Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

নড়বড়ে ঘাট, ঝুঁকিনিয়েই পারাপার

ঝাউডাঙা পঞ্চায়েতের এক দিকে ভাগীরথী, অন্য দিকে ছাড়ি গঙ্গা বয়ে গিয়েছে। রয়েছে গঙ্গাপুর, রুদ্রডাঙা, কাশিপুর, ঝাউডাঙা, হালতেচরা গ্রামগুলি। গ্রামবাসীরা জানান, এলাকা থেকে বাইরে যেতে হলেই নদী পের হতে হয়। কিন্তু ফি বছর বর্যায় ভয়ঙ্কর রূপ নেয় ভাগীরথী।

পারাপার: ঝাউডাঙা ঘাট থেকে এ ভাবেই নৌকার উপরে গাড়ি তুলে যাতায়াত। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

পারাপার: ঝাউডাঙা ঘাট থেকে এ ভাবেই নৌকার উপরে গাড়ি তুলে যাতায়াত। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৭ ০২:০৯
Share: Save:

কিছু দিন আগেই কালনা ফেরিঘাটে নৌকাডুবির স্মৃতি এখনও টাটকা। কিন্তু সেই ঘটনাতেও হুঁশ যে ফেরেনি প্রশাসনের, তার প্রমাণ পূর্বস্থলী ২-র ঝাউডাঙা ঘাটটি। তিনটি নড়বড়ে কাঠের নৌকা, বাঁশের কাঠামো, অপর্যাপ্ত আলো— এই পরিকাঠামো নিয়েই টিমটিম করে ঘাটটি চলছে। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, প্রতি দিন জীবন হাতে করে নদী পারাপার করতে হচ্ছে।

ঝাউডাঙা পঞ্চায়েতের এক দিকে ভাগীরথী, অন্য দিকে ছাড়ি গঙ্গা বয়ে গিয়েছে। রয়েছে গঙ্গাপুর, রুদ্রডাঙা, কাশিপুর, ঝাউডাঙা, হালতেচরা গ্রামগুলি। গ্রামবাসীরা জানান, এলাকা থেকে বাইরে যেতে হলেই নদী পের হতে হয়। কিন্তু ফি বছর বর্যায় ভয়ঙ্কর রূপ নেয় ভাগীরথী। এমনকী ওই গ্রামগুলিতে অতিবৃষ্টির জেরে জলও ঢুকে যায়। প্রশাসনকে খুলতে হয় ত্রাণ শিবির। বছর খানেক আদে বন্যার সময়ে বাসিন্দাদের উদ্ধার করতে নামানো হয় সেনাবাহিনীকেও।

এমন ভৌগলিক পরিস্থিতিতেও ঘাটের পরিকাঠামোর উন্নতিতে নজর দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। ফি দিনই দেখা যায়, ভোর হতে না হতে বহু মানুষকে সাইকেলের দু’দিকে দুধের পাত্র বেঁধে নৌকায় ওঠেন। পরে তা পাটুলিতে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেন। এ ছাড়া স্কুল, কলেজ, বাজার, ব্লক অফিস, কিসান মান্ডি, স্বাস্থ্যকেন্দ্র-সহ নানা জায়গাতেও যান বহু মানুষ।

অথচ এই ঘাটে পারাপারের জন্য রয়েছে মাত্র তিনটি কাঠের নৌকা। নৌকাগুলি আবার ভেড়ে বাঁশের মাচায়। যে কোনও সময়ে মাচা ভেঙে বিপত্তি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা যাত্রীদের। তা ছাড়া কাঠের নৌকায় সাইকেল, মোটরবাইক, এমনকী চারচাকার ভারী গাড়িও তোলা হয় বলে জানা গিয়েছে। শনিবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, যাত্রীদের কারও গায়েই নেই লাইফ জ্যাকেট। ঘাটের পাশে প্রতীক্ষালয়, পর্যাপ্ত পানীয় জল, আলোর ব্যবস্থা, ঘাটমুখী ভাল রাস্তা — কিছুই তৈরি হয়নি বলে জানান বাসিন্দারা। এলাকার মৎস্যজীবী সমীর হালদার বলেন, ‘‘প্রশাসন দ্রুত ঘাটের উন্নতিতে নজর দিক। তা না হলে যে কোনও দিন বিপদ ঘটতে পারে।’’

পূর্বস্থলী ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোপা ঘোষ অবশ্য জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে। কালনার মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, ‘‘পূর্বস্থলীর দোলতলা ও কোমল নগরঘাটের পরিকাঠামোর উন্নতি করতে পাঁচ লাখ টাকা করে বরাদ্দ হয়েছে। পরের ধাপে ঝাউডাঙা ঘাটটির পরিকাঠামোর উন্নতি করা হবে। ঘাটগুলিতে লাইফ জ্যাকেটও দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE