Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

ব্যাঙ্কে ভিড় সামলাতে টোকেন চালু

‘টোকেন’ দিয়ে ভিড় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়ায়।

দুর্গাপুরে একটি ব্যাঙ্কের সামনে সোমবার। নিজস্ব চিত্র

দুর্গাপুরে একটি ব্যাঙ্কের সামনে সোমবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২০ ০১:০৮
Share: Save:

‘লকডাউন’ আগের থেকে শিথিল হয়েছে। কিন্তু টানা তিন দিন (রবিবার ধরলে চার দিন) বন্ধ থাকার পরে, সোমবার ব্যাঙ্ক খুলেছে। সকাল থেকেই দেখা গেল, জেলার বিভিন্ন ব্যাঙ্কের সামলে গ্রাহকদের লম্বা লাইন। বিধি না মানার প্রবণতাও দেখা গিয়েছে অনেকের মধ্যে।

দুর্গাপুরের সেন মার্কেট এলাকার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে বেলা ১১টা নাগাদ গিয়ে দেখা গেল, দোতলার ব্যাঙ্ক থেকে সিঁড়ি দিয়ে গ্রাহকদের লম্বা লাইন গলি দিয়ে চলে গিয়েছে রাস্তা পর্যন্ত। নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় না রেখেই তাঁরা দাঁড়িয়েছেন। তবে মুখে ‘মাস্ক’ ছিল সকলের। ব্যাঙ্কের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কে ঢোকার মুখে গ্রাহকদের নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় থাকছে কি না তা নজর রাখা হচ্ছে। তবে বাইরে কী হচ্ছে তা দেখা সম্ভব হচ্ছে না।’’ পুলিশ জানিয়েছে, মাঝে মাঝে সিভিক ভলান্টিয়ারেরা গিয়ে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে গ্রাহকদের দাঁড় করিয়ে আসছেন। তবে পুলিশ চলে গেলে, কিছু ক্ষণের মধ্যেই আবার আগের পরিস্থিতি ফিরে এসেছে বলে জানিয়েছেন গ্রাহকদের একাংশই।

সিটি সেন্টারে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের অধিকাংশকে নির্দিষ্ট সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে লাইন দিতে দেখা গিয়েছে। গ্রাহকেরা জানালেন, মাঝেমাঝেই পুলিশ এসে সতর্ক করে যাচ্ছে। ওই ব্যাঙ্কের আধিকারিক জানায়েছেন, হাতশুদ্ধির ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। দুপুর ১টা নাগাদ সিটি সেন্টারের অন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় তেমন ভিড় নেই নজরে পড়েনি। নন-কোম্পানি এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা সব্যসাচী সরকার বলেন, ‘‘সকাল ১০টা নাগাদ এসে দেখি ,বেশ ভিড়। ফিরে যাই। ঘণ্টা আড়াই পরে এসে দেখি ফাঁকা।’’

একই চিত্র আসানসোল, রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়ায়। এ দিন সকাল সকাল ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন সরকারি পেনশনভোগী দেবযানী বসু। তিনি বলেন, ‘‘আমি নিশ্চিত ছিলাম টানা ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকার পরে, এ দিন বেশ ভালই ভিড় হবে। তাই ঝুঁকি না নিয়ে সাতসকালেই আসানসোলের আপকার গার্ডেন অঞ্চলের ওই ব্যাঙ্কে চলে আসি।’’ শুধু তিনি একা নন। তাঁর মতো আরও অনেকেই নানা কাজ নিয়ে সময়ের কয়েক ঘণ্টা আগেই ব্যাঙ্কের দোরগোড়ায় এসেছেন। ফলে, অন্য দিনের তুলনায় এ দিন প্রায় সব ব্যাঙ্কেই গ্রাহকদের ভিড় ছিল অনেক বেশি। তবে ব্যাঙ্কের কর্মী, আধিকারিকেরা জানান, যতটা ভিড় হবে বলে তাঁরা ভেবেছিলেন, তা হয়নি। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানান, দূরত্ববিধি মেনে চলার জন্য চক দিয়ে গোলাকার চিহ্ন এঁকে গ্রাহকদের দাঁড়ানোর ব্যবস্থা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে আসানসোলের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের আধিকারিক সবরজ সিংহ বলেন, ‘‘গ্রাহকদের সব রকমের সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি, দূরত্ববিধি মেনে চলতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’ এমনিতে খোলা থেকে বন্ধ হওয়া পর্যন্ত শহরের সব ব্যাঙ্কের সামনে পুলিশের টহলদারি গাড়ি থাকে। লকডাউনের পরে প্রথম যে দিন ব্যাঙ্কে কাজকর্ম শুরু হয়, তখন থেকেই প্রত্যেক ব্যাঙ্কের সামনে স্বাস্থ্যবিধি ও দূরত্ববিধি মেনে চলার জন্য প্রয়োজন মতো সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হয়েছে। সোমবারও শহরের সব ব্যাঙ্কের সামনে পুলিশের গাড়ি ও সিভিক ভলান্টিয়ার ছিল। ব্যাঙ্কের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, আগামি চার দিন গ্রাহকদের ভিড় একটু বেশি থাকবে।

‘টোকেন’ দিয়ে ভিড় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়ায়। জেলা ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ় ফেডারেশনের সহ-সম্পাদক সুব্রত চেল বলেন, ‘‘টোকেন ব্যবস্থার মাধ্যমে ভিড় অনেকটা সামাল দেওয়া গিয়েছে।’’ বিডিও (রানিগঞ্জ) অভীক বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিডিও (জামুড়িয়া) কৃশাণু রায় জানান, কোথাও যাতে স্বাস্থ্য-বিধি লঙ্ঘিত না হয়, সে জন্য প্রশাসনের তরফ থেকে নজরদারি চালানো হচ্ছে।

এ দিকে, গ্রাহকদের দাবি, দূরত্ববিধি মেনে চলার জন্য অনেক ব্যাঙ্কে ঢোকার আগে খোলা আকাশের নীচে রোদের মধ্যে অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাঁদের। তাই অস্থায়ী ছাউনির ব্যবস্থা করলে ভাল হয়। বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal Bank Queue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE