ফাইল চিত্র
শিক্ষক হেনস্থায় অভিযুক্ত শিক্ষাকর্মী মুকেশ শর্মার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিলেন মহকুমাশাসক (বর্ধমান দক্ষিণ) তথা মেমারি কলেজের প্রশাসক অনির্বাণ কোলে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি কলেজের শিক্ষক ও ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে মুকেশের ‘আচরণ’ সম্পর্কে বিশদ তথ্য সংগ্রহ করেন। তাঁর নির্দেশেই মুকেশের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন কলেজের বাংলার শিক্ষক কস্তুর আহমেদ মোল্লা। মেমারি ১ ব্লকের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি মুকেশ আবার পুলিশের কাছে পাল্টা অভিযোগে দাবি করেছেন, কলেজের ভিতরে তিনিই ‘নিরাপত্তাহীন’। তাঁকে মারার জন্য ‘বহিরাগত’দের কলেজে ঢোকাচ্ছেন শিক্ষকদের একাংশ।
বুধবার বিকেলে কস্তুর আহমেদ মোল্লাকে মারধরের অভিযোগ ওঠে মুকেশের বিরুদ্ধে। কস্তুরের দাবি, সিঁড়ি দিয়ে উঠে দোতলায় অফিস ঘরে ঢোকার সময় মুকেশের কাঁধে ধাক্কা লাগে। সেই রাগে ধাক্কা কী জিনিস বোঝাতে তাঁকে সিঁড়িতে ধাক্কা দিতে দিতে নীচে নামান ওই শিক্ষাকর্মী। সঙ্গে গালিগালাজ। কলেজের গেট পর্যন্ত ধাক্কা মারতে মারতে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বলেও বাংলার শিক্ষকের অভিযোগ। বর্ধমানের খাগড়াগড়ের বাসিন্দা কস্তুর বৃহস্পতিবার বলেন, “সকলের সামনে আমাকে অপদস্থ করা হয়েছে। অসহায়ের মতো তা সহ্য করেছি। এই অপমান সারা জীবনেও ভুলব না। ওই শিক্ষাকর্মীর উপযুক্ত শাস্তি চেয়ে মহকুমাশাসককে চিঠি দিয়েছি। তাঁর পরামর্শেই এফআইআর করা হয়েছে।’’
এ দিন দুপুরে মেমারি কলেজের ১৪-১৫ জন শিক্ষক এক সঙ্গে থানায় গিয়ে অভিযোগ জমা দিয়ে আসেন। এর কিছুক্ষণ পরেই মেমারির ওসি দীপঙ্কর সরকার কলেজে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ নিয়েছেন। ওই শিক্ষক মেমারি থানায় লিখিতভাবে জানিয়েছেন, ঘটনার সময় তাঁর বুকে জোরে আঘাত করা হয়েছে। প্রাণে মারার হুমকিও দিয়েছেন মুকেশ। এ দিন কস্তুর আহমেদ ও অন্য শিক্ষকেরা মহকুমাশাসককে জানিয়েছেন, একের পর এক ঘটনায় তাঁরা ভীত ও সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছি। মেমারি কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া চলছে। পরীক্ষা ও ফর্ম পূরণের কাজও চলছে। প্রতিদিন ‘গুন্ডামি’ করলে কলেজ চালানো সম্ভব নাকি!’’ এ দিন শিক্ষকদের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, অধ্যক্ষ ও অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা মুখ্যমন্ত্রীর দফতর ও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সুষ্ঠুভাবে কলেজ চালানোর অনুরোধ জানাবেন।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ কলেজে আসেন মুকেশ। অফিস ঘরে হাজিরা খাতায় সই করার পরেই তাঁকে ডেকে অধ্যক্ষ বলে দেন, ‘হাজিরা খাতায় সই করা ছাড়া অফিস ঘরে আসার কোনও প্রয়োজন নেই। গ্রন্থাগারের বাইরেও যেন না দেখি’। জবাবে মুকেশ জানান, সে ক্ষেত্রে তাঁকে অন্যত্র বদলি করে দেওয়া হোক। তা হলে ‘অপবাদের’ হাত থেকে তিনি বাঁচবেন। মহকুমাশাসক অবশ্য বলেন, “শিক্ষক-ছাত্র, সকলের সঙ্গে কথা হয়েছে। বুধবারের ঘটনার প্রেক্ষিতে এফআইআর করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। আমরা ওই শিক্ষাকর্মীর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy