেজার নির্ঝর চক্রবর্তী জানান, প্রায় সাড়ে চার হাজার একর জুড়ে তৈরি হবে খনি। ভূগর্ভে সঞ্চিত আছে প্রায় ১৩৫ মিলিয়ন টন কয়লা। আগামী ৩৫ বছরের মধ্যে এই কয়লা তুলে নেওয়া হবে। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে এ জন্য ছাড়পত্র চাওয়া হয়েছে। খনি চালু হলে এলাকার ৮টি মৌজার কয়েক হাজার বাসিন্দা কী ভাবে শব্দ, বায়ু ও জল দূষণের শিকার হবেন সে বিষয়ে ইতিমধ্যে বিসিসিএল কর্তৃপক্ষের তরফে বিস্তারিত খোঁজ খবর করা হয়েছে। এই দূষণ কী ভাবে রোধ করা সম্ভব, সে বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্টও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদে জমা করা হয়েছে।

পর্ষদ ও বিসিসিএল কর্তৃপক্ষের দাবি, বায়ু দূষণ রোধ করতে ঢাকা লরিতে কয়লা পরিবহণ, কয়লার লরি যাতায়াতের রাস্তায় জল ছেটানোর ব্যবস্থা ও ধুলো-ধোঁয়া আটকাতে বনসৃজনের ব্যবস্থা করা হবে। শব্দ দূষণ রোধের ক্ষেত্রে শব্দ নিরোধক যন্ত্রের ব্যবহার করা হবে। নিয়মিত শব্দের কম্পাঙ্ক মাপা হবে। জল দূষণ রোধে পুকুর খনন করে নিয়মিত সংস্কার করা হবে, সামাজিক দায়িত্বপালন তহবিল থেকে সমগ্র জনবসতি এলাকায় পরিস্রুত জল সরবরাহ করা হবে। সেই সঙ্গে জলের গুণমান বজায় রাখতে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হবে।

তবে বাসিন্দাদের অভিযোগ, এর আগে এলাকায় আরও কয়েকটি খনি খোলার আগে বিসিসিএল কর্তৃপক্ষের তরফে ঠিক এই এই প্রতিশ্রুতিগুলি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনও প্রতিশ্রুতিই কর্তৃপক্ষ রাখেননি। যেমন, অভিযোগ উঠেছে কয়লা খননের সময় বিস্ফোরণ ঘটানোয় এলাকা ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এলাকার জলস্তর নীচে নেমে যাচ্ছে। অথচ জল সরবরাহ করা হচ্ছে না। খনি খোঁড়ার ফলে বাস্তুহারাদের কোনও সামাজিক দায় দায়িত্ব পালন হয় না। কোনও এলাকাতেই সবুজায়ন করা হয়নি। জমি অধিগ্রহণের পরেও জমিদাতারা অনেকেই চাকরি পাননি। বাসিন্দাদের এই অভিযোগগুলি বিবেচনা করে দেখা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বিসিসিএল-এর জিএম বিসি নায়েক ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিক শৌভিক গঙ্গোপাধ্যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coal Mine BCC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE