Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কিশোরীকে ‘পাচার’, রুখল গ্রাম

পুলিশের দাবি, জেরায় ওই দুই মহিলা জানিয়েছেন দিদিমাকে জানিয়েই উত্তরপ্রদেশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল মেয়েটিকে। 

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাতার শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৮ ০১:৪৭
Share: Save:

আট মাস আগে গ্রামের মেয়ে ‘নিখোঁজ’ হয়ে গিয়েছিল। ১৬ বছরের কিশোরী কোথায় গেল, সে ব্যাপারে পরিজনেরাও কিছু জানাননি। কয়েকদিন আগে ঘরে ফেরে সেই কিশোরী। অভিযোগ, মঙ্গলবার ওই কিশোরীকে নিয়ে যেতে ভাতারের ঝুঝকোডাঙা গ্রামে আসেন দুই মহিলা। কথাবার্তায় অসঙ্গতি প‌েয়ে তাঁদের আটকে রাখেন গ্রামবাসীরা। পরে পুলিশ এসে গ্রেফতার করে ওই দু’জনকে। টাকা নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই কিশোরীর দিদিমা রোহিদা বেগমকেও। পুলিশের দাবি, জেরায় ওই দুই মহিলা জানিয়েছেন দিদিমাকে জানিয়েই উত্তরপ্রদেশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল মেয়েটিকে।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা হলেন টুম্পা বেগম ও চাঁদনি বেগম। তাঁদের বাপের বাড়ি ভাতারেরই আমারুণ ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের পলসোনা গ্রামে। দু’জনরেই শ্বশুরবাড়ি বর্ধমানের লোকো-খালাসি পাড়া। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, মাস আটেক আগে ওই নাবালিকাকে উত্তরপ্রদেশে কোশীনগর জেলার বিষ্ণুপুর থানার রুদ্রাণী এলাকায় একটি নাচের দলে যোগ দেওয়ার জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। সেখানে কিছুদিন থাকার পরে ভাতারে ফেরেন। কিন্তু ফেরার পরে ওই কিশোরী আর যেতে চায়নি। গত কয়েকদিনে ওই দুই বেশ কয়েকবার নাবালিকার বাড়িতে আসেন। এ দিনও তাঁদের দেখে সন্দেহ হয় পড়শিদের। তাঁরাই জিজ্ঞাসাবাদ করে কথাবার্তায় অসঙ্গতি পেয়ে পুলিশে খবর দেন।

সামসুল শেখ, শেখ নূর আলিদের দাবি, “ওই দুই মহিলা তাঁদের জানান রোহিদা বেগমকে টাকা দিয়েই মেয়েটিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। রোহিদা বেগমকে জিজ্ঞাস করা হলে তিনিও কিছু বলতে চাননি।’’ পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই নাবালিকার বাবা-মা বেশ কয়েকবছর আগেই মারা গিয়েছেন। মামার বাড়িতেই বড় হয়েছে মেয়েটি। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় স্কুলছুট হয় সে। পুলিশের দাবি, ওই নাবালিকাকে উত্তরপ্রদেশ পাঠিয়ে মাসে ৪ হাজার টাকা করে পেতেন রোহিদা। তিনি অবশ্য তা অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “আমার নাতনি যেতে চাইছিল না। আমরাও পাঠাতে রাজি ছিলাম না। কিন্তু ওই দুই মহিলা চাপ দিচ্ছিল।’’

এ দিন গ্রামের সামসুল শেখ লিখিত অভিযোগে জানান, নানা রকম প্রলোভন দেখিয়ে ও দিদিমাকে টাকা দিয়ে ওই নাবালিকাকে বাইরে নিয়ে গিয়ে নর্তকী দলে ঢুকিয়ে দেয় ওই দুই মহিলা। এতে মত ছিল দিদিমারও। আর এক বাসিন্দা সুব্রত সাঁতার বলেন, “প্রলোভনের রোগ মারাত্মক। একবার ঢুকে গেলে মহামারির মতো সবাই মেয়েদের বাইরে পাঠিয়ে দেবে। আমরা সবাই মিলে প্রতিরোধের চেষ্টা করেছি।’’ বিডিও শুভ্র চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওই নাবালিকাকে স্কুলে পাঠানোর জন্য সব রকম সাহায্য করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Girl Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE