শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য ও দুর্নীতির অভিযোগে পশ্চিম বর্ধমান জেলাশাসকের দফতরে অনশন অবস্থানে বসলেন ওই দফতরেরই এক আপার ডিভিশন ক্লার্ক।
জেলাশাসকের দফতর সূত্রে জানা যায়, দফতরের এস্টাবলিস্টমেন্ট বিভাগের কর্মী শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার বিকেল ৫টায় ছুটির পরে আচমকা অবস্থানে বসে পড়েন। দফতরেরই এক কর্মীর এই আচরণে অন্যদের মধ্যে শোরগোল পড়ে যায়। কিন্তু অফিস ছুটি হয়ে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে কর্মী, আধিকারিকেরা বিশেষ মাথা ঘামাননি। তবে মঙ্গলবার থেকেই অফিসের ভিতরে ও বাইরে শুরু হয় টানাপড়েন। এ দিন জেলাশাসকের দফতরে গিয়ে দেখা গেল, অফিসের পোশাকেই তিনি মাটিতে তোয়ালে বিছিয়ে বসে রয়েছেন। শুভঙ্করবাবুর অভিযোগ, ‘‘গত দু’বছরে আমাকে ছ’বার নানা জায়গায় বদলি করা হয়েছে। অথচ অনেকেই বছরের পর বছর একই জায়গায় বহাল রয়েছেন। আমার প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে। এর কারণ, বিভিন্ন দফতরে কাজ করার সময়ে আমি দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছি।’’ তাঁর দাবি, তাঁর প্রতি এই বৈষম্য ও দুর্নীতি বন্ধে জেলাশাসক প্রয়োজনীয় আশ্বাস না দিলে অবস্থান তুলবেন না।
জানা গিয়েছে, শুভঙ্করবাবু ২০১২-য় বর্ধমান কালেক্টরেট অফিসে লোয়ার ডিভিশন ক্লার্ক পদে চাকরি পান। বছর দুয়েক আগে তাঁকে পশ্চিম বর্ধমানে বদলি করা হয়। শেষ বার মাস ছয়েক আগে লাউদোহা ব্লক কার্যালয় থেকে আসানসোলে কালেক্টরেট দফতরে বদলি হয়ে এসেছেন। আবার দিন কয়েক আগে তাঁকে কাঁকসা ব্লক কার্যালয়ে বদলি করা হয়েছে। ওই বদলির নির্দেশ হাতে পেয়েই তিনি বিক্ষোভ শুরু করেছেন।
মঙ্গলবার তাঁর সঙ্গে দফায় দফায় দেখা করে অনশন প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন আধিকারিকেরা। চিকিৎসক এনে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করা হয়েছে। এ দিন বিকেলে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অরিন্দম রায়ও। অরিন্দমবাবু বলেন, ‘‘কী দুর্নীতি হয়েছে, তা খুঁজে দেখার জন্য সময় দিতে হবে। আগাম কিছু না জানিয়ে এমন অবস্থানের অর্থ নেই।’’ জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি বলেন, ‘‘উনি চাকরির নিয়ম ও শর্ত লঙ্ঘন করেছেন। যেখানে তাঁকে বদলি করা হয়েছে, সেখানে আগে তাঁকে যোগ দিতে হবে। তার পরে অভিযোগ জানানো যায়। দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তের জন্য অরিন্দমবাবুর নেতৃত্বে কমিটি তৈরি করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy