Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

নজরুলের মূর্তি নিয়ে ফের তরজা

সম্প্রতি রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য দু’নম্বর জাতীয় সড়কে চাঁদা মোড়ে থাকা নজরুলের মূর্তিটি সরিয়ে নেন সড়ক কর্তৃপক্ষ। তা প্লাস্টিকে মুড়ে রাখা হয়, চাঁদা গ্রামে, নজরুল মঞ্চের পাশে।

ক্রেনে করে সরানো হচ্ছে নজরুলের মূর্তি। নিজস্ব চিত্র

ক্রেনে করে সরানো হচ্ছে নজরুলের মূর্তি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:১৭
Share: Save:

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এসে মূর্তি পুনঃস্থাপনের জন্য শিলান্যাস করবেন। তার আগেই কাজী নজরুল ইসলামের মূর্তি ক্রেনে তুলে নিয়ে গেল জামুড়িয়া থানার পুলিশ। মাঝে অবশ্য তৃণমূল নেতা ও আসানসোল পুরসভার কর্তারা এসেও মূর্তিটি নিয়ে যেতে চান। সব মিলিয়ে শনিবার চাঁদা মোড়ে গোলমাল বাধল।

সম্প্রতি রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য দু’নম্বর জাতীয় সড়কে চাঁদা মোড়ে থাকা নজরুলের মূর্তিটি সরিয়ে নেন সড়ক কর্তৃপক্ষ। তা প্লাস্টিকে মুড়ে রাখা হয়, চাঁদা গ্রামে, নজরুল মঞ্চের পাশে। দিন কয়েক পরে মূর্তিটি তাঁদের না জানিয়ে সরানো হয়েছে, এই মর্মে জামুড়িয়া থানায় অভিযোগ করে আসানসোল পুরসভা। ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছিল বিরোধী দল কংগ্রেস, সিপিএম-ও।

এ দিন কী ঘটেছিল? মূর্তি সংরক্ষণ কমিটির সদস্য অরূপ পালের দাবি, এ দিন গ্রামে মূর্তিটি পুনঃস্থাপনের জন্য দুপুর আড়াইটা নাগাদ শিলান্যাস করার কথা ছিল বাবুলের। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান এর আগে সকাল ন’টা নাগাদ তৃণমূলের জামুড়িয়া ১ ব্লক সভাপতি সাধন রায় মূর্তিটি জামুড়িয়া নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানান। তা নিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে শুরু হয় বচসা। খানিক বাদেই এলাকায় আসেন আসানসোল পুরসভার মেয়র পারিষদ পূর্ণশশী রায়। তিনি দাবি করেন, ‘‘মূর্তিটি সংরক্ষণ করবে পুরসভা।’’ এর পরেই ওই এলাকায় শুরু হয় গোলমাল। খবর পেয়ে জামুড়িয়া থানার পুলিশ চলে আসে এলাকায়। পুলিশকর্তারা দাবি করেন, পুরসভা যেহেতু মূর্তিটি নিয়ে অভিযোগ করেছে, তাই মূর্তিটি থানায় নিয়ে যাওয়া হবে। এর পরে ক্রেনের সাহয্যে মূর্তিটি গাড়িতে চাপিয়ে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

এর পরে বিকেল চারটে নাগাদ সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় জাতীয় সড়কের চাঁদা মোড় সংলগ্ন উড়ালপুল উদ্বোধন করতে এসে বলেন, “আমার অনুরোধে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ মূর্তিটি বসিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। চাঁদা গ্রামের বাসিন্দারা সর্বসম্মতি ক্রমে জাতীয় সড়ক থেকে ৫০ ফুট দূরে স্কুলের সামনে বসাতে রাজি হন। কিন্তু আমার ‘ভয়ে’ শাসকদল মূর্তি সরাল।” আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি অবশ্য বলেন, ‘‘মূর্তিটি পুরসভার সম্পত্তি। মূর্তিটি আমাদের না জানিয়ে সরানো হওয়ায় অভিযোগ করা হয়েছে। তাই পুলিশ মূর্তিটি উদ্ধার করেছে। এর বেশি বলার কিছু নেই।’’

তবে এলাকার রাজনৈতিক মহলের দাবি, সাংসদ-মেলার আয়োজন বা পানাগড় বাইপাসের উদ্বোধন হোক, বারবার রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে আসানসোলের সাংসদের বিবাদের ঘটনা নতুন নয়। এ বার সেই তালিকায় যোগ হল নজরুলের মতো ব্যক্তিত্বের মূর্তি নিয়েও চাপান-উতোর। এলাকার বাসিন্দারাও এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ। সিপিএম কাউন্সিলর তাপস কবিরও দাবি, ‘‘বিজেপি-তৃণমূল কাজিয়ায় কবি-মূর্তি এখন থানায়। এর দ্রুত বিহিত করা হোক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE