প্রতীকী ছবি
এক ঢিলে বহু পাখি মারতে চাইছে পূর্ব বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
করোনাভাইরাস সংক্রামণের হাত থেকে বাঁচার জন্য কী করতে হবে, বাড়িতে কারও সর্দি-জ্বর-কাশি-হাঁচি রয়েছে কি না, গত কয়েকদিনের মধ্যে বাইরে থেকে কেউ এসেছেন কি না—এ রকম একাধিক বিষয় খোঁজখবর করতে বাড়ি বাড়ি যাবেন আশাকর্মীরা। করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতন করার পাশাপাশি ডেঙ্গি নিয়ে পরামর্শ, বিভিন্ন গুজব থেকে দূরে থাকার কথাও তাঁরা বলবেন। পুরসভা এলাকাতেও একই কাজ করবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, “আমাদের কাছে গ্রাম থেকে নানা রকম খবর আসছে। সে সব কতটা সত্যি বাড়ি বাড়ি গিয়ে আশা ও স্বাস্থ্যকর্মীরা জানবেন। একই সঙ্গে বাড়িতে জ্বর, সর্দি, কাশি, হাঁচির উপসর্গ নিয়ে কেউ আছেন কি না, তার খোঁজ নেওয়া হবে। এর ফলে অনেক অজানা তথ্য উঠে আসবে, যা করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের কাজে লাগবে।’’
স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জেলার ছ’টি পুরসভাকেই এ ব্যাপারে বিশেষ নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। দফতরের একাধিক কর্তা জানান, জেলা থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত সারা বছর একটি প্রক্রিয়া চলে। আশাকর্মীদের কাছে তাঁদের এলাকার বাড়িগুলির বিস্তারিত তথ্য থাকে। সে দিক থেকে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে বিশেষ প্রকল্প ছাড়া পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের যোগাযোগ থাকে না। সে কারণে পুরসভা থেকে তথ্য পেতে স্বাস্থ্য দফতরের সমস্যাও হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “বর্ধমান পুরসভা থেকে গৃহ পর্যবেক্ষণের রিপোর্ট ঠিক মতো আসছিল না। জেলা প্রশাসন ও পুরসভার সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করতে হয়েছে। সে কারণেই পুরসভাগুলিকে বিশেষ নজর দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’’
স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ, নিবিড় ভাবে করোনাভাইরাস সম্পর্কিত তথ্য তুলে আনতে হবে। বাড়িতে গিয়ে প্রত্যেক সদস্যের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলতে হবে। ‘লকডাউন’ না মেনে কেউ বাড়ির বাইরে থাকলে, তার সম্পর্কেও তথ্য নিতে হবে। এ ছাড়াও কারও জ্বর, সর্দি, কাশি, হাঁচি রয়েছে কি না, বা রোগের আরও কোনও চিহ্ন ফুটে উঠছে কি না দেখে নির্দিষ্ট ফর্মে তা পূরণ করতে হবে। ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকাকালীন স্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শ মানা হচ্ছে কি না, সেটাও তাঁরা দেখবেন। এ ছাড়াও বাড়ির ভিতরেও যতটা সম্ভব দূরত্ব বজায় রাখা, সাবান দিয়ে ঘন ঘন হাত ধোয়া, মাস্ক পড়ার প্রয়োজনীতাও জানাবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
এক আশাকর্মী বলেন, “গ্রামের দিকে বিকেলে পুকুর পাড়ে বা বাড়ির বারান্দায় মহিলাদের গল্প করতে দেখা যায়। সেখানে গিয়ে বাড়ির মহিলাদের বোঝাব বলে ঠিক করেছি। মহিলাদের সচেতন করতে পারলে বাড়ির পুরুষ, সন্তানেরাও সচেতন হয়ে উঠবেন বলে আমাদের ধারণা।’’
প্রতিদিন দুপুর ১২টার মধ্যে স্বাস্থ্য দফতরে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ এসেছে। ওই রিপোর্টে কতগুলি বাড়ি ঘোরা হল, বাইরে কেউ এসেছে কি না, জ্বর-সর্দি কাদের হয়েছে, ‘হোম কোয়রান্টিন’ পর্ব কাদের শেষ হয়েছে, সবই জানাতে হবে। কাটোয়ার এক আশাকর্মীর কথায়, “গ্রামের দিকে মুখে মুখে নানা রকম গুজব ছড়াচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুল তথ্য থাকছে, সে সব নিয়েও আমাদের বোঝাতে হবে বলে জানানো হয়েছে।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, “পূর্ব বর্ধমানে কয়েকজনের ‘কোভিড-১৯’ টেস্ট করা হয়েছে। রিপোর্ট নেতিবাচকই রয়েছে। তা সত্ত্বেও আমরা বাড়ি বাড়ি তথ্য সংগ্রহে জোর দিয়েছি। সাবধানের মার নেই!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy