আলাপ: পড়ুয়াদের সঙ্গে বিডিও। নিজস্ব চিত্র
হাতের নাগালেই ইতিহাস। তবে নতুন প্রজন্মের অনেকেই তার খোঁজ রাখে না। এ বার স্কুল পড়ুয়াদের ঐতিহ্য চেনাতে ও তার গুরুত্ব বোঝাতে উদ্যোগী হল প্রশাসন।
সোমবার এলাকার আটটি স্কুলের ১২০ জন পড়ুয়াকে সাইকেলে ২৬ কিলোমিটার ঘুরিয়ে পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও বিডিও দেখালেন নানা ঐতিহাসিক নিদর্শন। ‘শিকড়কে চেনো’ নামে ওই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন রাজ্যের প্রাণিসম্পদ দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।
চৈতন্যদেবের বাল্যশিক্ষার স্থান থেকে শুরু করে পণ্ডিত বাসুদেব সার্বভৌমর মন্দির রয়েছে এই ব্লকে। জাহান্নগরে রয়েছে কপিল মুনির আশ্রম। অষ্টাদশ শতাব্দীর জাহান আলি প্রতিষ্ঠিত মসজিদও রয়েছে সুলুন্টুতে। দোগাছিয়ায় রয়েছে টেরাকোটার কাজের দশভুজা মন্দির। এ ছাড়াও বৃন্দাবন দাসের পাটবাড়ি, ব্রহ্মাণী মন্দির-সহ আরও বহু স্মৃতি বিজড়িত জিনিস রয়েছে এই ব্লকে। প্রতি বছর বিদেশিরাও আসেন এই সব স্থান দেখতে। অথচ স্থানীয় ছেলেমেয়েদের আগ্রহ সে ভাবে দেখা যায় না। এরই সমাধানে এগিয়ে আসে প্রশাসন।
ব্লক এবং পঞ্চায়েত সমিতির তরফে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বেছে নেওয়া হয়। এ দিন সকালে বিডিও পুষ্পেন চট্টোপাধ্যায় এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিক নিজেরাই সাইকেল চালিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে পৌঁছন দ্রষ্টব্য স্থানগুলিতে। চৈতন্যদেব কীভাবে পূর্বস্থলী আসতেন, কোথায় পড়াশোনা করতেন, পথে তার বিশ্রাম নেওয়ার জায়গা কোথায় ছিল দেখানো হয়। প্রতিটি নির্মাণের ঐতিহাসিক গুরুত্ব, সময়কাল, সে সব খুঁটিনাটিও বোঝান কর্তারা। তবে রোদের জন্য দুপুরের মধ্যে সাইকেল মিছিল শেষ করে ছাত্রছাত্রীদেরই নিয়ে আসা ব্লক অফিসে। সেখানে ছবি, ভিডিও দেখানো হয়। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে ছিলেন শ্রীরামপুর-পূর্বস্থলী সংস্কৃতি মণ্ডলের সদস্যরাও। মন্ত্রী স্বপনবাবু বলেন, ‘‘এমন উদ্যোগ খুব কাজে আসবে।’ বিডিও জানান, গরমে ঘুরতে কষ্ট হয়েছে ঠিকই তবে ছাত্রছাত্রীরা বিষয়টি উপভোগ করেছে। পড়ুয়া বিজন বালা, রুবিনা খাতুনেরাও বলে, ‘‘পাঠ্যবই পরে এত কিছু জানতে পারিনি। আজ এখানে যা জানলাম।’’
অনুষ্ঠান শেষে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে একটি কেরিয়ার কাউন্সেলিং অনুষ্ঠান হয়। বিক্রমশিলা এডুকেশন রিসোর্স সোসাইটির বিশেষজ্ঞরা জানান, কীভাবে দক্ষতা অনুযায়ী ভবিষ্যতে নিজেদের নানা পেশায় মেলে ধরা যায় তা শেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপবাবু বলেন, ‘‘চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ারিং, ডাক্তারি ছাড়াও অজস্র পেশা রয়েছে যেখানে নিজেদের প্রতিভা বিকাশ করতে পারে ছাত্রছাত্রীরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy