Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

ভিড় হালকা করল পুলিশ

আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল থেকে জেলার নানা প্রান্তে ‘মাইকিং’ করে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সবাইকে বাইরে বেরোতে বারণ করা হয়।

আসানসোল, দুর্গাপুর-সহ জেলার নানা প্রান্তে এই দৃশ্য দেখা গেল। নিজস্ব চিত্র

আসানসোল, দুর্গাপুর-সহ জেলার নানা প্রান্তে এই দৃশ্য দেখা গেল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২০ ০০:৪০
Share: Save:

কোথাও অনুরোধ, কোথাও বা লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যাওয়া। মঙ্গলবার ‘লকডাউন’-এর দিন জেলার নানা প্রান্তে জটলা রুখতে, অপ্রয়োজনে পথে বেরনো জনসাধারণকে বাড়ি পাঠাতে এমনই নানা ভূমিকায় দেখা গেল পুলিশ-প্রশাসনকে।

আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল থেকে জেলার নানা প্রান্তে ‘মাইকিং’ করে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সবাইকে বাইরে বেরোতে বারণ করা হয়। কিন্তু মঙ্গলবার বাস্তবে অন্য চিত্র দেখে পুলিশ-প্রশাসন নানা পদক্ষেপ করেছে। যেমন,—

পুলিশ জানায়, আজ, বুধবার থেকে দুর্গাপুরের চণ্ডীদাস বাজার, সেন মার্কেট-সহ নানা বাজারে পাশাপাশি দু’জন বিক্রেতার মধ্যে এক জনকে এক দিন করে বসতে বলা হয়েছে। ফলে, দু’জন বিক্রেতার মধ্যে দূরত্ব বাড়বে তেমনই দূরত্ব বাড়বে ক্রেতাদের মধ্যেও। বেনাচিতি বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এ দিন বৈঠকে বসেন মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলে। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দোকান খুলে রাখা-সহ স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সতর্কতা নিশ্চিত করার জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

মঙ্গলবার সকালে বেনাচিতিতে আনন্দগোপাল মুখোপাধ্যায় সরণিতে অনেকেই আড্ডা দিতে জড়ো হন। পুলিশের তরফে বারবার তাঁদের বাড়ি যেতে বলা হলেও লাভ হয়নি। এর পরে দুপুর ১২টা নাগাদ পুলিশের বড় বাহিনী লাঠি উঁচিয়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত জানান, ‘‘এ পর্যন্ত মানুষকে সচেতন করার পর্ব চলছে। বুঝিয়ে বা সামান্য জোর করে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি দ্রুত আয়ত্বে না এলে দরকারমতো পদক্ষেপ হবে।’’

আসানসোলের বিভিন্ন বাজারেও জটলা দেখে এলাকাবাসীর কাছ থেকে ফোন যায় পুরসভার ‘হেল্পলাইন’ নম্বরে। এর পরেই নজরে পড়ে পুলিশি তৎপরতা। কুলটির নিউরোড নিয়ামতপুরে ও ইসমাইল মোড়ে লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করে জটলা ফাঁকা করে দেয় পুলিশ। আসানসোলের হাটনরোড চৌমাথায় পুলিশ গাড়ি আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। অপ্রয়োজনে যাঁরা পথে বেরিয়েছিলেন তাঁদেরও বাড়িতে পাঠানো হয়। জামুড়িয়া থানার পুলিশকর্মীরা বুঝিয়ে জামুড়িয়া বাজারের ভিড় অনেকটাই হালকা করতে সফল হন। অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশের টহলদার গাড়ি বাড়ি ফিরতে বাধ্য করেছে বাইরে বেরনো লোকজনকে।

সোমবার জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মতো পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমানায় পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতর ওই দিন বিকেল পর্যন্ত নজরদারি চালায়। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় কুলটির বরাকর ও ডুবুরডিহি সীমানায় আসানসোল পুরসভার কোনও স্বাস্থ্যকর্মীর দেখা মেলেনি। তবে জনা কয়েক সিভিক ভলান্টিয়ারকে ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে আসা যানবাহন আটকাতে দেখা গিয়েছে। কেন এই দুই সীমানায় স্বাস্থ্য-দল নেই? পুরসভার তরফে স্বাস্থ্য-দলের দায়িত্বে থাকা মেয়র পারিষদ পূর্ণশশী রায় বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ শেষমেশ দুপুর ১২টা নাগাদ ওই দুই সীমানা এলাকায় স্বাস্থ্য-দল পৌঁছয়। এ দিকে, চিত্তরঞ্জন ১ নম্বর গেট, রূপনারায়ণপুর ও বারাবনির রুনাকুড়া ঘাট, এই তিন সীমানায় জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীদের দেখা যায়।

‘লকডাউন’-এর এ দিনের অভিজ্ঞতার পরে, পুলিশ, প্রশাসনের জনসাধারণের কাছে আর্জি, অপ্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে বিপত্তি বাড়াবেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Durgapur Asansol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE