প্রতীকী ছবি
মেডিক্যাল কলেজ-সহ জেলার তিন হাসপাতালে ‘আইসোলেশন’-এ থাকা রোগীর সংখ্যা নগণ্য। ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্রেও এখনও পর্যন্ত কাউকে রাখতে হয়নি। তবে তা সত্ত্বেও উদ্বেগ কমছে না পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের কর্তাদের। ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকা মানুষের সংখ্যা বেড়ে চলাই তাঁদের মাথাব্যথা। ওই সব বাসিন্দাদের উপরে নজর রাখার দায়িত্ব যাঁদের, তাঁদের ‘নিধিরাম’ অবস্থা নিয়েও চিন্তায় প্রশাসন। মন্ত্রীর উপস্থিতিতে প্রশাসনিক বৈঠকে জেলার বিডিও-রা জানতে চেয়েছেন, আশা-অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী বা উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র পিছু ‘টাস্ক ফোর্স’-এর সদস্যদের জন্য ‘মাস্ক’ বা স্যানিটাইজ়ার কবে পাওয়া যাবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আশ্বাস, ওই সামগ্রী এবং ‘পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট’ (পিপিই) পৌঁছে গিয়েছে। অনেকে সে সব হাতে পেয়েছেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আপাতত চেষ্টা করা হচ্ছে, ঘরে ফেরা শ্রমিকদের ‘ঘরবন্দি’ করে রাখতে। নানা অসুবিধার মধ্যেও গ্রামের আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, সিভিক ভলান্টিয়ারেরা নানা উপায়ে ওই সব শ্রমিকেরা যাতে ঘরেই থাকেন, তা নজরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ওই শ্রমিকেরা বা তাঁদের পরিবারের লোকজন কেমন আছেন, তার উপযুক্ত তথ্য ওই কর্মীরা নিতে পারছেন কি না, সে নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এএনএম-রা সরাসরি শ্রমিককে ফোন করে খবর নিচ্ছেন। আশাকর্মীরা বাড়ির বাইরে থেকে খোঁজ নিচ্ছেন। ব্লকের ‘ভিলেজ রিসোর্স পার্সন’রাও একই ভাবে নজর রাখছেন। কোনও সূত্র মারফত কারও অসুস্থতার খবর পেলে ‘মেডিক্যাল টিম’ যাচ্ছে সেই বাড়িতে। সন্দেহজনক কিছু দেখলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে ঠিকই, তবে বাড়িতে ঢুকে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক কেমন আছেন, তা জানতে পারছেন না স্বাস্থ্যকর্মীরা।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের অবশ্য দাবি, আশাকর্মীদের নিজস্ব ‘নেটওয়ার্ক’ রয়েছে। সেই সূত্রে তাঁদের কাছে খবর পৌঁছে যাচ্ছে। সে জন্যই কারা ঘরে ফিরছেন, সেই হিসাব দ্রুত পাওয়া যাচ্ছিল। কোনও শ্রমিক বাড়িতে না এসে কোথাও লুকিয়ে থাকলে, সে খবরও ঠিক জেলা প্রশাসনের কাছে পৌঁছে দিচ্ছিলেন আশাকর্মী বা সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। তার উপরে ভিত্তি করেই কাটোয়া ও কালনায় দু’জনকে ‘আইসোলেশন’ ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়েছিল। জেলা প্রশাসনের কর্তাদের ধারণা, তৃণমূল স্তর থেকে পাঠানো হিসাবে কোনও অস্বচ্ছতা নেই। কিন্তু যাঁদের উপরে ভরসা করে করোনা মোকাবিলায় নেমেছে স্বাস্থ্য দফতর, তাঁদের কাছেই প্রয়োজনীয় সামগ্রী না পৌঁছনোর অভিযোগ উঠেছে। রবিবার দুপুরে জেলাশাসকের দফতরের সঙ্গে ‘ভিডিয়ো কনফারেন্সে’ অনেক বিডিও অভিযোগ করেন, আশাকর্মীদের অনেককেই অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে।
রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলার বিধায়ক স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘আশা কর্মী-সহ নিচুতলায় কাজ করে যাঁরা প্রশাসনকে সাহায্য করছেন, তাঁদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে গিয়েছে। অনেকে তা হাতেও পেয়ে গিয়েছেন।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, ‘‘নিচুতলার কর্মীরা অত্যন্ত দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছেন। তাঁদের পরামর্শও আমরা শুনছি। তাঁদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সে জন্য আমরাও সচেষ্ট।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy