বিনয়কুমার মুখোপাধ্যায় (এক পুলিশ অফিসারের বাবা)
আমার একমাত্র ছেলে পূর্ব বর্ধমানের একটি থানার অফিসার-ইনচার্জ (ওসি)। করোনাভাইরাসের জেরে ‘লকডাউন’ হওয়ার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ২৪ ঘণ্টাই বাইরে থাকতে হচ্ছে তাকে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে লোকজনকে সতর্ক করতে ভিড়ে ঠাসা এলাকায় যেতে হচ্ছে। ওর মা মারা গিয়েছেন এক বছরও হয়নি। ছেলের জন্য দুশ্চিন্তা হয়। আগে দিনে তিন বার ফোন করে খোঁজ নিতাম। এখন সেই সংখ্যাটা বেড়েছে। তবে ফোন ধরার সংখ্যাটা বাড়েনি বলে একটু দুঃখ হয়।
এক পুলিশ অফিসারের বাবা হিসাবে সবাইকে বলতে চাই, কয়েকদিন ধরে অতি সক্রিয়তার জন্যে পুলিশ সমালোচিত হয়েছে। তবে পুলিশ সক্রিয় না হলে কি ‘লকডাউন’ ঠিকঠাক কেউ মানত? একটু শিথিল হতেই তো গ্রামগঞ্জে লোকজন রাস্তায় ভিড় করছে। সবার স্বার্থে পুলিশকে মাঝে-মধ্যে সক্রিয় হতেই হবে। করোনা সংক্রমণ রুখতে জীবনের পরোয়া না করে, পরিজনদের কথা না ভেবে পুলিশ কিন্তু রাস্তায় রয়েছে।
নানা দুশ্চিন্তার মধ্যেও এক জন পুলিশ অফিসার হিসাবে ছেলে সমাজের জন্য কিছু করছে দেখে ভাল লাগে। তবু তো আমি বাবা। পিতৃহৃদয় সব সময় দুর্বল থাকে। সে জন্য সব সময় আতঙ্কও থাকে। আমি চাইব, সবাই করোনা প্রতিরোধের লড়াইয়ে বাড়িতেই থাকুন। তাহলে আমার মতো অনেক পুলিশকর্মীর পরিবার নিশ্চিন্তে থাকতে পারবে। এ লড়াই তো এক দিনের নয়। টেস্ট ম্যাচের মতো ধৈর্য ধরতে হবে বুঝতে পারছি। সে জন্য দিনান্তে এক বার অন্তত মনে করিয়ে দিচ্ছি, স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ মানার জন্য সবাইকে বলছ, ঠিক আছে। কিন্তু নিজের জন্যও সেই নির্দেশ মানতে হবে।
মাধবডিহির উচালনে শরীর থাকলেও মন পড়ে রয়েছে ছেলের কাছে। সব সময় প্রার্থনা করছি, করোনা বিদায় নাও। একটু শান্তিতে থাকতে দাও।
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy