কেন্দ্রীয় সরকারের নানা জনবিরোধী নীতির ফলে মানুষের স্বাধীনতা হারাচ্ছে।— এমনই অভিযোগে আগামী ১৪ অগস্ট দেশ জুড়ে রাত জেগে ‘সামুহিকী জাগরণ’ কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে ১৫ অগস্ট, স্বাধীনতা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিটু।
ডিএসপি-র সিটুর যুগ্ম সম্পাদক সৌরভ দত্ত বলেন, ‘‘দুর্গাপুরে মূল অনুষ্ঠানটি হবে ডিএসপি টাউনশিপে বি-জোনের ১ নম্বর বিদ্যাসাগর অ্যাভিনিউয়ে সিটু-র ডিএসপি ইউনিটের কার্যালয়ে। এই কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য শ্রমিক, কৃষক থেকে সাধারণ মানুষ, সকলের জীবন সঙ্কটে। তাই এই কর্মসূচি।’’
সিটু নেতৃত্ব জানান, সংগঠন অনুমোদিত ‘হিন্দুস্থান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন’-র এই কর্মসূচিতে যোগ দেবেন দুর্গাপুরের সাংস্কৃতিক কর্মীরা। থাকবে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনও। ১৪ অগস্ট রাত ৯ টা থেকে ১৫ অগস্ট সকাল পর্যন্ত আবৃত্তি, গান, নাটক, আলেখ্য পাঠ, মূকাভিনয়, শ্রুতিনাটক, কৌতুকাভিনয়-সহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। যোগ দেওয়ার কথা সিটুর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক তপন সেন, বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় প্রমুখের। ১৫ অগস্ট ভোর সাড়ে ৫টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। পোস্টার লিখন ছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে শ্রমিকদের কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের রেওয়াজ সিপিএম বা দলের বিভিন্ন গণসংগঠনে অতীতে ছিল না। তা নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। পশ্চিমবঙ্গে দলের রাজ্য সম্মেলন বা কোনও কোনও জেলা সম্মেলনে প্রতিনিধিদের তরফে বার বার এ বিষয়ে প্রশ্নও তোলা হয়েছে। যদিও দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী স্বাধীনতা দিবস পালন বা জাতীয় পতাকা উত্তোলনে কোনও বাধা ছিল না। শেষমেশ ২০১৪-য় স্বাধীনতা দিবসে আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফ। পরে যোগ দেয় অন্য দলীয় সংগঠনও।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, পর পর নির্বাচনে ধারাবাহিক বিপর্যয়ের পরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংযোগ বাড়াতে বাধ্য হয়েই স্বাধীনতা দিবস পালনের মতো কর্মসূচি নিতে শুরু করে সিপিএম।
যদিও এই কর্মসূচি প্রসঙ্গে সিটু নেতাদের ব্যাখ্যা, কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতির ফলে শ্রমিকদের আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষা বিপন্ন হচ্ছে। দেশ জুড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের একজোট করতেই এ ভাবে রাত জেগে স্বাধীনতা দিবস পালনের উদ্যোগ। দুর্গাপুরের শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও সারারাত জাগবেন সে দিন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাত জেগে তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবেন বলে জানিয়েছেন সিটু নেতা সৌরভবাবু। তিনি বলেন, ‘‘স্বাধীনতা দিবস পালন আসলে উৎসব। অথচ কেন্দ্রীয় সরকারের নানা জনবিরোধী নীতির ফলে দেশের মানুষ স্বাধীনতা হারিয়েছেন। তাই জাতীয় পতাকা উত্তোলনের আগে রাত জেগে দেশ পাহারা দিতে চাই আমরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy