Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

আট বছরের সঙ্গী হারিয়ে মনমরা নীরা

জেলার এক পশু চিকিৎসকের মন্তব্য, “বেশি বয়সে সঙ্গী হারিয়ে অসুস্থ হতে পারে নীরা। সুস্থ ভাবে বাঁচিয়ে রাখতে সঙ্গীর প্রয়োজন।’’ সোমবারই এই চি়ড়িয়াখানায় মৃত্যু হয়েছে বছর কুড়ির এক পুরুষ ভালুকের। ভালুকের গড় আয়ু যেখানে ৪০ বছর সেখানে এত কম বয়সে মৃত্যু নিয়ে বিতর্কও উঠেছে।

উদাস: রমনাবাগানের এক কোনে ভালুক নীরা। নিজস্ব চিত্র

উদাস: রমনাবাগানের এক কোনে ভালুক নীরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৭ ১৬:০০
Share: Save:

দু’দিন ধরে নীরার খুব মন খারাপ। দিনভর ঝিমিয়ে পড়ে রয়েছে, আর সঙ্গীকে খুঁজছে এ দিক-ও দিক। খাওয়াদাওয়া প্রায় বন্ধ।

বর্ধমানের রমনাবাগান মিনি জুয়ে ভালুক খুঁজলেই চোখে পড়বে মুহ্যমান নীরাকে। আট বছরের সঙ্গীর মৃত্যুতে সে বড়ই শোকাতুর। কিন্তু এমন একাকীত্ব চললে নীরাও অসুস্থ হয়ে পড়বে। তাই ইতিমধ্যেই নতুন সঙ্গীর খোঁজ শুরু করে দিয়েছেন রমনাবাগান মিনি জু কর্তৃপক্ষ।

জেলার এক পশু চিকিৎসকের মন্তব্য, “বেশি বয়সে সঙ্গী হারিয়ে অসুস্থ হতে পারে নীরা। সুস্থ ভাবে বাঁচিয়ে রাখতে সঙ্গীর প্রয়োজন।’’

সোমবারই এই চি়ড়িয়াখানায় মৃত্যু হয়েছে বছর কুড়ির এক পুরুষ ভালুকের। ভালুকের গড় আয়ু যেখানে ৪০ বছর সেখানে এত কম বয়সে মৃত্যু নিয়ে বিতর্কও উঠেছে। চি়ড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, ভালুকটি অসুস্থ ছিল। যদিও জেলার পশুপ্রেমী সংগঠনের দাবি, গরমে ঠিকমতো দেখভাল না হলে ভালুক অসুস্থ হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রেও তেমনই হয়েছে কি না, তা তদন্ত করে দেখারও দাবি তোলেন তাঁরা।

এ দিকে সঙ্গী হারিয়ে দু’দিনেই ঝিমিয়ে পড়েছে নীরা। মাঝেমধ্যে দাঁড়িয়ে খালি ঘাড় নাড়াচ্ছে। ওই ভালুকের দেখভালের দায়িত্বে থাকা এক কর্মী বলেন, “পুরুষ ভালুকটি মারা যাওয়ার পর থেকে নীরা মুখ গুঁজে পড়ে ছিল। খালি চোখ দিয়ে জল পড়ছিল। মঙ্গলবার সকালেও সে ভাবে খায়নি।’’

কিন্তু সঙ্গী যে মারা গিয়েছে, বুঝল কী ভাবে?

চিড়িয়াখানার প্রবীণ এক কর্মী বলেন, “এনক্লোজার বদলানোর সময় ওই দুই ভালুককে আলাদা করে রাখা হয়েছিল। তখনও দু’জনেই অসুস্থ হয়ে প্রায় খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিল। একসঙ্গে থাকার পর চাঙ্গা হয়ে উঠেছিল।”

বিভাগীয় বন আধিকারিক দেবাশিস শর্মা বলেন, “একসঙ্গে দীর্ঘদিন থাকার ফলে পরস্পরের উপস্থিতি সব সময় টের পেত ওরা। পুরুষ ভালুকটি অসুস্থ থাকায় বেশ কয়েকদিন ধরে সেই টেরটা পাচ্ছিল না। সোমবারের পর থেকে দেখতেও পাচ্ছে না বলে স্বাভাবিক ভাবেই কষ্ট পাচ্ছে মেয়ে ভালুকটি।”

রমনাবাগান মিনি জু কর্তৃপক্ষের দাবি, নীরার সঙ্গীর খোঁজে সল্টলেকে ভালুক গবেষণা কেন্দ্র-সহ বিভিন্ন জায়গাতে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE