Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
coronavirus

কাগজ থেকে সংক্রমণ নেই, মত বিশেষজ্ঞদের

জেলার চিকিৎসক থেকে বিশিষ্টজনদের অনেকেই জানাচ্ছেন, ‘লকডাউন’-এর শুরুতে কয়েক দিন সংবাদপত্র মেলেনি। তার পরে এক দিনও সংবাদপত্র নেওয়া বন্ধ করেননি তাঁরা। তাঁদের কথায়, ‘‘সংবাদপত্র থেকে করোনা ছড়ালে, বহু পাঠক আক্রান্ত হতে পারতেন। আদতে তা হয়নি।’’

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২০ ০৪:০৩
Share: Save:

সংবাদপত্র থেকে করোনা-সংক্রমণ ছড়ায়, এমন রটনায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল এক সময়ে। কিন্তু এই তত্ত্ব উড়িয়ে দিচ্ছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার চিকিৎসক থেকে বিশিষ্টজনেরা। হকারেরাও জানাচ্ছেন, করোনা-সংক্রমণের ভয়ে যাঁরা নিজেদের দূরে রাখছিলেন, তাঁরাও ফের সংবাদপত্র দিতে বলছেন। বিভিন্ন পত্রিকা প্রকাশ হওয়ার পরে, ৯০ শতাংশ গ্রাহকই তা সংগ্রহ করেছেন বলেও অনেক হকারের দাবি।

জেলার চিকিৎসক থেকে বিশিষ্টজনদের অনেকেই জানাচ্ছেন, ‘লকডাউন’-এর শুরুতে কয়েক দিন সংবাদপত্র মেলেনি। তার পরে এক দিনও সংবাদপত্র নেওয়া বন্ধ করেননি তাঁরা। তাঁদের কথায়, ‘‘সংবাদপত্র থেকে করোনা ছড়ালে, বহু পাঠক আক্রান্ত হতে পারতেন। আদতে তা হয়নি।’’ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান শুভ্রকান্তি মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘সংবাদপত্র থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সুযোগ নেই বললেই চলে। প্রথম দিকে এ নিয়ে হইচই শুরু হয়েছিল। বিভিন্ন গবেষক থেকে বিজ্ঞানীরা কিন্তু সেই তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়েছেন।’’

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডেপুটি সুপার কুণালকান্তি দে বলেন, ‘‘আমরা নিয়মিত সংবাদপত্র পড়ি। সংবাদপত্র থেকে করোনা ছড়ানোর সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। যাঁরা ভুল ধারণা নিয়ে চলছেন, তাঁদের সচেতন করার প্রয়োজন রয়েছে।’’ একই কথা বলেন কালনা মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাইও। তাঁর সংযোজন, ‘‘হকারেরা নানা জায়গা ঘুরে কাগজ দেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁরা যেন ‘মাস্ক’ এবং ‘স্যানিটাইজ়ার’ নিয়মিত ব্যবহার করেন।’’

চিকিৎসকদের দাবি, সংবাদপত্র তৈরির সময়ে যে সব রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, তার উপরে ‘ড্রপলেট’ বেঁচে থাকতে পারে না। ‘নেকেড’ ভাইরাস কোনও ভাবেই নয়। এ সব ক্ষেত্রে সাধারণ বোধের উপরে জোর দিতে বলছেন চিকিৎসকেরা।

বর্ধমানের চিকিৎসক সোমেন্দ্র সাহা শিকদার বলেন, ‘‘সংবাদপত্র দিয়ে যাওয়ার পরে কিছুক্ষণ পড়ে থাকে। সূর্যের আলোয় টানা পড়ে থাকলে কোনও ভাইরাসই থাকবে না। আমি নিয়মিত ভাবে কাগজ পড়ি।’’ বর্ধমান শহরের বাসিন্দা, কবি অংশুমান করের কথায়, ‘‘গত আড়াই মাস ধরে টানা সংবাদপত্র নিচ্ছি। বিভিন্ন পত্রপত্রিকাও নিচ্ছি। আমার অভিজ্ঞতা বলছে, সংবাদপত্র থেকে করোনা সংক্রমণের ভয় নেই। যদি থাকত, তবে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়তাম।’’

কাগজ থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর তত্ত্ব এল কী ভাবে? বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশের দাবি, মহামারির উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এই ধরনের ভ্রান্তি-অনুমান চলতে থাকে। ধীরে-ধীরে মানুষ নিজেদের অভিজ্ঞতায় সেই সব ভ্রান্তি-অনুমান ত্যাগ করেন। কাটোয়া মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির মুখপাত্র বিদ্যুৎ নন্দী বলেন, ‘‘সংবাদপত্র থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর বিভ্রান্তি কাটছে। সংবাদপত্র কেনার ঝোঁক বাড়ছে। তাতে আমরা খুশি।’’ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অনুপম বসু বলেন, ‘‘করোনা নিয়ে মানুষকে অযথা আতঙ্কিত হতে বারণ করব। পড়াশোনা-সহ সব রকম দৈনন্দিন কাজ স্বাস্থ্যবিধি মেনে করুন। কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

coronavirus newspaper
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE