Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

বাইরে শান্তি, ভিতরে ‘বাধা’

শনিবার তৃণমূলের মহিলা বাহিনী বিরোধীদের মনোনয়ন দিতে অফিসে ঢুকতে বাধা দিয়েছিল বলে অভিযোগ। বিজেপির উপরে হামলার অভিযোগও উঠেছিল।

ব্যারিকেডে আটক। নিজস্ব চিত্র

ব্যারিকেডে আটক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৮ ০২:১২
Share: Save:

সকাল থেকে ব্যারিকেডে ঘেরা এলাকা। পুলিশে ছয়লাপ চত্বর। বাইরে থেকে লোকজন ঢুকতে গেলে আগে জিজ্ঞাসাবাদ করে ও নথিপত্র দেখে ছাড়া হচ্ছে। সোমবার সকাল থেকে দুর্গাপুর মহকুমাশাসকের দফতরে মনোনয়ন প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে ছবিটা ছিল এই রকমই। তবে তা সত্ত্বেও বাধা দেওয়া, মনোনয়নপত্র ছিঁড়ে ফেলা, প্রার্থীকে মারধরের মতো ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের।

শনিবার তৃণমূলের মহিলা বাহিনী বিরোধীদের মনোনয়ন দিতে অফিসে ঢুকতে বাধা দিয়েছিল বলে অভিযোগ। বিজেপির উপরে হামলার অভিযোগও উঠেছিল। এ দিন সকাল থেকে অবশ্য এলাকায় কড়া পুলিশি পাহারা ছিল। তৃণমূলের কয়েকজন ভিতরে ঢুকতে দেওয়ার দাবি জানালে পুলিশ আটকে দেয়। সে নিয়ে বচসাও বাধে। পরে ব্যারিকেডের বাইরেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে অপেক্ষা করেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা।

শাসক-বিরোধী, সব পক্ষের প্রার্থী ও প্রস্তাবকেরা ভবনের তিন তলায় মহকুমাশাসকের দফতরে মনোনয়ন জমা দিতে উঠে যান নির্বিঘ্নেই। অভিযোগ, সমস্যা হয়েছে তার পরেই। শাসকদলের প্রার্থীরা নির্বিঘ্নে মনোনয়ন জমা দিলেও বিরোধী প্রার্থীদের পদে-পদে বাধার মুখে পড়তে হয়েছে।

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন মনোনয়নের টেবিলে দলের প্রার্থীদের সাহায্যকারীর ভূমিকায় ছিলেন দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়, দুর্গাপুর-ফরিদপুরের নেতা সুজিত মুখোপাধ্যায় ও তৃণমূল আইনজীবী সেলের নেতা তথা দুর্গাপুরের কাউন্সিলর দেবব্রত সাঁই। জেলা পরিষদের প্রার্থী এক আত্মীয়ার সহায়ক হিসাবে মহকুমাশাসকের অফিসে যান উত্তমবাবু। সুজিতবাবু গিয়েছিলেন জেলা পরিষদের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিতে। ওই ভবনেই আদালত। আইনজীবী দেবব্রতবাবুও পৌঁছে যান মনোনয়নের টেবিলের কাছে।

বিরোধীদের অভিযোগ, ওই তিন নেতার নেতৃত্বে তৃণমূলের লোকজন বিরোধী প্রার্থীরা যাতে মনোনয়ন জমা দিতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে উঠেপড়ে লাগেন। দুপুর ২টো নাগাদ পাণ্ডবেশ্বরের জেলা পরিষদে বিজেপি-র হয়ে মনোনয়ন জমা দিতে আসা ঘনশ্যাম রামকে মারধর করে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বিজেপি-র জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই জানান, ঘনশ্যামবাবুকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘নানা ভাবে আমাদের প্রার্থীদের বাধা দিয়েছে তৃণমূল। মনোনয়নের টেবিলে ঘেঁষতেই দেওয়া হয়নি। তৃণমূল নেতারা ঘিরে ছিলেন।’’ সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের অভিযোগ, ‘‘আমাদের মোট ২৪ জন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে দেওয়া হয়নি। মনোনয়নপত্র ছিঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে।’’

আইনজীবী দেবব্রতবাবু কী ভাবে মনোনয়নের টেবিলের কাছে রইলেন, প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। দেবব্রতবাবুর যুক্তি, আদালতের নানা কাজে তাঁকে ভবনের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করতে হয়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ভোটে হার নিশ্চিত জেনে বিরোধীরা এ সব অভিযোগ আনছে।’’ তৃণমূল নেতৃত্বও অভিযোগ মানতে চাননি। উত্তমবাবুর কথায়, ‘‘বছরভর মানুষের পাশে থাকি আমরা। মিথ্যে অভিযোগ তুলে বিরোধীরা মানুষের থেকে আরও দূরে চলে যাচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Panchayat Election 2018 Turmoil
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE