Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

ঘোষণা সার, দ্বিগুণ দামে মাস্ক বিক্রি

চিকিৎসকেরা অবশ্য বারবার জানাচ্ছেন, সবার মাস্ক পরার দরকার নেই। সর্দি, কাশিতে যাঁরা বেশি ভোগেন, তাঁদের মাস্ক পরা বেশি প্রয়োজন। তা ছাড়া, অধিকাংশ মানুষজন সাধারণত ‘সার্জিক্যাল মাস্ক’ পরছেন।

মাস্কে মুখ ঢেকে বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন অনেক বাসিন্দাই। রবিবার দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে। ছবি: বিকাশ মশান

মাস্কে মুখ ঢেকে বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন অনেক বাসিন্দাই। রবিবার দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে। ছবি: বিকাশ মশান

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২০ ০০:০৩
Share: Save:

করোনা-আতঙ্কে মাস্ক মিলছে না। যদিও বা মেলে, দাম দিতে হচ্ছে বেশি। এমনই অভিযোগ দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল জুড়ে। চাহিদার তুলনায় জোগান কম থাকায় হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারেরও আকাল দেখা দিয়েছে। ফলে, একসঙ্গে মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার না পেয়ে করোনাভাইরাস নিয়ে দুর্ভাবনায় ভুগছেন অনেকেই।

ধোঁয়া-ধুলো থেকে বাঁচতে আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে অনেকে মাস্ক ব্যবহার করেন। আবার হাঁচি, কাশি, সর্দি-সহ নানা সংক্রমণ থেকে বাঁচতেও অনেকে মাস্ক পরেন। তাই এলাকার অধিকাংশ ওষুধের দোকানেই মাস্ক পাওয়া যায়। তবে ওষুধ ব্যবসায়ীরা জানান, সেগুলি সাধারণত ‘সার্জিক্যাল মাস্ক’। এন-৯৫ জাতীয় মাস্কের তেমন চাহিদা থাকে না। কিন্তু করোনা-আতঙ্কে এখন মাস্ক কেনার ধুম পড়ে গিয়েছে। স্যানিটাইজ়ার ব্যবহারের অভ্যাসও কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী জোগান না থাকায় আকাল দেখা দিয়েছে এই দু’টি জিনিসের। অভিযোগ, কেন্দ্র অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হিসেবে ঘোষণা করার পরেও এই পরিস্থিতিতে বেশি দাম নেওয়া হচ্ছে সেগুলির।

চিকিৎসকেরা অবশ্য বারবার জানাচ্ছেন, সবার মাস্ক পরার দরকার নেই। সর্দি, কাশিতে যাঁরা বেশি ভোগেন, তাঁদের মাস্ক পরা বেশি প্রয়োজন। তা ছাড়া, অধিকাংশ মানুষজন সাধারণত ‘সার্জিক্যাল মাস্ক’ পরছেন। এই ধরনের মাস্কে নাক-মুখের মধ্যে যে ফাঁকা জায়গা রয়েছে, সেখান দিয়ে অনায়াসে ভাইরাস ঢুকে পড়তে পারে। আবার এন-৯৫ জাতীয় মাস্ক নাক-মুখের উপর চেপে বসে থাকে। দীর্ঘক্ষণ পরে থাকলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে। তবে এ সব তোয়াক্কা না করে অনেকেই ওষুধের দোকানে মাস্ক কিনতে যাচ্ছেন। ফলে, আকাল দেখা দিয়েছে। অ্যালোকহল-যুক্ত স্যানিটাইজ়ার তো বটেই, সাধারণ স্যানিটাইজ়ারও শিল্পাঞ্চলের অধিকাংশ ওষুধের দোকানে মিলছে না।

বেনাচিতির কয়েকটি ওষুধের দোকান ঘুরে দেখা গিয়েছে, এন-৯৫ মাস্ক বা স্যানিটাইজ়ার, কোনওটিই নেই। সাধারণ মাস্কের জোগানও চাহিদার তুলনায় কম। এমনিতে সাধারণ মাস্কের দাম ১৫-২৫ টাকা। ক্রেতাদের অভিযোগ, সাধারণ মাস্ক কিনতে ২৫-৫০ টাকা দিতে হচ্ছে। একটি দোকানের কর্মী দাবি করেন, ‘‘চিনে তৈরি ১৫ টাকার মাস্ক এখন বিক্রি করতে হচ্ছে দ্বিগুণ দামে। কারণ, জোগান কমে যাওয়ায় কিনতে বেশি দাম পড়ছে। তাই বিক্রিও সে ভাবেই করতে হচ্ছে।’’

সিটি সেন্টারের এক ওষুধ ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘এন-৯৫ মাস্ক মিলছে না। এমনিতে দাম প্রায় আড়াইশো টাকা। কলকাতাতেই দাম পড়ছে প্রায় পাঁচশো টাকা। তা এখানে এনে বিক্রি করতে গেলে প্রশাসনের নজরে পড়ে যাব। তাই রাখছি না।’’ তিনি জানান, সাধারণত মাসে গড়ে প্রায় পাঁচশো সাধারণ মাস্ক বিক্রি হয়। এন-৯৫ মাস্কের চাহিদা প্রায় থাকে না বললেই চলে। কেউ চাইলে এনে দেওয়া হয়। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। ডিএসপি টাউনশিপের সেকেন্ডারি রোডে ওষুধের দোকান রয়েছে সুদীপ ঘোষের। তিনি বলেন, ‘‘এমন পরিস্থিতিতে আমরা ক্রেতাদের বলছি, কাপড় কিনে দরজিকে দিয়ে মাস্ক বানিয়ে নিতে। এ ছাড়া কোনও উপায় দেখছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE