Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

বিশেষ নজরে জেমুয়ার ভোট

ভোট চলাকালীন প্রতিটি পদক্ষেপ বিশদে জানানোর নির্দেশ পাঠানো হয়েছে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের। জেলায় এই একটি পঞ্চায়েত নিয়েই এমন নির্দেশ এসেছে।

রক্ষীর জলপান। নিজস্ব চিত্র

রক্ষীর জলপান। নিজস্ব চিত্র

সুশান্ত বণিক ও সুব্রত সীট
আসানসোল ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৮ ০০:৩৩
Share: Save:

গণ্ডগোলের আশঙ্কায় রিপোর্ট জমা পড়েছে। তাই দুর্গাপুর-ফরিদপুরের জেমুয়ায় ভোটের দিন বিশেষ নজর রাখছে নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য সরকার। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেমুয়ার ভোট প্রক্রিয়া পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে নবান্নে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনকে। ভোট চলাকালীন প্রতিটি পদক্ষেপ বিশদে জানানোর নির্দেশ পাঠানো হয়েছে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের। জেলায় এই একটি পঞ্চায়েত নিয়েই এমন নির্দেশ এসেছে।

গোটা বিষয়টি নিয়ে আবার ‘চক্রান্তের’ গন্ধ পাচ্ছে সিপিএম। দলের জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার দাবি করেন, ‘‘শুনেছি রাজ্য সরকারের রিপোর্টে জেমুয়ায় বিশেষ নজরদারির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমরা তাতে আশ্বস্ত হতে পারছি না। কারণ, জেমুয়া নিয়ে তৃণমূলের আতঙ্কিত হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে।’’

দুর্গাপুর শহর লাগোয়া জেমুয়া পঞ্চায়েতে মোট আসন ১১। ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটে চারটি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় জেতে তৃণমূল। বাকি ৭টি আসনের মধ্যে দু’টিতে জয়ী হয় সিপিএম। তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছিল সিপিএম। এমনকী, সিপিএমের বিদায়ী প্রধান বেবি রুইদাস নিজেই ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করা হয়। তৃণমূল যদিও বাধা দেওয়ার কথা মানেনি। এ বার ৫টি আসনে সিপিএমের প্রার্থী রয়েছে। অন্য কোনও দলের প্রার্থী নেই। সিপিএমের দাবি, এর ফলে বিরোধী ভোট এক বাক্সে জমা পড়ার দুশ্চিন্তা রয়েছে তৃণমূলের। এ ছাড়া দু’টি আসনে ই-মনোনয়ন পাঠিয়েছিল সিপিএম। তার মধ্যে একটি বৈধ বলে দাবি দলের নেতাদের। আপাতত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা এবং ই-মনোনয়নের উপরে আদালতের স্থগিতাদেশ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শাসক দল পাঁচটি আসন যে ভাবে হোক জিততে চাইছে বলে দাবি সিপিএমের।

সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, জেমুয়ায় ২০১১ সালের পর থেকে তিন বার কৃষকসভার কার্যালয়ে হামলা করেও সেটি বন্ধ করা যায়নি। বারবার সভায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার সিপিএমের সভার পরে রাতে পতাকা, ফেস্টুন খুলে দেওয়া হয়। সকালে ফের সে সব টাঙিয়ে দেন সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা। ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের ফলে জেমুয়া-পরাণগঞ্জ এলাকায় এগিয়ে ছিল সিপিএম।

সিপিএম নেতা পঙ্কজবাবুর অভিযোগ, ‘‘এলাকায় নানা প্রকল্প রূপায়ণ না হওয়ায় মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ ভোট হলে তৃণমূল বেকায়দায় পড়ে যাবে। তাই ভয় পাচ্ছে। ভোট লুট করতে বীরভূম ও ঝাড়খণ্ড থেকে দুষ্কৃতীদের নিয়ে এসেছে ওরা। তবে আমরা যে কোনও পরিস্থিতির জন্য তৈরি আছি।’’ তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘জেমুয়ায় অর্ধেকের বেশি আসনে তো প্রার্থীই দিতে পারেনি সিপিএম। তার পরেও এত কথা কিসের!’’

জেমুয়ার প্রতি কমিশন ও নবান্নের এই বাড়তি নজরদারি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে জেলায় নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক অরিন্দম রায় বলেন, ‘‘আমরা সব এলাকাতেই কড়া নজর রাখছি। ভোট শান্তিপূর্ণ হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE