Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ছাত্রীর বিয়ে রুখতে পাত্রের বাড়িতে বিডিও

বিডিও জানান, এ দিন ফোনে নাবালিকা বিয়ের খবরটি পেলেও বিশদ তথ্য পাননি। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, শরঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী কয়েকদিন ধরে গ্রামে নেই। তিনি কৈয়ড় পঞ্চায়েতের চিন্তামণিপুর গ্রামে মেয়েটির বাড়িতে দৌড়ন।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খণ্ডঘোষ শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:১০
Share: Save:

লুকিয়ে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে বান্ধবীর, প্রশাসনকে জানিয়েছিল কন্যাশ্রী ক্লাবের এক সদস্য। শনিবার বিকেলে খণ্ডঘোষের বিডিও-কে ফোনে জানানো হয়, এ দিনই বিয়ে দেওয়ার তোড়জো়ড় চলছে। এর পরেই কেটে গিয়েছিল ফোনটি। নানা সূত্রে খোঁজ নিয়ে নাবালিকার বাড়ি গিয়ে বিডিও কমলকান্তি তলাপাত্র দেখেন, সেখানে কেউ নেই। শেষে খোঁজখবর করে পাত্রের বাড়িতে গিয়ে বিয়ে আটকানোর ব্যবস্থা করলেন তিনি।

বিডিও জানান, এ দিন ফোনে নাবালিকা বিয়ের খবরটি পেলেও বিশদ তথ্য পাননি। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, শরঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী কয়েকদিন ধরে গ্রামে নেই। তিনি কৈয়ড় পঞ্চায়েতের চিন্তামণিপুর গ্রামে মেয়েটির বাড়িতে দৌড়ন। সঙ্গে ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসিতকুমার বাগদি, পঞ্চায়েতের কর্তা ও চাইল্ডলাইনের কর্মীদের। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ওই ছাত্রী নেই। বাড়িতে বিয়ের আয়োজনও নেই। সেখান থেকে ফেরার সময়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, ওই ছাত্রীকে রায়নার পলাশন গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে ‘লুকিয়ে’ রাখা হয়েছে। সেখান থেকে বছর ষোলোর মেয়েটির বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে।

বিডিও জানান, এরই মধ্যে অন্য একটি সূত্রে জানতে পারেন, খণ্ডঘোষের বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের বোঁয়াইচণ্ডী গ্রামে ওই নাবালিকার বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তা জানার পরেই গাড়িতে তাঁরা পাত্রের বাড়ি পৌঁছে যান। সেখানে ঢুকে দেখেন, বিয়ের যাবতীয় আয়োজন সারা। বাড়ির ভিতরে প্যান্ডেল হয়েছে। পাশে বাঁধা ম্যারাপে রান্নার আয়োজন হচ্ছে।

প্রশাসনের কর্তাদের দেখে পাত্রের বাবা ছুটে আসেন। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসিতবাবু বলেন, ‘‘নাবলিকার সঙ্গে ছেলের বিয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করছিলেন না বাবা। বিডিও চেপে ধরতে স্বীকার করেন।’’ তাঁরা জানান, বছর পঁচিশের পাত্রও অন্যায় মেনে নিয়ে মুচলেকা দেন। তাঁরা লিখিত ভাবে চাইল্ডলাইনকে জানিয়েছেন, নাবলিকার সঙ্গে বিয়ে দেবেন না।

এর পরে প্রশাসনের কর্তারা ফের যান চিন্তামনিপুর গ্রামে। তখন সব ঘটনা স্বীকার করেন মেয়েটির বাবা। তিনি প্রশাসনকে জানান, নাবালিকা অবস্থায় মেয়ের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেই তাঁরা মেয়েকে লুকিয়ে রেখেছিলেন। মুচলেকা দিয়ে জানান, এই ভুল আর করবেন না। ১৮ বছর বয়সের পরেই মেয়ের বিয়ে দেবেন।

সন্ধ্যায় বিডিও বলেন, ‘‘নাবালিকার বিয়ে আটকাতে পেরে ভাল লাগছে। কিন্তু, সরকারের নিয়ম জানার পরেও দু’টি পরিবারের লুকিয়ে বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা দেখে চিন্তা হচ্ছে। কন্যাশ্রী ক্লাবগুলিকে আরও সক্রিয় করতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Marriage Student Girl BDO
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE